অর্ণব আইচ: করোনা (Coronavirus) আক্রান্তদের প্লাজমার প্রয়োজন হলে ভরসা হয়ে উঠছে কলকাতা পুলিশই। গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু সোশ্যাল মিডিয়ায় খবর পেয়েই কলকাতার পাঁচজন করোনা আক্রান্তকে প্লাজমা দিতে এগিয়ে এসেছেন পুলিশকর্মীরা। সেই কারণে এবার করোনাজয়ী যে পুলিশকর্মীরা প্লাজমা দিতে পারবেন, তাঁদের তালিকা তৈরি করছে কলকাতা পুলিশ কর্তৃপক্ষ। লালবাজার জানিয়েছে, প্লাজমা দানকারী ৯ জন পুলিশকর্মী ও অফিসারকে সংবর্ধনা দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা।
পুলিশ জানিয়েছে, করোনার চিকিৎসা হিসাবে প্লাজমা থেরাপিকেও গুরুত্ব দিচ্ছেন বহু চিকিৎসক। এক ব্যক্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান, তাঁর মা করোনায় আক্রান্ত। আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের ভেন্টিলেশনে রয়েছেন তিনি। এই অবস্থায় প্লাজমা থেরাপি ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই। তাঁর এক আত্মীয়া এই বিষয়টি টুইট করে কলকাতা পুলিশকে জানান। সঙ্গে সঙ্গেই সাড়া মেলে। প্লাজমা দান করতে এগিয়ে যান এক পুলিশকর্মী। অন্য এক ব্যক্তি টুইট করে পুলিশকে জানান, তাঁর পরিচিত ভরতি রয়েছেন পূর্ব কলকাতার মুকুন্দপুর অঞ্চলের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। করোনায় আক্রান্ত ওই পরিচিত ব্যক্তির প্লাজমার প্রয়োজন। আবেদনের কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ তাঁকে জানিয়ে দেয়, দাতা তৈরি। তিনি প্লাজমা দিয়ে আসবেন হাসপাতালে। এক মহিলা তাঁর এক পরিচিত করোনা আক্রান্ত রোগীর জন্য প্লাজমার আবেদন করেন। প্লাজমার ব্যবস্থা করে পুলিশ। এ ছাড়াও প্লাজমার জন্য আবেদন জানান আরও দুই ব্যক্তি। একজন জানান, তাঁর ৫৮ বছর বয়সের এক আত্মীয় ভরতি রয়েছেন পূর্ব কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। তাঁর প্লাজমা থেরাপির প্রয়োজন। অন্য এক ব্যক্তি তাঁর পরিচিতির জন্য আলাদাভাবে আবেদন জানান।
[আরও পড়ুন: রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা দিতে ব্যর্থ, রাজ্যের হাসপাতালগুলিকে তীব্র ভর্ৎসনা স্বাস্থ্যদপ্তরের]
প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই করোনাজয়ী পুলিশকর্মী ও অফিসাররা প্লাজমা দাতা হিসেবে পৌঁছে যান নির্ধারিত হাসপাতালে। প্রাণ বাঁচান করোনা আক্রান্তদের। এক পুলিশ আধিকারিক জানান, প্লাজমা দান করতে গেলেও বেশ কয়েকটি বিষয় দেখে নেন চিকিৎসকরা। করোনা মুক্ত হওয়ার ২৮ দিন পর এক ব্যক্তি প্লাজমা দান করতে পারেন। বার বার তিনি দান করতে পারবেন না প্লাজমা। তার উপর বয়সকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। সাধারণভাবে ৫৫ বছর বয়সের কম ব্যক্তিদের কাছ থেকেই সংগ্রহ করা হয় প্লাজমা। তাই সুস্থ হয়ে যাওয়ার পরও ইচ্ছা থাকলে যে কোনও করোনাজয়ী প্লাজমা দিতে পারেন না। কিন্তু গত কিছুদিন ধরে দেখা গিয়েছে যে, প্লাজমার জন্য পুলিশের কাছে আবেদন করছেন বহু মানুষ। তাঁদের সাহায্যের জন্যই পুলিশের পক্ষ থেকে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে তৈরি করা হচ্ছে প্লাজমা দাতা পুলিশকর্মী ও অফিসারদের তালিকা। করোনা আক্রান্তদের প্রাণে বাঁচানোর জন্য বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: করোনা পর্বে বেসরকারি হাসপাতাল ঠিকমতো বেতন দিচ্ছে না, স্বাস্থ্যসচিবের দ্বারস্থ চিকিৎসকরা]
The post মানবিকতার নজির, একদিনে করোনা আক্রান্তদের প্লাজমা দিলেন কলকাতা পুলিশের ৫ কর্মী appeared first on Sangbad Pratidin.