সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনার ভ্যাকসিনের খরচ-খরচা নিয়ে যাবতীয় প্রশ্ন, যাবতীয় উৎকণ্ঠার অবসান ঘটিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন (Harsh Vardhan )। সরকারিভাবে ঘোষণা করে দিলেন, গোটা দেশেই করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।
দেশের সাধারণ-প্রান্তিক মানুষের কাছে ভ্যাকসিন (Corona Vaccine) পৌঁছে দিতে কী পরিকল্পনা করেছে সরকার? টিকাকরণের জন্য যে খরচ হবে, সেটাই বা কোথা থেকে আসবে? কংগ্রেস (Congress) বেশ কিছুদিন আগে থেকেই এ প্রশ্ন তুলছিল। এর আগে বহুবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দাবি করেছেন, টিকাকরণের সুসংহত পরিকল্পনা তাঁর সরকার করে রেখেছে। কেন্দ্রের আধিকারিকদের মুখেও সেকথা শোনা গিয়েছে। তবে, ভ্যাকসিনের দাম মেটানো নিয়ে একটা সংশয় ছিলই। সেই সংশয় আবার সৃষ্টি করেছিল বিজেপি নিজেই। বিহারের নির্বাচনী ইস্তেহারে কেন্দ্রের শাসকদল প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, ক্ষমতায় ফিরলে সেরাজ্যে বিনামূল্যে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, তাহলে কি শুধুমাত্র বিহারের মানুষই বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পাবেন? দেশের বাকি অংশের মানুষকে কি ট্যাঁকের কড়ি খরচ করতে হবে টিকার জন্য? শনিবার সংক্ষেপে সেসব প্রশ্নের জবাব দিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। দিল্লি সরকার আগেই ঘোষণা করেছিল, রাজধানীতে সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে বিনা খরচেই। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীও এদিন ঘোষণা করে দিলেন, “শুধু দিল্লি নয়, গোটা দেশেই সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেওয়া হবে করোনার টিকা।”
[আরও পড়ুন: আজ দেশজুড়ে করোনার টিকাকরণের ‘ড্রাই রান’, ভ্যাকসিন বিতরণের পদ্ধতি জানাল সরকার]
সূত্রের খবর, সব ঠিক থাকলে আগামী সপ্তাহ থেকেই টিকাকরণ শুরু হবে। তবে, প্রথমদিকে তাতে খুব একটা গতি আনা সম্ভব হবে না বলেই কেন্দ্রের তরফে রাজ্যগুলিকে জানানো হয়েছে। কারণ, প্রথমদিকে টিকার সরবরাহ কেমন থাকবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। টিকাকরণের ক্ষেত্রে চিকিৎসক থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকর্মী, সাফাইকর্মী, এক কথায় প্রথম সারির যোদ্ধাদের তালিকা অনুযায়ী টিকা দিতে প্রায় দু’মাস সময় লেগে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে বাজারে একাধিক ভ্যাকসিন এলে এই কাজে গতি আসবে এবং তাতে সময়সীমা কমবে বলেই কেন্দ্র আশা করছে। কেন্দ্রের তরফে দেশের প্রায় ৩০ কোটি মানুষকে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। সেই কাজ শেষ হতে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত সময় লাগবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: ভ্যাকসিন ছাড়পত্র পাওয়ার পরদিনই কমল দৈনিক করোনা সংক্রমণ, স্বস্তি অ্যাকটিভ কেসেও]
কোভিশিল্ডকে গত সপ্তাহেই ব্রিটেন ছাড়পত্র দিয়েছে। এবার ডিসিজিআই (DCGI) সেটিকে ছাড়পত্র দিলে কোভিশিল্ডই ভারতের প্রথম করোনা ভ্যাকসিনের তকমা পেয়ে যাবে। তবে এখনও সরকার ও সেরাম ইনস্টিটিউটের মধ্যে নতুন করে টিকা কেনার কোনও চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি, তবু সেরাম ইনস্টিটিউট, যা পৃথিবীর বৃহত্তম টিকা নির্মাতা সংস্থাও বটে, জানিয়ে দিয়েছে, ভারতের বাজারকেই তারা প্রথমে গুরুত্ব দেবে। সেরাম (Serum) ইনস্টিটিউটের প্রধান কার্যনির্বাহী আধিকারিক আদর পুনাওয়ালা জানিয়েছেন, সংস্থা ইতিমধ্যে ৫ কোটি করোনা টিকার ডোজ তৈরি করার পরিকল্পনা নিয়েছে। মার্চ মাসের মধ্যে ১০ কোটি ডোজ তৈরি করার পরিকল্পনাও রয়েছে।