ক্ষিরোদ ভট্টাচার্য: প্রথমে মা। কয়েকদিনের ব্যবধানে মারণ করোনার কামড়ে বাবাও চলে গেলেন। বছর এগারোর ছেলেটার আর নিজের বলে আর কেউ রইল না। কে দেখবে তাকে? বা বসতবাড়িকে কী করে রক্ষা করবে অনাথ ছেলেটা? এটা একটা উদাহরণ মাত্র। তবে ঘটনা হল, গত দু’বছরে এমন অসংখ্যা মানুষ তাঁর প্রিয়জনকে হারিয়ে একটু আইনি সাহায্যের জন্য এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে। দেশের এমন অসংখ্য সহনাগরিকদের নিখরছায় আইনি পরামর্শ দিতে এগিয়ে এল কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক।
মারণ করোনার (Coronavirus) ছোবলে প্রাণ হারানো সহনাগিরকদের জন্য আগেই সমাজ মাধ্যমে জাতীয় স্মারক তৈরি করেছে কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক। বস্তুত দেশের মধ্যে এমন স্মৃতিসৌধ এই প্রথম। এবার আরও একধাপ নিজেদের সামাজিক দায়বদ্ধতাকে এগিয়ে দিল কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক সোসাইটি।
[আরও পড়ুন: সহযাত্রীর বিস্কুটেই লুকিয়ে বিপদ! রেলরক্ষী বাহিনীর তৎপরতায় সর্বস্ব খোয়াতে গিয়েও বাঁচলেন যাত্রী]
সংস্থার তরফে শুক্রবার ডা. অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, “করোনায় মৃতদের স্বজনদের নিখরছায় আইনি পরিষেবা দিতে এই ব্যবস্থা সব রাজ্যেই শুরু হবে। প্রথমে পশ্চিমবঙ্গ। এরপর দিল্লি-সহ প্রতিটি রাজ্যের কোভিডে মৃতদের স্বজনদের আইনি সাহায্য দেওয়া হবে।” অভিজিৎবাবুর কথায়, “এটা আমাদের দায়। দায়কে কোনওভাবেই অস্বীকার করা যায় না। অসংখ্য মানুষ আত্মীয় পরিজনদের চোখের দেখাটুকুও দেখতে পাননি। শুনতে হয়েছে প্রিয়জন হাসপাতাল থেকেই চিরবিদায় নিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের নিকটাত্মীয়রা যাতে আইনি সহায়তা পান, তার জন্য এই পদক্ষেপ।”
কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC) আইনজীবী অরিন্দম দাসের কথায়, “হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। অনেক খ্যাতনামা আইনজীবী অত্যন্ত খুশি এমন একটা সামাজিক উদ্যোগে শামিল হতে পেরে।”
মৃতদের নিকটাত্মীয় ও স্বজনদের আইনি পরিষেবা পৌঁছে দিতে দু’টি টোল ফ্রি নম্বর চালু হয়েছে। সকাল দশটা থেকে বিকেল ছ’টা পর্যন্ত নম্বর থেকে পরিষেবা মিলবে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা যোগীরাজ রায়, পবর্তারোহী সত্যরুপ সিদ্ধান্ত এদিনের প্রেস ক্লাবের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।