সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha Election 2024) রাজ্যের অন্যতম হাইভোল্টেজ কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবার। এই কেন্দ্রের বর্তমান সাংসদ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। কিন্তু চব্বিশের ভোটে কি এই কেন্দ্রের রাজনৈতিক চিত্র বদলাবে? ভোট ভবিষ্যৎ নিয়ে সেই আলোচনার অনেকাংশেই জায়গা করে নিচ্ছে বিরোধী শিবির। আর এখানেই টুইস্ট! ‘ডায়মন্ডে’র ষড়ভুজ না হলেও, চতুর্ভুজের চক্রব্যুহে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে ধরার পরিকল্পনা বিরোধীদের।
ডায়মন্ড হারবার (Diamond Harbour) কেন্দ্রে রেকর্ড ভোটে দুবার জিতেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে কাজের নিরিখে তিনি ইতিমধ্যে বেশ জনপ্রিয়। সেখানকার উন্নয়নে গত ১০ বছরে তাঁর কাজের বিচার করবেন জনতা। বিরোধী শিবির যথেষ্ট ভাবনাচিন্তা করেই তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী দাঁড় করাবে, সেটাই স্বাভাবিক। অনেক রকম সমীকরণ কাজ করবে সেক্ষেত্রে। ডায়মন্ড হারবারের বিস্তীর্ণ এলাকা সংখ্যালঘু। আর সেখানে বিরোধীদের তুরুপের তাস তরুণ, জনপ্রিয় নেতা তথা আইএসএফ (ISF) বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। বেশ কয়েকদিন ধরেই সেখানে তাঁর নাম নিয়ে আলোচনা করছে রাজনৈতিক মহলে। আর সেই নাম ভাসিয়ে দেওয়ার কারিগর রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তিনিই এক সভায় চ্যালেঞ্জের সুরে বলেছেন, ”ডায়মন্ড হারবারে ভাইপোকে হারাব। দরকার হলে অন্য লোক দাঁড় করিয়ে হারাব।” এর পর দিনই নওশাদ এক সংবাদমাধ্যমে জানান, দল চাইলে তিনি ডায়মন্ড হারবারে দাঁড়াবেন।
[আরও পড়ুন: গরু পাচার-নিয়োগ দুর্নীতি একসূত্রে বাঁধা? নিউটাউনে কুন্তলের ‘বেনামি’ ফ্ল্যাটে হানা ইডির]
এর পরই নওশাদের নাম নিয়ে জল্পনা আরও জোরদার হয়। এখানে আবার কাজ করছে সিপিএম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোটের সংযুক্ত মোর্চা জোট। কারণ, একুশের বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এই জোটের শিবরাত্রির সলতে নওশাদ সিদ্দিকি (Nawsad Siddique)। সংখ্যালঘু ভাঙড়ে তৃণমূলকে হারিয়ে বিধানসভায় পৌঁছেছেন আইএসএফের এই নেতা। লোকসভার লড়াইয়ের তাঁর উপর ভরসা রাখতে বিশেষ দ্বিধা করছেন না জোটের বাকি শরিকরা। তেমনই বক্তব্য শোনা যাচ্ছে বিরোধী নেতাদের গলায়।
বিজেপির তরফে শুভেন্দু বাদ দিলেও নওশাদের পক্ষে কথা বলেছেন মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। নওশাদকে ‘ভালো ছেলে’ বলে প্রশংসা করেছেন। বারাসতে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty) বলেন, ”নওশাদ দাঁড়াতেই পারেন, সেটা তাঁর স্বাধীন সিদ্ধান্ত। এ বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। তবে তৃণমূল-বিজেপিকে হারাতে একজোট হতে হবে। নাহলে সমূহ বিপদ।” প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর বক্তব্য, ”নওশাদ ওখানে দাঁড়ালে দাঁড়ালে, খোকাবাবুর জন্য লড়াই কঠিন হবে।”
[আরও পড়ুন: ভোট ভুলে বিষ গ্যাসেই ডুবে ভোপাল! আজও সুস্থ শিশুর জন্ম বিরল]
বিরোধী জোটের এসব বক্তব্য শুনে শাসকদল কেবলই দূর থেকে হাসছে। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ”এটা বিজেপি স্পন্সরড একটা চক্রান্ত। সিপিএম, কংগ্রেস, আইএসএফ শামিল। আসলে পিপীলিকার পক্ষ ওড়ে হারিবার তরে। তবে নওশাদ ওখানে দাঁড়াক। ভালোই তো হবে। হারটা ভালোভাবে দেখা যাবে। বিজেপির গলার কাঁটা তো অভিষেক। তাঁকে হারানোর খেলায় মেতেছে সবাই। ওরা আসলে বিজেপির বি-টিম। আরে ডায়মন্ড হারবারের সবাই জানেন, অভিষেক ওখানে কী কাজ করেছেন। কোভিডের সময় কীভাবে সকলের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ওঁকে হারানো এত সহজ নয়।” সবমিলিয়ে লোকসভা নির্বাচনে ‘ডায়মন্ড ব্যাটল’-এ নজর সবপক্ষের।
দেখুন ভিডিও: