স্টাফ রিপোর্টার: তৃতীয় বিকল্প গড়ার লক্ষ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি সফরে শঙ্কিত সিপিএম৷ রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে এগোচ্ছে তা জানতে দলের সংসদীয় কমিটিকে রিপোর্টও দিতে বলেছে এ কে গোপালন ভবনের ম্যানেজাররা৷ তৃতীয় মোর্চা তৈরির প্রক্রিয়া কতটা এগোচ্ছে দলের সাংসদদেরও তা নজর রাখতে বলা হয়েছে৷ সিপিএমের একাংশ মনে করছে, দ্বিতীয় দফায় বিপুল আসনে জিতে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর শুধু বাংলাই নয়, জাতীয় রাজনীতিতেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক গুরুত্ব কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে৷ এই পরিস্থিতিতে আগামিদিনে তৃতীয় বিকল্প গঠনের উদ্যোগ সফল হতে পারে৷ আর ওই তৃতীয় বিকল্পে শেষমেশ যদি কংগ্রেসও যোগ দেয় তাহলে বাংলায় তো বটেই, জাতীয় ক্ষেত্রেও সিপিএমের অস্তিত্ব আরও বিপন্ন হয়ে পড়বে৷
দিল্লি সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের দাবি সংক্রান্ত বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেছেন৷ পাশাপশি তৃতীয় বিকল্প গড়ার উদ্যোগকেও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে বৈঠক করেছেন নীতীশ কুমারের সঙ্গে৷ ২১১ আসন পেয়ে দ্বিতীয়বার বাংলায় ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন রাজ্যের আঞ্চলিক দলগুলির কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুরুত্ব অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে৷ আঞ্চলিক দলগুলির নেতারাও সমীহের চোখে দেখছে তৃণমূলকে৷ মমতা ইতিমধ্যে বলেই দিয়েছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে নেই৷ কিন্তু রাজ্যের স্বার্থে আঞ্চলিক দলগুলি যদি এক হয় সেই চেষ্টা করে যাবেন৷
মঙ্গলবার দিল্লিতে নীতীশ কুমারের সঙ্গে একটি বৈঠকও করেছেন মমতা৷ দিল্লিতে তৃণমূলের অফিসেও তাঁর সঙ্গে কয়েকটি আঞ্চলিক দলের নেতারা দেখা করতে আসেন৷ আবার আরজেডি, সমাজবাদী পার্টি, দেবগৌড়ার দলও মুখ্যমন্ত্রীর এই দিল্লি সফর নিয়ে যথেষ্ট উৎসাহিত ছিল৷ দিল্লিতে ঝটিকা সফরের মধ্যেই বিজেপির বিকল্প তৃতীয় মোর্চা গড়ার সলতে পাকানোর কাজটা শুরু করে দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী৷ সিপিএমের একাংশ মনে করছে, তৃতীয় বিকল্প গড়তে মমতার এই উদ্যোগ একদিকে যেমন বিজেপির উপর চাপ বাড়াবে, অন্যদিকে কংগ্রেসও চাপে থাকবে৷ কংগ্রেসও এই তৃতীয় বিকল্পে শেষপর্যন্ত যোগ দিতে পারে বলে মনে করছে সিপিএমের ওই অংশ৷ কারণ, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মমতাকে কাছে টানতে চাইছে কংগ্রেসেরও একটি মহল৷
ফলে সব মিলিয়ে আগামিদিনে সিপিএম শীর্ষ নেতাদের কপালে চিন্তার রেখা৷ তৃতীয় বিকল্প বাস্তবের মুখ দেখলে ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনেও চাপে পড়বে বামেরা৷ তাই নিজেদের অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে, এই আশঙ্কায় পরিস্থিতির উপর নজর রাখার পাশাপাশি মিত্রশক্তিগুলির সঙ্গে গোপনে কথা বলার প্রক্রিয়া শুরু করেছে এ কে গোপালন ভবন৷ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, পার্টির রাজনৈতিক লাইন বিগত পার্টি কংগ্রেসেই ঠিক হয়েছে৷ বিজেপি ও কংগ্রেসের থেকে সমদূরত্ব বজায় রাখতে হবে৷ ২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচন৷ তার আগে ২০১৮-তে আবার পার্টি কংগ্রেস রয়েছে৷ তখন পরিস্থিতি দেখে প্রয়োজনে নতুন করে রাজনৈতিক লাইন চূড়ান্ত করবে পার্টি৷
The post মমতার দিল্লি সফর নিয়ে চিন্তায় সিপিএম appeared first on Sangbad Pratidin.