সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘আঘাত সে যে পরশ তব, সেই তো পুরস্কার।’ এটা ক্রিকেটের দীর্ঘ ফরম্যাটের 'পুরস্কার' বলতে পারেন। ঋষভ পন্থ এবং ক্রিস ওকস, দুই ক্রিকেটারের ক্ষেত্রেই এই কথাটা খাটে। ফলাফল ভুলে যেন লড়াকুদের জয়গান গাইল সিরিজ। ম্যাঞ্চেস্টার টেস্টে ভাঙা পায়ের পাতায় চোট পেয়েও সবটুকু উজাড় করে দিয়ে নেমেছিলেন পন্থ। আর ওভালে ভাঙা কাঁধ নিয়ে ব্যাট করতে নেমে সেই উদাহরণই যেন তুলে ধরলেন।
ওভাল টেস্টে ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখার মতো জয় পেয়েছে টিম ইন্ডিয়া। সিরিজ ড্র রেখে দেশে ফিরছে ‘নতুন ভারত’। তবে ভারতের এই জয়ের মধ্যেই বন্দিত ক্রিস ওকস (Chris Woakes)। ঋষভ পন্থের স্মৃতি ফেরালেন তিনি। ইংল্যান্ডের জয়ের জন্য যখন ২০ রান দরকার। এরপর ভাঙা কাঁধ নিয়ে ব্যাট করতে নামেন ক্রিস ওকস। গোটা স্টেডিয়াম উঠে দাঁড়িয়ে তাঁকে স্বাগত জানায়। উল্লেখ্য, ম্যাঞ্চেস্টারে শার্দূল ঠাকুর ৪১ রানে সাজঘরে ফেরার পর যখন ব্যাট করতে নেমেছিলেন পন্থ। দর্শকরা উঠে দাঁড়িয়ে তাঁকেও স্বাগত জানিয়েছিলেন। নিয়তির অদ্ভুত সমাপতন হল, ওভালে চোট পাওয়া ক্রিস ওকসের বলেই রিভার্স সুইপ করতে গিয়েই বিপদ ডেকে এনেছিলেন পন্থ। আর ওভালে চোট পেলেন ওকস নিজেই।
চতুর্থ দিনেই জানা গিয়েছিল, দলের প্রয়োজনে ব্যাট করতে নামবেন ওকস। চতুর্থ দিন ড্রেসিংরুমে তাঁকে আর্ম স্লিং পরা অবস্থায় দেখা গিয়েছিল। এরপর ইংল্যান্ডের জার্সি পরে থাকতেও দেখা গিয়েছিল। চতুর্থ দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে রুট বলেন, “সবাই ওকে দেখেছে। খুবই যন্ত্রণার মধ্যে আছে। তবুও ও প্রস্তুত।” পঞ্চম দিন ইংল্যান্ড যখন একের পর এক উইকেট খুইয়ে হারের সিঁদুরে মেঘ দেখছে ইংল্যান্ড, তখনই আর্ম স্লিং পরে নামেন তিনি। কী এই আর্ম স্লিং? এটি শক্তপোক্ত কাপড় দিয়ে তৈরি হয়। চোট পাওয়া ভাঙা হাত বা কাঁধকে যা কিছুটা স্বস্তিতে রাখতে পারে। এক্ষেত্রে ওকসের বাঁ হাত জামার ভিতর ছিল। তাই তাঁকে একহাতে ব্যাট করতে হত।
ওভাল টেস্টের প্রথম দিন চোট পেয়ে মাঠ ছাড়ার আগে কেএল রাহুলের উইকেট নিয়েছিলেন ওকস। ৫৭তম ওভারে করুণ নায়ারের শট আটকাতে বাউন্ডারি লাইনে ডাইভ দেন। বাউন্ডারি বাঁচিয়ে ফেললেও বা কাঁধে চোট পান ওকস। যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতেই মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান তিনি। তখনই অনুমান করা গিয়েছিল, ওভালে আর বল করতে পারবেন না ইংরেজ পেসার। দ্বিতীয় দিন সকালে খেলা শুরুর আগেই ইসিবি’র এক্স হ্যান্ডেলে জানানো হয়, পঞ্চম টেস্টে আর খেলতে পারবেন না ওকস। তবে, দলের প্রয়োজনে ভাঙা কাঁধ নিয়েই ব্যাট হাতে নেমে পড়েন ৩৬ বছর বয়সি এই পেসার। এদিন মাঠে নামলেও তাঁকে ব্যাট করতে হয়নি। গাস অ্যাটকিনসন স্ট্রাইকে থেকে ইংল্যান্ডকে ভরসা দিতে চেষ্টা করেছিলেন। শেষরক্ষা হয়নি। সিরাজের ফুল লেংথ বল তাঁর উইকেট ছিটকে দেয়। ওভালে টেস্ট জিতে নেয় ভারত।
