সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গোটা দিন ব্যাট করে পুঁজি মোটে আড়াইশো! গোটা ইনিংসে একটাও ছক্কা নয়। বাউন্ডারি ২৫টা। কোনও ব্যাটারের স্ট্রাইক রেট ষাটের উপরে নয়। লর্ডসে (Lords Test) ঠেলায় পড়ে তথাকথিত 'বাজবল'কে বিদায় জানাল ইংল্যান্ড। বদলে তৃতীয় টেস্টের (IND vs ENG 3rd Test) প্রথম দিন যে খেলাটা ইংরেজরা খেলল সেটাকে এককথায় বলা যায় 'ব্লকবল।'
ব্রেন্ডন ম্যাকালাম কোচ হওয়ার পর থেকে ইংল্যান্ড টেস্ট ক্রিকেটে নতুন একটা ঘরানার আমদানি করেছে। যার নাম 'বাজবল'। টেস্ট ক্রিকেটের সনাতনী ঘরানার সঙ্গে বাজবলের বিশাল বৈষম্য রয়েছে। সনাতনী টেস্ট ক্রিকেট মানে একটা টিম সারাদিন ব্যাট করে আড়াইশো-তিনশো রান তুলবে। ব্যাটাররা অসীম ধৈর্য দেখাবে। বাজবল পুরো উলটো। সেখানে শুরু থেকেই ওয়া ডে ক্রিকেটের মতো ব্যাটিং চলে। সারাদিনে চারশো-সাড়ে চারশো রান ওঠে। ব্যাটাররা একশোর কাছাকাছি স্ট্রাইক রেট নিয়ে ব্যাটিং করেন। এতদিন ইংল্যান্ড ঠিক সেই ক্রিকেট খেলছিল। লিডস টেস্টের পঞ্চম দিনে সাড়ে তিনশোর উপর রান তাড়া করে জিতেছিল। এজবাস্টনে সেটা কাজ করেনি।
অস্ট্রেলিয়ার কাছে গাব্বা যেমন, ইল্যান্ডের কাছে এজবাস্টনও ঠিক তাই। ব্রিটিশ ক্রিকেটের দুর্গ। শুভমান গিলরা সেই দুর্গ গুঁড়িয়ে টেস্ট জিতে যেতেই সবটা আমূল বদলে গিয়েছে। ওই টেস্ট হার ইংল্যান্ডকে কী পরিমাণ চাপে ফেলে দিয়েছে, সেটা লর্ডসে বোঝা গেল। এমনিতে বেন স্টোকসরা ওভার পিছু সাড়ে চার-পাঁচ করে তোলেন। টেস্টের প্রথম দিনে সর্বোচ্চ রান তোলার নজিরও রয়েছে এই ইংল্যান্ড দলের দখলেই। ২০২২ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এই বেন স্টোকসরাই টেস্টের প্রথম দিনে ৫০৬ রান তুলে রেকর্ড গড়েছিলেন। সেখানে লর্ডসের প্রথম দিন ৮৩ ওভারে ইংল্যান্ড তুলেছে মাত্র ২৫১। রান রেট তিন রানের একটু বেশি। তাতে সুযোগ বুঝে কটাক্ষ করতেও ছাড়লেন না ভারত অধিনায়ক শুভমান গিল। স্টোকসদের উদ্দেশে ভারত অধিনায়ক বলে উঠলেন, "অনেক বিনোদন হয়েছে। বোরিং টেস্ট ক্রিকেটে স্বাগত।"
আসলে ইংল্যান্ডও সম্ভবত বুঝেছে এই ভারতীয় বোলিং লাইন আপের বিরুদ্ধে বাজবল চলবে না। সাধারণ মানের কোনও টিমের বিরুদ্ধে ওই মারকুটে ক্রিকেট খেলে জেতা যায়। ভারতের বিরুদ্ধে ওই কৌশল চলবে না। যার ফলে পরিকল্পনা বদলাতে বাধ্য হল ইংল্যান্ড। আসলে, ৩ বছর 'বাজবল' খেলে ম্যাকালাম-স্টোকসরা হয়তো বিস্তর বিনোদন পেয়েছেন, কিন্তু সাফল্য সেভাবে পাননি। এ যাবৎ যে তিনটি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ হয়েছে, তার কোনওটির ফাইনালে পৌঁছতে পারেনি ইংল্যান্ড। সম্ভবত সে কারণেই বিলম্বিত বোধদয় হয় ইংল্যান্ডের।
