shono
Advertisement
Jemimah Rodrigues

'প্রত্যেকদিন কেঁদেছি', মাঠে বাইবেল পড়েই অজি বধ 'কামব্যাক' করা জেমাইমার

গত বিশ্বকাপে সুযোগ পাননি জেমাইমা।
Published By: Anwesha AdhikaryPosted: 09:33 AM Oct 31, 2025Updated: 01:21 PM Oct 31, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দু'হাতে মুখ ঢেকে অঝোরে কেঁদে চলেছেন তিনি। তাঁকে ঘিরে ভারতীয় মহিলা দলের বাকি ক্রিকেটাররা। তাঁদের চোখেও আনন্দের অশ্রু। কিন্তু জেমাইমা রডরিগেজের (Jemimah Rodrigues) চোখের জল কোনও কিছুতেই 'বাঁধ' মানছে না। বৃহস্পতিবার ১৩৪ বলে অপরাজিত ১২৭ রানের অনবদ্য ইনিংস উপহার দিয়ে সাতবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে সেমিফাইনালে হারিয়ে দেশকে বিশ্বকাপের ফাইনালে তোলার 'মহানায়িকা' জেমাইমা কোথায় যেন অভিমানী। যন্ত্রণাবিদ্ধ।

Advertisement

গত বিশ্বকাপে সুযোগ পাননি। প্রবল মানসিক যন্ত্রণায় অবসাদে মুহ্যমান হয়ে পড়েছিলেন একসময়। নিজেকে জাতীয় দলে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে শুরু করেন লড়াই। সঙ্গী বাইবেল। এবারের বিশ্বকাপের দলে সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু শুরুটা ভালো হয়নি। প্রথম মাচে শূন্য করেছিলেন। পরবর্তী তিনটি ম্যাচে রান না পাওয়ায় বাদও পড়েছিলেন। জেদ চেপে গিয়েছিল। ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য, নিজেকে প্রমাণ করার জন্য মঞ্চ খুঁজছিলেন তিনি। সেমিফাইনালেই সেই মঞ্চটা পেয়ে গেলেন। এবং নিজেকে উজাড় করে দিলেন। ছাপিয়ে গেলেন সবাইকে।

ম্যাচের পর বলছিলেন, "ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। কারণ, আমি একা কিছুই করিনি। তিনি পাশে না থাকলে কিছুই করতে পারতাম না। আমি জানি, তিনি আমার পাশে ছিলেন। ধন্যবাদ জানাতে চাই আমার বাবা-মা, আমার কোচ এবং কঠিন সময়ে যাঁরা আমার পাশে ছিলেন, তাঁদের সবাইকে। গত চারটে মাস কী গিয়েছে তা বলে বোঝাতে পারব না। ফিরে আসাটা ভীষণই কঠিন ছিল। স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে।" সেমিফাইনালে তাঁকে যে তিন নম্বরে ব্যাট করতে হবে, তা জেমাইমা জানতেনই না। নিজেই বললেন, "ম্যাচের ঠিক আগে জানতে পারি, আমাকে তিন নম্বরে ব্যাট করতে হবে। তবে আমি নিজেকে নিয়ে ভাবিইনি। কারণ, আমার প্রমাণ করার কিছু ছিল না। একটাই লক্ষ্য ছিল, ভারতকে জয় এনে দেওয়া। কারণ, এই পরিস্থিতিতে আমরা বহুবার পরাস্ত হয়েছি। আমি চেয়েছিলাম দলকে যতদূর সম্ভব এগিয়ে নিয়ে যেতে।"

সেঞ্চুরি করার পরও জেমাইমাকে কোনও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায়নি। তিনি বললেন, "আমার পঞ্চাশ বা একশো করাটা কোনও বিষয় ছিল না। ভারতকে জিতিয়ে আনাটাই প্রধান লক্ষ্য ছিল" এরপরই জীবনের সেই খারাপ সময়ের কথাগুলি বেরিয়ে এল তাঁর কণ্ঠ থেকে। বলে উঠলেন, "গতবছর বিশ্বকাপে আমাকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। কোনওকিছুই আমার নিয়ন্ত্রণে ছিল না। এই সফরে প্রায় প্রতিদিন কেঁদেছি। মানসিকভাবে মেটেই ভালো জায়গায় ছিলাম না। একটা উদ্বেগ ঘিরে ছিল আমাকে। তবে নিজেকে বলেছিলাম, জ্বলে উঠতে হবে।" জ্বলে ওঠার জন্য নিজের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। ভরসা ছিল বাইবেল। জেমাইমা বললেন, "বাইবেলে বলা আছে, শক্ত হয়ে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াও। ঈশ্বরই তোমার হয়ে লড়াই করবেন। মাঠের মধ্যেও বাইবেল পড়েছি তখনও অনেকটা পথ যেতে হত। আমি শুধু শান্ত থেকে নিজের কাজটা করে গিয়েছি।"

খেলা চলাকালীন সতীর্থদের সঙ্গে কথা বলেছেন। বলছিলেন, "হরমনপ্রীতদি যখন ক্রিজে এল, তখন শুধু পার্টনারশিপ তৈরির দিকেই আমরা নজর দিয়েছিলাম। রান আসছিল। রিচা আসার পরও কথা বলেছি। দীপ্তিও আমাকে উৎসাহ দিয়েছে। আমনজ্যোতও উৎসাহ দিয়েছিল। সতীর্থরা আমাক এগিয়ে যেতে উৎসাহ দিয়েছিল। ফলে এই কৃতিত্ব আমি একা নিতে পারি না। আমি নিজে থেকে কিছু করিনি।" নভি মুম্বই তাঁর ঘরের মাঠ। বলছিলেন, "এখানকার মাঠ আমার কাছে সবসময় স্পেশাল। দর্শকরাও। ওঁরা সবসময় আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন। ওরা আমার উপর বিশ্বাস রেখেছিলেন। উৎসাহিত করেছেন।" দলকে ফাইনালে তুলে জেমাইমার এখন একটাই লক্ষ্য-বিশ্বকাপ ট্রফি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • প্রথম মাচে শূন্য করেছিলেন। পরবর্তী তিনটি ম্যাচে রান না পাওয়ায় বাদও পড়েছিলেন।
  • সেমিফাইনালে তাঁকে যে তিন নম্বরে ব্যাট করতে হবে, তা জেমাইমা জানতেনই না।
  • দলকে ফাইনালে তুলে জেমাইমার এখন একটাই লক্ষ্য-বিশ্বকাপ ট্রফি।
Advertisement