আলাপন সাহা : যশস্বী জয়সওয়ালের উত্থানের কাহিনি এখন সবার জানা। মুম্বইয়ে পানিপুরি বিক্রি থেকে ভারতীয় ক্রিকেটের রাজপথ। যশস্বীর জীবনসংগ্রামের গল্প, যে কারও কাছে বিশাল অনুপ্রেরণা। কিন্তু সবার অলক্ষ্যে যশস্বীর দাদাও যে ভারতীয় ক্রিকেটে নিজেকে প্রতিষ্ঠার লড়াইটা চালিয়ে যাচ্ছেন, সেটা আর ক’জন জানেন!
তেজস্বী জয়সওয়াল। বয়সে যশস্বীর থেকে কয়েক বছরের বড়। যশস্বী যেমন ক্রিকেট কেরিয়ারের উত্থানের জন্য মুম্বইকে বেছে নেন। তেজস্বী সেখানে বছর কয়েক আগে ত্রিপুরা চলে আসেন। সেখানে ক্লাব ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন। ত্রিপুরা ক্রিকেটমহলে ফোন করে জানা গেল, বেশ কিছু বছর আগে থেকেই সেখানে ক্লাব ক্রিকেটে প্রফেশনাল ক্রিকেটার খেলানোর প্রথা শুরু হয়। আসলে ত্রিপুরা ক্রিকেটের কর্তারা ক্লাব ক্রিকেটকে আরও শক্তিশালী করতে চাইছিলেন। তাঁরা একটা ব্যাপার বুঝতে পেরেছিলেন ঘরোয়া ক্রিকেটকে শক্তিশালী করতে গেলে সবার আগে ক্লাব ক্রিকেটের মান আরও উন্নত করতে হবে। সেই ভাবনা থেকেই প্রফেশনাল ক্রিকেটার খেলানো শুরু হয় ত্রিপুরা ক্লাব ক্রিকেটে। ঠিক সেই সময়ই তেজস্বীর সঙ্গে যোগাযোগ করে একটা ক্লাব।
বর্তমানে ত্রিপুরার জোনাগড় ক্লাবের হয়ে খেলছেন তেজস্বী। গত কয়েক বছর ধরেই সেখানকার ক্লাব ক্রিকেটে ধারাবাহিকভাবে রান করে যাচ্ছেন যশস্বীর দাদা। শোনা গেল, যশস্বীর সঙ্গে নিয়মিত ক্রিকেট নিয়ে কথা হয় তেজস্বীর। কীভাবে নিজের ক্রিকেটকে আরও উন্নত করা যায়, সেটা নিয়ে দুই ভাইয়ের আড্ডা চলে। গত কয়েক বছর বছরে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের জেরে ত্রিপুরার সিনিয়র টিমে সুযোগ করে নেন তেজস্বী। এদিন বরোদার বিরুদ্ধে আগরতলায় দুর্ধর্ষ ব্যাটিং করেন তিনি। বরোদার বিরুদ্ধে ১৫৯ বলে ৮২ রানের ইনিংস খেলেন তেজস্বী। কপাল ভালো থাকলে সেঞ্চুরিটাও হয়ে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ক্লাব ক্রিকেট খেলার সময়ই তেজস্বী ঠিক করেন যে তিনি পাকাপাকিভাবে ত্রিপুরায় চলে আসবেন। সেই মতো সেখানকার কলেজেও ভর্তি হয়ে যান তেজস্বী। সেখানকার লোকজন, পরিবেশের সঙ্গে দারুণভাবে মানিয়েও নেন। আগরতলাতেই এক কোয়ার্টারে থাকেন। ভাইয়ের মতো তিনিও ভারতীয় জার্সিতে খেলার স্বপ্ন দেখেন। সংবাদ প্রতিদিন-কে ত্রিপুরার এক ক্রিকেট কর্তা ফোনে বলছিলেন, ‘‘যশস্বীর মতো তেজস্বীও বাঁ-হাতে ব্যাট করেন। দুই ভাইয়ের ব্যাটিং স্টাইলেও মিল আছে অনেক। কয়েক বছর ধরেই এখানকার ক্লাব ক্রিকেটে খেলছে তেজস্বী। আর প্রত্যেক বছরই রান করে। এবছরও ওর পারফরম্যান্স দুরন্ত ছিল। তাই রনজি টিমে ওকে নিয়ে আসা হয়। এদিন কীরকম ব্যাটিং করেছে, সেটা স্কোরবোর্ডই বলে দিচ্ছে।’’
কে বলতে পারে বছর কয়েক পর ভারতীয় ক্রিকেটে আরও এক জয়সওয়াল-ভাই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবেন না!