রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়: ভারতে খেলতে এসে বাথরুমের জল খেতে হচ্ছে কেন উইলিয়ামসনদের! এমন মাঠে খেলতে বলা হচ্ছে, যেখানে অর্ধেক জায়গা থেকে উঠে গিয়েছে ঘাস। সেই জায়গাগুলো ঢাকতে আবার প্র্যাকটিস পিচ থেকে ঘাস তুলে আনা হচ্ছে! সবমিলিয়ে চূড়ান্ত দুর্দশার ছবি নয়ডার বিজয় সিং পাঠক স্পোর্টস কমপ্লেক্সে।
নয়ডার এই মাঠেই একমাত্র টেস্ট খেলতে নামার কথা ছিল নিউজিল্যান্ড এবং আফগানিস্তানের। সোমবার থেকে ম্যাচ শুরুর কথা থাকলেও মাঠ ভিজে থাকার কারণে এখনও খেলা শুরু হয়নি। ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত অব্যবস্থার অভিযোগ এনে 'হোম গ্রাউন্ড' ভারতকে তোপ দেগেছে আফগানিস্তান। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, বিসিসিআই বা উত্তরপ্রদেশ ক্রিকেট বোর্ডের হাতে এই মাঠ পরিচালনার দায়িত্ব নেই। ম্যাচ আয়োজনের যাবতীয় ভার দেওয়া হয়েছে আফগান বোর্ডকেই। প্লেয়ারদের খাওয়াদাওয়া থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত যাবতীয় আয়োজন করার দায়িত্ব তাদেরই---অর্থাৎ আফগান বোর্ডেরই।
তালিবানি চোখরাঙানির জন্য আফগানিস্তানের মাটিতে গিয়ে ক্রিকেট খেলতে চায় না বিদেশি দলগুলো। তাই রশিদ খানদের ভরসা ভারতের মাঠই। একাধিক হোম ম্যাচ ভারতের মাটিতেই খেলেছে আফগান ব্রিগেড। আফগানিস্তান বোর্ডের সঙ্গে 'মউ' চুক্তি থাকার কারণে তাদের মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দেয় ভারতীয় বোর্ড। কিন্তু ম্যাচ আয়োজনের ক্ষেত্রে ভারতীয় বোর্ডের ভূমিকা থাকে না। তা ছাড়া নয়ডার যে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট খেলছে আফগানিস্তান, তা আবার ভারতীয় বোর্ডের তালিকাভুক্ত মাঠই নয়! এই মাঠ নয়ডা স্পোর্টস অথরিটির অধীনস্থ।
[আরও পড়ুন: ভেজা মাঠ, চূড়ান্ত অব্যবস্থা! ‘ঘরের মাঠ’ ভারতে খেলতে এসে ক্ষুব্ধ আফগানিস্তান]
জানা গিয়েছে, লখনউয়ের একানা স্টেডিয়ামে ম্যাচ খেলতে চেয়েছিল আফগানিস্তান। কিন্তু সেখানে উত্তরপ্রদেশ টি-টোয়েন্টি লিগ চলছে বলে সে মাঠ দেওয়া যায়নি। বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে নাকি দেরাদুনে খেলা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আফগান বোর্ড তাতে রাজি হয়নি। তারা নয়ডার বিজয় সিং পাঠক স্পোর্টস কমপ্লেক্সের মাঠ চায়, যেহেতু এখানে খেলার পূর্ব অভিজ্ঞতা তাদের রয়েছে। এ মাঠের পিচ, পরিবেশের সঙ্গেও তারা সহজাত। মুশকিল হল, বছরের পর বছর এ মাঠে খেলা হয় না। বিকেলের দিকে লোকে নাকি জগিং করতে যায় এ মাঠে। অতএব, যা হওয়ার তাই হয়েছে।
শোনা গেল, মাঠের একটা অংশ খুঁড়ে ফেলেছিলেন মাঠকর্মীরা। তা ঢাকতে প্র্যাকটিস পিচ থেকে ঘাসের চাঙর তুলে আনতে হয়! নিকাশি ব্যবস্থা শোচনীয়। এমনকী অভিযোগ, মাঠে প্লেয়ারদের খাবারদাবার দিচ্ছে যে ক্যাটারার, তাদের কাছে পানীয় জল পর্যন্ত নেই! যে জলের জোগানের জন্য নাকি এখন বাথরুমের কলের শরণাপন্ন হচ্ছে! আফগান বোর্ডর কর্তারা শোরগোল ফেলেছেন অব্যবস্থা নিয়ে। কিন্তু ঘটনা হল, ভারতীয় বোর্ড দেরাদুনে খেলতে বলেছিল। যা আফগান বোর্ড কর্তারা শোনেননি। তার পরেও উত্তরপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার কর্তারা ফোন করার চেষ্টা করেছিলেন নয়ডা মিউনিসিপ্যালিটির কর্তাদের। মাঠ সংক্রান্ত যে কোনও ধরনের সাহায্যের অভিলাষ নিয়ে। কিন্তু সে ফোন কেউ তুললে তো!