সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বকাপ অভিযান শুরু ঠিক ৪৮ ঘণ্টা আগে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক চুকে গেল ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর। তবে বিদায় বেলায় মনের মধ্যে কোনও ক্ষোভ, আক্ষেপ আর জমিয়ে রাখলেন না। তাই তো ক্লাব ও কোচের সঙ্গে হাজারো মনোমালিন্য-বিতর্ক সত্ত্বেও অকপটে লিখে দিলেন, ম্যান ইউর প্রতি তাঁর ভালবাসায় কোনওদিন ঘাটতি পড়বে না।
কাতারের মাটিতে রোনাল্ডোর (Cristiano Ronaldo) পর্তুগাল কতদূর যাবে, তা এখনই স্পষ্ট করে বলার উপায় নেই। তবে তাই মধ্যে নিশ্চিত হয়ে গেল যে কাপ যজ্ঞ মিটলে আর ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ফিরছেন না সিআর সেভেন। মঙ্গলবারই চুক্তি ভাঙার কথা ঘোষণা করা হল ক্লাব আর রোনাল্ডো- দু’তরফ থেকেই। এদিন হঠাৎ করে ক্লাবের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, “এই মুহূর্ত থেকে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো আর ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের বিচ্ছেদ হয়ে গেল। দুই পক্ষের সম্মতিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ক্লাবের জার্সিতে অবদান রাখার জন্য রোনাল্ডোকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। ইউনাইটেডে দুই পর্ব মিলিয়ে ৩৪৬ ম্যাচে ১৪৫ গোল করেছেন তিনি। তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে ভবিষ্যতের জন্য শুভেচ্ছা।”
[আরও পড়ুন: এখনই অনুব্রতর দিল্লি যাত্রা নয়, ইডিকে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাই কোর্টে তৃণমূল নেতা]
এরপরই নিজের সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে আবেগঘন পোস্ট করেন রোনাল্ডো। লেখেন, “সময়ের আগেই চুক্তি বাতিল করার বিষয়ে আমি ও ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড (Manchester United) একমত হয়েছি। আমি ক্লাব এবং ক্লাবের সমর্থকদের ভালবাসি। এই ভালবাসায় কোনও পরিবর্তন হবে না। মনে হচ্ছে এটাই নতুন চ্যালেঞ্জ খোঁজার জন্য সেরা সময়। ভবিষ্যতে দলের সাফল্য কামনা করি।”
পরিস্থিতি যে বিচ্ছেদের দিকে যাচ্ছে, তা বোঝা গিয়েছিল সপ্তাহ খানেক আগেই। ব্রিটিশ সাংবাদিক পিয়ার্স মর্গ্যানের কাছে সাক্ষাৎকারে একটু বেশিই অকপট হয়ে গিয়েছিলেন রোনাল্ডো। কোচ থেকে মালিকপক্ষ- ইউনাইটেডের সব কিছু নিয়ে বোমা ফাটিয়েছিলেন পর্তুগিজ মহাতারকা। কখনও ক্লাবের হাল নিয়ে তিনি বলেছেন, “নতুন কোচের আমলে ম্যাঞ্চেস্টারের কোনও উন্নতিই হয়নি। স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন যে জায়গায় রেখে গিয়েছিলেন, এখনও সেই জায়গাতেই আটকে রয়েছে ক্লাব।’’ আবার বর্তমান কোচ এরিক টেন হাগ নিয়ে রাখঢাক না করেই বলেছেন, “ওঁকে আমি সম্মান দিতেই রাজি নই। কারণ, উনি আমাকে কখনও সম্মান করেন না। আর যিনি আমাকে সম্মান দেন না, আমিও তাঁকে সম্মান দিই না।”
[আরও পড়ুন: মেসিদের ১৫টি শট সেভ করে ত্রাতা সৌদির গোলকিপার, কে এই ওয়াইস?]
সেখানেই থামেননি রোনাল্ডো। নিশানা করেছেন ক্লাব ম্যানেজমেন্টকেও। তুলেছেন সরাসরি ‘বিশ্বাসঘাতকতার’ অভিযোগ। রোনাল্ডো বলেছেন, “কোচ চেয়েছিলেন, আমি দল ছেড়ে চলে যাই। তবে শুধু কোচ নন। ক্লাবের আরও দু’তিনজন ব্যক্তি চেয়েছিলেন, আমি দল ছেড়ে চলে যাই। ম্যাঞ্চেস্টার আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।’’ এর পর রোনাল্ডোর ইউনাইটেডে থেকে যাওয়াই অবিশ্বাস্য হত। তবে পুরনো ক্লাব তাঁকে যেভাবে বিদায় জানাল, তা মেনে নিতে পারছেন না রোনাল্ডো ভক্তরা।