স্টাফ রিপোর্টার, নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘আন্দোলনজীবী’ কটাক্ষের জবাব দিল কংগ্রেস (Congress)। একদিকে নাম না করেও কেন্দ্রীয় সরকারকে ‘ক্রোনি-জীবী’ হিসাবে উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে দেশ বিক্রি করার অভিযোগ আনলেন রাহুল গান্ধী, অন্যদিকে নিজেদের ‘গর্বিত আন্দোলনজীবী’ বললেন দলের প্রবীণ নেতা পি চিদম্বরম (P Chidambaram)।
সোমবার রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর জবাবি বক্তৃতায় নতুন সম্প্রদায়, ‘আন্দোলনজীবী’র উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর লক্ষ্য সেই বিরোধীরা, বিশেষ করে কংগ্রেস, যারা কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবারই এই প্রসঙ্গে সরব হয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন এনডিএ জোটের সদ্য প্রাক্তন শরিক শিরোমণি অকালি দল সাংসদ হরসিমরত কৌর। এদিন টুইটে হিন্দিতে প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল (Rahul Gandhi) লেখেন, ‘ক্রোনি-জীবী তারা, দেশ বেচছে যারা।’
[আরও পড়ুন: নারী সুরক্ষায় নয়, ‘নির্ভয়া ফান্ডে’র অধিকাংশ টাকা খরচ হয়েছে অন্য খাতেই! দাবি রিপোর্টে]
উল্লেখ্য, ‘ক্রোনি পুঁজিবাদ’ শব্দটি রাজনীতিতে খুব কমই ব্যবহার হয়ে থাকে। সাধারণভাবে ‘দল বেঁধে লুঠপাট বোঝাতে শব্দটি ব্যবহার হয়। ‘দ্য ইকোনমিস্ট ১’-এর সংজ্ঞায় ক্রনি ক্যাপিটালিজম হল সেই বন্দোবস্ত, যার মাধ্যমে পুঁজিপতিরা রাজনীতিকদের কাছ থেকে মূল্যবান সম্পদ লাভ করে থাকে। ক্রোনি ক্যাপিটালিজম মতবাদের সূচনা ১৯৯৮ সাল থেকে। ইন্দোনেশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট সুহার্তো তাঁর শাসনকালে নিয়ম ভেঙে তাঁর পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন ও দলীয় লোকদের বড় বড় ব্যবসা ও প্রকল্পের কাজ ভাগ করে দেন। এতে দেশটিতে খুব অল্প সময়ের মধ্যে একটি ধনিক গোষ্ঠীর জন্ম হয়। সাম্প্রতিক অতীতে বারবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ‘বন্ধু শিল্পপতিদের’ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন কংগ্রেস ও অন্যান্য বিরোধী দল। এদিন সেই সুরেই নাম না করে সরকারকে কটাক্ষ করলেন রাহুল। তার আগেই অবশ্য নিজেকে ‘গর্বিত আন্দোলনজীবী’ বলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরম (P Chidambaram)। তাঁর টুইট, ‘আমি একজন গর্বিত আন্দোলনজীবী। যার সব থেকে বড় উদাহরণ মহাত্মা গান্ধী।’ অনেকেই টুইটার-সহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের নামের আগে ও পরে আন্দোলনজীবী জোড়েন। বিজেপি নেতাদের আবার নিজেদের মতো করে আন্দোলনজীবীর সংজ্ঞা লিখতেও দেখা গেল এদিন।
[আরও পড়ুন: সাক্ষাৎ দেবদূত! মৃত্যুর মুখ থেকে যাত্রীকে বাঁচালেন মহিলা RPF কর্মী, ভাইরাল ভিডিও]
এদিকে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আবার ঘোষণা করে দিয়েছেন, “কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলেই তিন কালা কানুন বাতিল করবে কংগ্রেস।” উত্তরপ্রদেশে দশদিনের জয় জওয়ান জয় কিষাণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। তারই অঙ্গ হিসাবে বুধবার সাহারানপুরে কিষাণ মহাপঞ্চায়েতের ডাক দেন দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। হাজার হাজার কালো মাথার ভিড়ে এদিন আগাগোড়া কেন্দ্রকে আক্রমণ করেন প্রিয়াঙ্কা। ক্ষমতায় ফিরে কৃষক আইন প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিন ও পাকিস্তান সফরে যাওয়ার সময় থাকে, অথচ দিল্লির সীমানায় আড়াই মাসের উপর আন্দোলন করা কৃষকদের কাছে যাওয়ার সময় থাকে না।”