shono
Advertisement
Cyclone Remal

নষ্ট পানের বরজ, উপড়েছে পটল গাছ, রেমাল তাণ্ডবে বিপুল ক্ষতি ফসলের

দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকার সবজি চাষ ব‌্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। একই অবস্থা হুগলির সিঙ্গুর, হাওড়ার গ্রামীণ এলাকার চাষবাসেরও। 
Published By: Paramita PaulPosted: 05:45 PM May 28, 2024Updated: 01:41 PM May 29, 2024

সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: পটল থেকে শসা, কুমড়ো থেকে পান। ঘূর্ণিঝড় রেমালের ধাক্কায় তছনছ হয়ে গিয়েছে বাংলার ফসল ভাণ্ডারের একাংশ। বিশেষ করে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকার সবজি চাষ ব‌্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। একই অবস্থা হুগলির সিঙ্গুর, হাওড়ার গ্রামীণ এলাকার চাষবাসেরও। 

Advertisement

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ভাঙড় ও ক‌্যানিংয়ের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে নানা সবজির চাষ হয়। রেমালের দাপটে প্রবল বৃষ্টিতে সেসবই ব‌্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। মূলত বেশি ক্ষতি হয়েছে মাচার ফসলের। এই সময়ে মরশুমি পটল, ঝিঙে, উচ্ছে, লাউ, কুমড়ো, শসা প্রভৃতি মাচার ফসল প্রচুর নষ্ট হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের আগাম সতর্কবার্তা থাকায় মাচার ফসলের ক্ষেত্রে চাষিরা বাড়তি সুরক্ষার বন্দোবস্ত করলেও ঝোড়ো হাওয়া ও লাগাতার বৃষ্টির দাপটে সে সবের কিছুই টেকেনি। মাচাগুলি শক্ত করে বাঁধার পরও বিঘার পর বিঘা ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। 

[আরও পড়ুন: বিচারপতিদের পিছনে কি গুন্ডা লেলিয়ে দেবেন? তৃণমূলকে খোঁচা মোদির]

সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে পানের বরজের। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ, নামখানা, সাগরের বিস্তীর্ণ এলাকায় পানের চাষ হয়। ঝড়জলে পানের খেতে জল দাঁড়িয়ে গোড়া পচে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কৃষিদপ্তরের এক আধিকারিক জানান, নয়-নয় করে একশো বিঘার উপর পানের বরজ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যদিও, দুর্যোগ এখনও পুরোপুরি না কমায় চূড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতির খতিয়ান এখনই নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। প্রচুর ওলগাছ, কলাবাগান নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ঝড়ে প্রচুর পেঁপে গাছ ভেঙে পড়েছে, নষ্ট হয়ে গিয়েছে পেঁপের গুটি। নটে শাক, পুঁইশাকের গোড়ায় যাতে জল না জমতে পারে, সেজন‌্য তড়িঘড়ি ড্রেনিংয়ের ব‌্যবস্থা করা হচ্ছে।

হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর এবং আমতা দু’নম্বর এলাকায় বাদাম ও তিল চাষে ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যদিও, তা অনেকটা নির্ভর করছে সোমবার, মঙ্গলবার বৃষ্টির পরিমাণের উপর। কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত আমতা দু’নম্বর ব্লক এবং উদয়নারায়ণপুর এলাকায় বাদাম, তিল চাষ হয়। হাওড়ায় এ বছর প্রায় ৫ হাজার হেক্টর বাদাম চাষ হয়েছে এবং আড়াই হাজার হেক্টর তিল চাষ হয়েছে। বৃষ্টি যদি আরও হয় তা হলে তিল গাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাদাম কিছু নষ্ট হলেও যদি গাছ বেঁচে থাকে তা হলে বাদামের ক্ষতির পরিমাণ কম হবে। হাওড়ার কৃষি আধিকারিক রামপ্রসাদ ঘোষ বলেন,"চাষের ক্ষতির ক্ষেত্রে এই দুটো ফসল ছাড়া পটল, ঝিঙে-সহ গ্রীষ্মকালীন কিছু সবজির ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বৃষ্টি যদি বেশি হয় তাহলে চাষের ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই বাড়বে।"

[আরও পড়ুন: বিমানে বোমাতঙ্ক, রানওয়েতেই থমকাল বারাণসীগামী ইন্ডিগোর উড়ান]

কৃষিপ্রধান হুগলি জেলায় ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টির জেরে প্রচুর ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সিঙ্গুরের বুড়িগ্রাম মাঠে বিঘার পর বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অতিবৃষ্টির জেরে জল জমেছে কপি, তিল, পটল, বাদাম খেতে। বিশেষ করে বৃষ্টির জেরে অসময়ের কপি পুরোটাই নষ্ট হয়ে যাবে বলে দাবি কৃষকদের। ক্ষতি হয়েছে পটলের। ঝড়ের দাপটে পটলগাছের ক্ষতি হয়েছে।  একে অনাবৃষ্টির কারণে ফসলে লাভ হয়নি। এবার নতুন করে অসময়ে অতিবৃষ্টির কারণে ফসলের প্রচুর ক্ষতি হওয়ায় মাথায় হাত চাষিদের। এক কৃষক বলেন, "এতদিন অত্যাধিক গরম পড়েছিল যার ফলে অনেক ফসলের ক্ষতি হয়েছিল। আর এবার অসময়ে এই ঝড় বৃষ্টিতে আবার ক্ষতির মুখে পড়তে হল।" সরকার তাঁদের পাশে দাঁড়াবে, আশা কৃষকদের। ঝড়ের প্রভাবে উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়া, স্বরূপনগর, বসিরহাট ১ ও ২ নম্বর ব্লকের মতো কৃষি প্রধান এলাকাগুলিতে জমিতে জল ঢুকে যাওয়ায় ফসলের গোড়ায় জল জমতে শুরু করেছে। মাথায় হাত স্থানীয় কৃষকদের। রেমালের খবর পেয়ে তাঁরা ঢ্যাঁড়শ, উচ্ছে, পটল ও ঝিঙে-সহ একাধিক ফসল বাড়িতে তুললেও শেষ পর্যন্ত তা রক্ষা করতে পারেননি। বিস্তর ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা।

অন‌্যদিকে, নদিয়ার কৃষিপ্রধান তেহট্ট মহকুমায় সেইভাবে কোথাও ফসলের ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই। মহকুমা এলাকার চাষিরা যে পরিমাণ ক্ষতির আশঙ্কা করেছিলেন, তার তুলনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খুবই কম। কিছু কলা ও পেঁপে গাছ মাটি নরম হয়ে যাওয়ার ফলে উপড়ে পড়ে গিয়েছে। তবে ভুট্টা চাষে বেশ কিছু ক্ষতি হয়েছে। তবে, রেমালের দাপটে নদিয়া জেলায় বৃষ্টির পরিমাণ খুব বেশি নয়। সেক্ষেত্রে এই পরিমাণ বৃষ্টিতে লাভবান হয়েছেন পাটচাষিরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • পটল থেকে শসা, কুমড়ো থেকে পান।
  • ঘূর্ণিঝড় রেমালের ধাক্কায় তছনছ হয়ে গিয়েছে বাংলার ফসল ভাণ্ডারের একাংশ।
  • বিশেষ করে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকার সবজি চাষ ব‌্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
Advertisement