সুদীপ রায়চৌধুরী: দীর্ঘ এক যুগ পর আরএসএসের সাংগঠনিক শীর্ষস্তরে রদবদল। সংঘের সরকার্যবহ বা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন সুরেশ ভাইয়াজি যোশী। প্রত্যাশামতোই সর্বসম্মতভাবে তাঁর জায়গায় এলেন দত্তাত্রেয় হোসবলে। শনিবার বেঙ্গালুরুতে সংঘের সর্বোচ্চ মঞ্চ অখিল ভারতীয় প্রতিনিধি সভার শেষদিনে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘে ‘সরকার্যবহ’ পদের অবস্থান সরসংঘচালক বা সংঘপ্রধানের ঠিক নিচে। সাংগঠনিকভাবে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষমতাশালী পদ। সংঘের নীতিগুলিকে সঠিকভাবে কার্যকর করা ও সংগঠনিক যাবতীয় কাজকর্ম চালানো বা দেখভালের দায়িত্ব সরকার্যবহের। ২০০৯ সালে তৎকালীন সরকার্যবহ মোহন ভাগবত যখন সংঘপ্রধান মনোনীত হন, তখন তাঁর ছেড়ে আসা পদে আনা হয়েছিল ভাইয়াজিকে। টানা ১২ বছর এই দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ২০১৮ সালে শারীরিক কারণে সরে যেতে চাইলেও ১৯-এ লোকসভা ভোট থাকায় সেই অনুরোধ রাখা হয়নি। তবে তাঁর কাজের চাপ কমাতে সহ সরকার্যবহের সংখ্যা বাড়ানো হয়। অবশেষে এদিন ৭৩ বছরের প্রবীন প্রচারকের ইচ্ছাকে মান্যতা দেওয়া করা হল। হোসবলের জায়গায় নতুন সহ-কার্যবহ হয়েছেন প্রচার প্রমুখ অরুণ কুমার। নতুন প্রচার প্রমুখ হলেন সুনীল আম্বেকর।
[আরও পড়ুন: ‘ছেঁড়া জিনস’ মন্তব্যে ক্ষমা চাইলেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী, তবুও রইলেন বক্তব্যে অনড়]
বেঙ্গালুরুর সভায় বড় সিদ্ধান্ত হয়েছে বাংলা নিয়েও। এতদিন সাংগঠনিকভাবে বাংলাকে দুটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছিল। উত্তরবঙ্গ ও সিকিম নিয়ে ‘উত্তরবঙ্গ প্রান্ত’ এবং দক্ষিণবঙ্গ ও আন্দামান নিয়ে ‘দক্ষিণবঙ্গ প্রান্ত’। এবার দক্ষিণবঙ্গ ভেঙে বর্ধমান,বীরভূম, বাঁকুড়া, নদিয়া, হুগলি ও তারকেশ্বকে নিয়ে ‘মধ্যবঙ্গ’ বলে নতুন প্রান্ত করা হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গে সংঘের কাজকর্ম বেড়ে যাওয়ার করাণেই এই সিদ্ধান্ত।
[আরও পড়ুন: আর কতদিন শিক্ষা-চাকরিতে সংরক্ষণ চলবে? কেন্দ্রকে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের]
নতুন সরকার্যবহ হোসবোলে কর্ণাটকের লোক। ইংরাজিতে স্নাতকোত্তর, একাধিক ভাষায় দক্ষ ৬৬ বছর বয়সী এই প্রচারক সংঘের অভ্যন্তরে নরেন্দ্র মোদির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। স্বাভাবিকভাবেই এই নিয়োগে দলের পর সংঘেও মোদির প্রভাব আরও বাড়ল বলে সংশ্লিষ্ট মহলের ধারনা। এর আগে সর্বভারতীয় বিজেপির ‘সেকেন্ড ইন কম্যান্ড’ সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) পদে আনা হয়েছে কর্ণাটকেরই বি এল সন্তোষকে। এবার সংঘেরও ‘সেকেন্ড ইন কম্যান্ড’ পদে একই রাজ্যের ভোসবোলে। তাহলে কি উত্তর ভারত জয়ের পর আরএসএসের নজর এখন দাক্ষিণাত্য বিজয়? সে প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে।