অর্ণব আইচ: IIM জোকার হোস্টেলের ভিতর থেকে উদ্ধার হল ম্যানেজমেন্টের এক ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ। শনিবার হোস্টেলেরই একটি বিল্ডিংয়ের চারতলার ঘরের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় পায়েল খান্ডেলওয়াল (২৮) নামে ওই ছাত্রীর দেহ। যা নিয়ে ঘনীভূত হয়েছে রহস্য।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের ধারণা, গলায় বিছানার চাদরের ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ওই যুবতী। বিবাহিত ওই যুবতীর শ্বশুরবাড়ি গুজরাটের আমেদাবাদে। যদিও পারিবারিক কোনও কারণে মানসিক অবসাদ থেকে পায়েল আত্মঘাতী হতে পারেন, এই সম্ভাবনাও পুলিশ উড়িয়ে দিচ্ছে না।
[আরও পড়ুন: পকেট ভরতি জালনোট! সোনা কিনতে এসে ধৃত প্রতারক, চলল বেদম প্রহার]
পুলিশ জানিয়েছে, এদিন সকাল এগারোটা নাগাদ IIM জোকা কর্তৃপক্ষের কাছে পায়েল খান্ডেলওয়ালের বাপের বাড়ি থেকে ফোন আসে। পায়েলের বাবা ব্যবসায়ী প্রবীণ খান্ডেলওয়াল বাগুইআটি এলাকার নারায়ণতলায় থাকেন। তাঁরা ফোনে জানান, সকাল থেকেই মেয়েকে বারবার ফোন করে পাচ্ছেন না। এমবিএ–র ছাত্রী পায়েল ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট জোকার এমডিসি বিল্ডিংয়ের চারতলায় ৩২৭ নম্বর রুমে থাকতেন। আইআইএমের নিরাপত্তারক্ষী ও অন্যান্য কর্মীরা দরজায় ধাক্কা দিতে শুরু করেন। কিন্তু অনেকক্ষণ ধরেই তাঁরা কোনও সাড়াশব্দ পাচ্ছিলেন না। দরজা ভিতর থেকে আটকানো ছিল।
এরপর দরজা ভেঙে কর্মীরা ভিতরে ঢুকে দেখেন, সিলিং থেকে গলায় বিছানার চাদরের ফাঁস দিয়ে ঝুলছেন পায়েল। তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি হরিদেবপুর থানাকে জানান। পুলিশ এসে ওই ছাত্রীর দেহ উদ্ধার করে। পায়েলের বাপের বাড়িতেও বিষয়টি জানানো হয়। প্রাথমিক তদন্তে পায়েলের বাড়ির লোকেদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জেনেছে, বরাবরই পড়াশোনায় ভাল ছিলেন তিনি। আড়াই বছর আগে আহমেদাবাদের ব্যবসায়ী যশমিত প্যাটেলের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। শ্বশুরবাড়ির লোকেরা আহমেদাবাদে থাকলেও স্বামী থাকেন বেঙ্গালুরুতে। সেখানেও কিছুদিন পায়েল ছিলেন। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শুরু হয় সাংসারিক অশান্তি। ওই দম্পতির সন্তান না হওয়ার কারণেও সেই অশান্তি বাড়ে, এমন তথ্য এসেছে পুলিশের হাতে। যদিও এই তথ্যগুলি পুলিশ যাচাই করে দেখছে।
[আরও পড়ুন: ‘লিফটে করে উঠিনি, ধাপে ধাপে এতদূর উঠেছি’, তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য শুভেন্দু অধিকারীর]
জানা গিয়েছে, পায়েল নিজেও একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন। ভালো বেতনও পেতেন। তবু পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। অনেকটা জোর করেই এই বছর এমবিএতে প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। এর আগে মূলত পড়াশোনার প্রয়োজনে ২৮ লাখ টাকা ঋণ নেন। সেই ঋণ শোধ দেওয়া শুরুও করেছিলেন। যদিও পুলিশের মতে, মাথায় ঋণের বোঝা ছিল বলে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন, এ বিষয়টিও মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। তাঁর মোবাইল ফোন ও কল লিস্ট পুলিশ খতিয়ে দেখছে। শেষ কাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন পায়েল, তাও জানার চেষ্টা চলছে। পুলিশের মতে, শুক্রবার রাত থেকে শনিবার ভোর রাতের মধ্যেই আত্মঘাতী হন তিনি। সাধারণভাবে সুইসাইড নোট না পাওয়া গেলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু লিখে গেছেন কি না, পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।