সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: মৃত ভেবে দাহের জন্য চিতায় তুলে দেওয়া হয়েছিল দেহ। পাশে দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। ঠিক মুখাগ্নির মুহূর্তে অদ্ভুত কাণ্ড। আচমকা নড়েচড়ে বসলেন বৃদ্ধা! চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বরে (Pandabeswar)। এরপরই তড়িঘড়ি বৃদ্ধাকে নিয়ে আসা হয় দুর্গাপুর (Durgapur) মহাকুমা হাসপাতালে। সেখানে তাঁকে ভরতি করা হলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় তাঁর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাণ্ডবেশ্বরের বৈদ্যনাথপুরের নামু পাড়ার বাসিন্দা পুষ্পরানী আচার্য (৭৮)। স্বামীর মৃত্যুর পর দুই ছেলে, বউমাকে নিয়েই সংসার তাঁর। মাস নয়েক আগে পড়ে যাওয়ায় বৃদ্ধার কোমর ভেঙে যায়। সেই থেকেই তিনি অসুস্থ অবস্থায় বিছানায়। বৃহস্পতিবার বিকেলে হঠাৎই বৃদ্ধার সাড়া শব্দ না পেয়ে ছেলেরা খবর দেয় পাড়া-প্রতিবেশীদের। ওই এলাকাটি কনটেনমেন্ট জোন হওয়ায় খবর দেওয়া হলেও কোনও চিকিৎসক আসেনি বলেই অভিযোগ। এদিকে বহু ডাকাডাকির পরও বৃদ্ধার কোনও প্রতিক্রিয়া না পাওয়ায় তিনি মারা গেছেন বলেই ধারণা হয় তার পরিবার ও প্রতিবেশীদের। এরপর সন্ধেয় সৎকারের জন্য দেহ স্থানীয় শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। সাজানো হয় চিতা। সৎকারের নিয়ম-রীতি মেনে বৃদ্ধাকে তোলা হয় তাতে। কিন্তু এরপরই ঘটে আশ্চর্য ঘটনা। মুখাগ্নি করার প্রস্তুতি নিতেই হঠাৎ চিতার উপর নড়াচড়া করে ওঠেন বৃদ্ধা। শব্দও করেন। যা দেখে শ্মশান যাত্রীদের অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ঘটনার প্রাথমিক আকস্মিকতা কাটার পর খবর দেওয়া হয় পাণ্ডবেশ্বর থানায়।
[আরও পড়ুন: ‘যশে’র দাপটে বিধ্বস্ত দিঘাকে সাজাতে আলাপনই ভরসা মমতার, দিঘা উন্নয়ন পর্ষদের দায়িত্বে মুখ্যসচিব]
পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে চিকিৎসার জন্য বৃদ্ধাকে নিয়ে যায় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। যদিও হাসপাতালে আনার পথেই মৃত্যু হয় বৃদ্ধার। এই বিষয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য যমুনা ধীবর জানান, “মৃত মনে করেই দেহ সৎকার করাতে নিয়ে গিয়েছিল পরিবার। হঠাৎ নড়েচড়ে ওঠেন। চিকিৎসক না আসার ফলেই এই বিপত্তি।” শুক্রবার ময়নাতদন্তের পর রাতে দেহ সৎকার হবে বৃদ্ধার।