দীপালি সেন: ঠিক কতটা নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন স্বপ্নদীপ? কে বা কারা অত্যাচার করেছিল তাঁকে? কীভাবে মৃত্যু হল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর? নাম প্রকাশ্যে আনতে না চাইলেও অভিশপ্ত রাতের কথা জানালেন মৃত ছাত্রের এক সহপাঠী।
ওই সহপাঠী জানান, “ছেলেটা আমার সাথে ইন্ট্রো দিতে গিয়েছিল ২দিন আগে যেদিন ও প্রথম হস্টেলে আসে। আমি ৩ রাত গাঁজা ডলে দিয়েছি। রাত ১০টায় যেতাম, ৫টায় আসতাম আমরা। ১০ দিন ছিলাম ৬ দিন করেছি ওরকম। ওই ছেলেটা একটু নারীসুলভ যেগুলোকে বলে সচরাচর একটু নরম হাত পা, ফর্সা, খুবই আর নুদনুদে ছিল তাই। ওকে গে বলে ট্রিগার করত সবাই হস্টেলের সিনিয়াররা। সেই রাতে মে বি ওকে প্রমাণ করতে বলে যে প্রমাণ কর যে তোর…। দিয়ে ও প্রমাণ দেয় পরে হাসাহাসি করে ওরা আর লজ্জায় থাকতে না পেরে ছেলেটা ঝাঁপ দেয়। আমি তখন নিচে খেতে গিয়েছিলাম।”
[আরও পড়ুন: ‘পুলিশ হয়তো ডাকতে পারে’, গ্রেপ্তারির আগেই আশঙ্কা করেছিল যাদবপুরের ছাত্রমৃত্যুতে ধৃত মনোতোষ]
স্বপ্নদীপের ওই সহপাঠী চ্যাটে আরও উল্লেখ করেন, “আমার থেকে ২৫ মিটার দূরে পড়ে। ৫-৬ জন ছিলাম ওখানে। দৌড়ে যাই। ২ জন মাথাটা কোলে বসায়। দিয়ে চেক করে মাথা কতটা ফেটেছে। আমি পায়ের কাছে দাঁড়িয়ে ছিলাম রক্ত বেরোচ্ছিল। নার্ভ দেখি খুবই স্লো। আর মুখ দিয়ে প্রচণ্ড রক্ত বেরোচ্ছিল। জুনিয়াররা দাঁড়ি রাখতে পারে না বাট ওর গলাতে এত রক্ত জমেছিল। একদম সান্তাদের দাঁড়ির মতো লাগছিল একটু পরেই। ওকে কোলে সরানোর সময় বোঝা যাচ্ছিল ওর শিরদাঁড়াটা শেষ। মাথার পিছন ফাটা। আমি চার নম্বর যে ওর শরীরটার কাছে পৌঁছই ততক্ষণে ওর নার্ভ স্লো হয়ে যায়। আমি নিজে দেখেছি নার্ভ। কাল রাতে বাড়িতে এসেছি। ঘুমোতে পারিনি পরশু রাত থেকে। আমি জানি না কে করেছে। উপরে অনেক সিনিয়র থাকে। ওকে কোন সিনিয়র সেদিন জ্বালাচ্ছিল আমার জানা নেই। সেকেন্ড ইয়ারের ওরাও ব়্যাগিং নেয়। এর মধ্যে কে নিয়েছে, কে নেয়নি বলা মুশকিল। সেদিন কে নিয়েছে এটাও বলা খুবই মুশকিল। একটু কেউ এগিয়ে না আসলে উপায় নেই। আমি তো নিচে ছিলাম গ্রাউন্ড ফ্লোরে আমার থেকে ২৫ মিটার দূরে পরে ও। আমিও খুব করে বলতে চাই তোমাকে তাই-ই বললাম। আমি চেপে রাখতে পারছি না আর। কিন্তু বলতেও পারছি না।” এই চ্যাট সামনে আসার পরে আরও জোরাল ব়্যাগিং তত্ত্ব। সত্যি কী ঘটেছিল ওই রাতে, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।