shono
Advertisement

পরিকাঠামোহীন হোম আইসোলেশনই রাজ্যে করোনায় মৃত্যু বাড়াচ্ছে! জরুরি বৈঠক স্বাস্থ্যসচিবের

হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীদের সঙ্গে স্থানীয় জেনারেল ফিজিশিয়ানদের পরামর্শ করা বাধ্যতামূলক।
Posted: 12:05 PM Oct 28, 2020Updated: 12:07 PM Oct 28, 2020

কৃষ্ণকুমার দাস: পরিকাঠামোহীন হোম আইসোলেশনের জন্যই কলকাতা ও লাগোয়া জেলায় সংক্রমণ এবং মৃত্যুহার দুই-ই বাড়ছে। হোম আইসোলেশনে থাকার সময় ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ না করেই যেমন ওষুধ খাচ্ছেন তেমনই নির্দিষ্ট সময় অন্তর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা পরিমাপ করছেন না। অধিকাংশ আইসোলেশন থাকা রোগীর বাড়িতে অক্সিমিটারই নেই। বস্তুত যখন রোগীর তুমুল শ্বাসকষ্ট (অক্মিজেনের মাত্রা ৯০ এর নিচে) ও অন্যান্য জটিল উপসর্গ শুরুর পর রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে এলে মারা যাচ্ছেন।

Advertisement

স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য বলছে, গত দুই সপ্তাহে করোনায় মৃত রোগীর ৩০ শতাংশই হোম আইসোলেশনে ছিলেন। তাঁরা সংকটজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভরতির পর মৃ্ত্যু হয়েছে। বস্তুত এই কারণেই অর্থাৎ মৃত্যুহার কমাতে এবার হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীদের সঙ্গে স্থানীয় জেনারেল ফিজিশিয়ানদের পরামর্শ করা বাধ্যতামূলক করছে রাজ্য সরকার।

[আরও পড়ুন : তাড়াহুড়োয় সন্তানকে ট্যাক্সিতেই ফেলে গেলেন দম্পতি! পুলিশ ও চালকের উদ্যোগে উদ্ধার খুদে]

বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের সমস্ত পুরসভার বিদায়ী পুরপ্রধানের (বর্তমানে প্রশাসক) সঙ্গে আগামী বৃহস্পতিবার বৈঠক (ভিডিও কনফারেন্স) করবেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। স্বাস্থ্যদপ্তরই পুরসভাগুলিকে হোম আইসোলেশন ‘পেশেন্ট ম্যানেজমেন্ট’ নিয়ে একটা বিশেষ মডিউলের প্রশিক্ষণ দেবে। কোভিডে মৃত্যু হার কমাতে পুরসভা, স্থানীয় জেনারেল ফিজিশিয়ান ও হাসপাতাল নিয়ে তৈরি ‘ত্রিভুজ’-এর আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে এই প্রশিক্ষণ শেষের সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছে নবান্ন।

কোভিড নিয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের বুলেটিন অনুযায়ী, দশমীর দিন রাজ্যে কোভিডের অ্যাকটিভ কেসের সংখ্যা ৩৭,১৯০। একাদশীতে অবশ‌্য সং‌খ‌্যা ১৮ কমেছে। অ‌্যাক্টিভের ৭৫ শতাংশের বেশি হোম আইসোলেশনে। ১২ অক্টোবর অ্যাকটিভ ছিল ৩০,৬০৪। হোম আইসোলেশনে ছিলেন ২২, ৩৬৬ জন। দশমীর দিন হোম আইসোলেশনে ২৪,৩৩৯ জন। এখানেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিরা।

কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য, হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীদের একটা বড় অংশ আবার করোনা পরীক্ষা করাচ্ছেন না। আক্রান্তের পরিবারে একজনের কোভিড পজিটিভ হলে অন্যরা টেস্ট না করেই সংক্রমিতের প্রেসক্রিপশন দেখেই নিজেরা ওষুধ খাচ্ছেন। যাঁদের হাই ব্লাড সুগার বা কিডনিজনিত কো-মর্বিডিটি আছে তাঁরা অনেকে আচমকাই সংকটে পড়ছেন। শেষ মুহূর্তে হাসপাতালে গেলে ফুসফুসের ভয়ানক ক্ষতি হওয়ায় ভেন্টিলেশনে দিয়েও মৃত্যু আটকানো যাচ্ছে না।
স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য, কলকাতায় হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীরা অনেকে ডাক্তারের পরামর্শ নিলেও জেলায় অধিকাংশ সংক্রমিত চিকিৎসকের ধার মাড়াচ্ছেন না। বস্তুত এই কারণে এখন জেলায় মৃত্যুর হার বাড়ছে। বস্তুত সেই কারণে মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে প্রতিটি জেলায় হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীদের সঙ্গে জেনারেল ফিজিশিয়ান ও প্রশাসনের ‘ত্রিভুজ’ তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন।

[আরও পড়ুন : দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে ফের ভারত-বাংলাদেশ উড়ান চালু , বুধবারই কলকাতায় নামছে ঢাকার বিমান]]

এদিন আইএমএ রাজ্য শাখার সম্পাদক সাংসদ ডাঃ শান্তনু সেনের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল স্বাস্থ্যভবনে গিয়ে স্বাস্থ্যসচিবকে জেলাভিত্তিক জেনারেল ফিজিশিয়ানদের তালিকা তুলে দেন। আইএমএ’র তরফেও ৩১ অক্টোবর এই মডিউলের প্রশিক্ষণ দেবে ফ্যামিলি ফিজিশিয়ানদেরও। শুধু তাই নয়, কোভিড থেকে সুস্থ হওয়ার পরেও অনেক রোগীর মৃ্ত্যু হচ্ছে তা আটকাতেই এবার প্রশিক্ষণ দেবে আইএমএ। আজ, বুধবার উৎসব পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে প্রধান কোভিড হাসপাতালের সুপার, ডিএমদের সঙ্গে বৈঠক করবেন স্বাস্থ্যসচিব।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement