তরুণকান্তি দাস: ঘূর্ণিঝড় আমফানে রাজ্যে মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। যত সময় এগোচ্ছে, ততই মৃত্যুর খবর আসছে। স্পষ্ট হচ্ছে বিপর্যয়ে চিত্র। তবে এখনও সবটাই প্রাথমিক রিপোর্ট। আগামী সাতদিনের আগে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট সামনে আসবে না। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত মেলা হিসেবে অনুযায়ী, বাংলায় মোট ৮৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কেউ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছেন। কারোর মাথায় আবার গাছ ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয়েছে। বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে চাষের। এমনকী, বাড়ি ভেঙে কার্যত ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে।
প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফান যে বাংলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করবে, সে আশঙ্কা আগেই ছিল। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাসই যেন সত্যি হল। বুধবারের প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগণা, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে নদিয়ারও। নিহতদের পরিবারপিছু আড়াই লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্যও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগণার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে বসবেন কাকদ্বীপে।
[আরও পড়ুন : আমফান বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে সাংসদ নুসরত, বাসিন্দাদের ‘আপনজন’ হয়ে শুনলেন সমস্যার কথা]
জানা গিয়েছে, রাজ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ২২ জন, গাছ পড়ে ২৭ জন, দেওয়াল চাপা পড়ে ২১ জন ও ছাদ ভেঙে পড়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি, জমা জলে ডুবে তিন, সাপের কামড়ে একজন, ঘর ভেঙে দু’জন এবং আতঙ্কে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ল্যাম্পপোস্ট ভেঙে পড়ে মারা গিয়েছেন আরও দুইজন। রাজ্যের তরফে মেলা পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজ্য মোট ৩৮৪টি ব্লক ও পুরসভা এলাকার ক্ষতি হয়েছে।ঝাড়ের তাণ্ডবে এখনও পর্যন্ত সাড়ে ১০ লক্ষ বাড়ির ক্ষতি হয়েছে বলে খবর। সুপার সাইক্লোনের তাণ্ডবে মোট ১ লক্ষ ৩৬ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। দুর্গতদের সহায়তায় ৫১৩৪টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। সেখানে প্রায় ছয় লক্ষ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
[আরও পড়ুন : দিল্লি থেকে ফিরেই সংক্রমণ, বর্ধমানে করোনা আক্রান্ত এক বছরের শিশু]
প্রশাসনিক হিসেব বলছে, ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুই ২৪ পরগণা। তার পর রয়েছে কলকাতা।ঝড়ের আঘাতে বিপর্যস্ত পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি এবং নদীয়া। তবে এটা প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির হিসাব। আগামী সাত দিনের আগে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পাওয়া যাবে না বলে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর সূত্রে খবর। দপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, ২১ হাজার ৫৬০ বর্গকিলোমিটার এলাকা পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত। জলে ডুবে রয়েছে ধানের জমি, মাঠের ফসল। সুপার সাইক্লোন আমফানের ধাক্কায় রাজ্যের যে বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
The post আমফানের দাপটে রাজ্যে মৃত বেড়ে ৮৬, বিপুল ক্ষতির মুখে চাষাবাদ appeared first on Sangbad Pratidin.