সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সব এক্সিট পোলের একটাই বক্তব্য, তৃতীয়বারের জন্য রাজধানীর মুখ্যমন্ত্রীর কুরসিতে বসতে চলেছেন আম আদমি পার্টি সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল(Arvind Kejriwal )। আপ শুধু ক্ষমতায় আসছে তাই নয়, কার্যত ধূলিস্যাৎ হয়ে যাচ্ছে বিজেপি-কংগ্রেসের মতো বিরোধীরা। কোনও কোনও এক্সিট পোলে বিজেপিকে সম্মানজনক জায়গায়া দেখানো হলেও, তাঁরা কেজরিকে চ্যালেঞ্জ করার মতো জায়গায় নেই। কমবেশি সবকটি এক্সিট পোলের একই বক্তব্য। অথচ, এসব সত্ত্বেও দমছে না গেরুয়া শিবির। বিজেপির এখনও দাবি, আগামী মঙ্গলবার দিল্লির মসনদ থেকে কেজরিওয়ালকে উৎখাত করে ক্ষমতায় ফিরবেন তাঁরাই।
দিল্লির বিজেপি সুপ্রিমো মনোজ তিওয়ারি, দলের বর্ষীয়ান সাংসদ মীনাক্ষী লেখি থেকে শুরু করে খোদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ বলছেন, দিল্লিতে বিজেপি সরকার গড়বে। এখন প্রশ্ন হল, বিজেপি নেতাদের এই আত্মবিশ্বাসে রহস্যটা কী? কোন জাদুমন্ত্রে দিল্লিতে ক্ষমতায় ফেরার দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা? ইঙ্গিত খানিকটা পাওয়া গিয়েছে মীনাক্ষী লেখির (Meenakshi Lekhi) কথায়। মীনাক্ষীর কথায়, বিজেপি ভোটাররা দেরিতে ভোট দিতে বেরোন। এ প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, এক্সিট পোলে মোটামুটিভাবে হিসেব করা হয় বিকেল চারটে থেকে পাঁচটা পর্যন্ত। তারপরও দিল্লিতে অনেক ভোটার ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁদের ভোটও অনেক খেলা বদলে দিতে পারে। তাছাড়া বিজেপির ভোটাররা স্বভাবতই দেরিতে ভোট দেন। লোকসভা নির্বাচনেও নাকি বিজেপির ভোটাররা বিকেল পাঁচটা-ছটার পরই ভোট দিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: গার্গী কলেজের ঘটনায় ক্ষুব্ধ কেজরিওয়াল, উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে ছাত্রী-বিক্ষোভ]
মীনাক্ষীর এই দাবি অনুযায়ী পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখলেও চমকে যেতে হয়। কমিশনের দেওয়া পরিসংখ্যান বলছে, দিল্লিতে মোট ভোটার সংখ্যা কমবেশি ১ কোটি ৪৭ লক্ষ। এঁর মধ্যে ৬২ লক্ষ ভোটার ভোট দিয়েছেন বিকেল চারটে পর্যন্ত। নির্বাচন কমিশন ভোটের পরেরদিন যে পরিসংখ্যান দিচ্ছে, সেই পরিসংখ্যান অনুযায়ী দিল্লিতে মোট ভোট পড়েছে, ৯২ লক্ষেরও বেশি। অর্থাৎ, বিকেল চারটের পর ভোটগ্রহণ শেষ হওয়া পর্যন্ত ৩০ লক্ষ মানুষ ভোট দিয়েছে। ভোট শুরুর পর প্রথম ৬ ঘণ্টায় যা ভোট পড়েছে, শেষ দু’ঘণ্টায় তার প্রায় অর্ধেক সংখ্যক মানুষ নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। বিজেপির দাবি, এই যে ৩০ লক্ষ মানুষ এক্সিট পোলের হিসেব নির্ধারণ করার পর ভোট দিলেন, এদের সিংহভাগই তাঁদের ভোটার।
[আরও পড়ুন: এবার মোদি-শাহদের ‘অস্কার’ দিল কংগ্রেস! কে কোন বিভাগে পুরস্কার পেলেন?]
এখানেই চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছে বিরোধীরা। তাঁদের প্রশ্ন, সকাল থেকে ভোটের গতি এত কম। অথচ, শেষবেলায় এত বেশি ভোট কীভাবে পড়ল? তাও যদি মেনে নেওয়া হয়, তাহলেও নির্বাচন কমিশন ভোটের চূড়ান্ত সংখ্যাটা দিত ২৪ ঘণ্টা সময় কেন নিয়ে নিল? গতকালই আম আদমি পার্টি প্রশ্নগুলি তুলেছিল। দ্বিতীয় প্রশ্নটির উত্তর কমিশন দিয়েছে। তাঁরা জানিয়েছে, দিল্লিতে এবার ভোটের হার ঘোষণার আগে তাঁরা বেশ কয়েকরকমভাবে স্ক্রুটিনি করে দেখেছেন। তাই হার ঘোষণায় দেরি হয়েছে। আপের সন্দেহ কিন্তু তাতেও যাচ্ছে না। আম আদমি পার্টি আগেই অভিযোগ জানিয়েছে, শনিবার ভোটের পর সন্দেহজনকভাবে ইভিএম নিয়ে ঘুরতে দেখা গিয়েছে কিছু ভোটকর্মীকে। গাড়িতে করে ইভিএম স্ট্রং রুমে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নিরাপত্তকর্মী ছাড়াই। সেই অভিযোগের উপর আবার যুক্ত হল শেষবেলায় ভোট দেওয়া এই ৩০ লক্ষ ভোটার। আপাতত এঁরাই রাতের ঘুম কাড়ছে আম আদমি পার্টির। আর বিজেপিকে জোগাচ্ছে আত্মবিশ্বাস।
The post দিল্লিতে শেষবেলায় ভোট পড়েছে ৩০ লক্ষ! এঁরাই কি ভরসা বিজেপির? appeared first on Sangbad Pratidin.