সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মাঠে লাগানো ছিল আরএসএসের পতাকা। তা দেখে মোটেই ভাল লাগেনি ডেপুটি চিফ প্রোক্টরের। তিনি পতাকা খুলে ফেলেছিলেন। তার শাস্তি পেতে হল বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ পদাধিকারীকে। পুলিশ তাঁকে পদত্যাগে কার্যত বাধ্য করেছে বলে অভিযোগ। ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করেছে ছাত্রছাত্রীদের একাংশ।
ঘটনার সূত্রপাত গত মঙ্গলবার। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের মির্জাপুর ক্যাম্পাসের খেলার মাঠে আরএসএস পতাকা দেখতে পান ডেপুটি চিফ প্রোক্টর কিরণ দামলে। তিনি পতাকাটি সরিয়ে দেন। আরএসএস সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা তা দেখে ক্যাম্পাসেই বিক্ষোভ শুরু করেন। ডেপুটি চিফ প্রোক্টরের পদত্যাগের দাবিও ওঠে।
[আরও পড়ুন: মহাত্মা গান্ধীর মৃত্যু হয়েছে দুর্ঘটনায়! ভুল তথ্য ছড়িয়ে বিতর্কে ওড়িশা সরকার]
ঘটনাস্থলে পুলিশ যায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য। অভিযোগ, পুলিশ কিরণে দামলের অফিসে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। এবং পড়ুয়াদের দাবিমতো তাঁকে পদ ছেড়ে দেওয়ার জন্য জোরাজোরি করতে থাকেন পুলিশ আধিকারিকরা। কিন্তু তাতে আমল দেননি প্রোক্টর। তিনি বলেন, ‘আমি ছাত্র সংগঠনের সদস্যদের বলেছিলাম, পতাকাটা ওখান থেকে সরিয়ে দিতে। কিন্তু ওরা আমার কথা শোনেনি। আমি বলেছিলাম যে এমন একটা স্পর্শকাতর সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে এই পতাকা না লাগানোই ভাল। কিন্তু ওরা তবু জোর করতে থাকে। আমি জানিয়ে যে আমি এর অনুমোদন দেব না।’ পালটা শাখা সংগঠনের এক সদস্যের এক বক্তব্য, ‘আমরা সকাল থেকে যোগা, প্রাণায়মের চর্চার জন্য ওখানে পতাকা লাগিয়েছিলাম। উনি এসে আমাদের রীতিমতো অপমান করে বলেন যে এখানে কোনও পতাকা লাগানো যাবে না।’
এই বাদানুবাদের পরই ডেপুটি চিফ প্রোক্টরের বিপদ আরও বাড়ে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে সংগঠনের পতাকা সরিয়ে ডেপুটি চিফ প্রোক্টর ধর্ম আঘাত করেছেন, আরএসএস-এর তরফে এই লিখিত অভিযোগ পাওয়ামাত্র পুলিশ কিরণ দামলের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করে। এরপরই কিরণ দামলে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের কাছে। অধ্যাপক রামদেবী নিমান্নাপল্লির কথায়, ‘ওনার ইস্তফাপত্র উপাচার্যেরা কাছে পাঠিয়েছি। তাঁর সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করা হচ্ছে। দামলে জানিয়েছেন যে তিনি বোঝেননি, আরএসএস-এর পতাকা এখানে এতটা শ্রদ্ধার ব্যাপার।’
[আরও পড়ুন: ফের ধাক্কা রেলযাত্রীদের! দূরপাল্লার ট্রেনে বাড়ছে চা ও খাবারের দাম]
বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরও কম হচ্ছে না। ঘটনার খবর পেয়ে বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের কাছে যান বিজেপি বিধায়ক রত্নাকর মিশ্র। তিনি বলেন, ‘আরএসএসের প্রতিষ্ঠাতা মদনমোহন মালব্য চেয়েছিলেন যে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্ররা এর চর্চা করুক। কিন্তু এখানে তা করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।’ অন্যদিকে, কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ ললিতপতি ত্রিপাঠির মত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আরএসএসের এমন কার্যকলাপ কাম্য নয়।
The post আরএসএসের পতাকা সরানোর ‘শাস্তি’, ইস্তফায় বাধ্য BHU-এর শীর্ষ আধিকারিক appeared first on Sangbad Pratidin.