সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সংঘর্ষ বিধ্বস্ত সাহারানপুর পরিদর্শনে গেলেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধী। গুলাম নবী আজাদ ও রাজ বব্বরকে নিয়ে শনিবার দুপুরে তিনি পৌঁছে যান সেখানে। পুলিশ বাধা দিলেও শোনেননি কংগ্রেস যুজরাজ। সাহারানপুরে পৌঁছে স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। বাচ্চাদের কোলে বসিয়ে হাসিমুখে ছবিও তোলেন। তবে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার জন্য খুব বেশিক্ষণ সংঘর্ষ বিধ্বস্ত সাহারানপুরে থাকেননি রাহুল। তবে স্থানীয়দের আশ্বাস দিয়েছেন, পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হলে প্রশাসন তাঁকে সাহারানপুরে আসার আমন্ত্রণ জানাবে। দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে আক্রান্তদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন রাহুল গান্ধী।
[সাহারানপুরে লাগু কারফিউ, স্তব্ধ মোবাইল ইন্টারনেট]
পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কংগ্রেস সহ-সভাপতি বলেন, “সাহারানপুর বা উত্তরপ্রদেশ নয়, মতো গোটা দেশেই গরিব, দলিতরা ভয়ে ভয়ে বেঁচে আছে। তাঁদের ভয় দেখিয়ে চুপ করিয়ে রেখেছে সরকার। এই সরকার শুধু বড়লোকদের হয়ে কাজ করে। এভাবে দেশ চলে না।” বিজেপি যখন কেন্দ্রে তিন বছরে বছর পূর্তিতে দেশ জুড়ে উৎসবের ডাক দিয়েছে, তখন সরকারকে কটাক্ষ করে রাহুল জানান, তিন বছর আগে মোদি ২ কোটি যুবককে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু আজ কোথায় রোজগার?” বর্তমান সরকারের জমানায় জম্মু ও কাশ্মীরে পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। কংগ্রেসই উপত্যকায় শান্তি বজায় রাখতে পেরেছিল বলেও দাবি কংগ্রেস সহ-সভাপতির।
এদিন রাহুল গান্ধীর সাহারানপুর সফরকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয় উত্তরপ্রদেশ-হরিয়ানা সীমান্তকে। মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশবাহিনী। উত্তরপ্রদেশের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) আদিত্য মিশ্র জানিয়েছিলেন, সাহারানপুরে ঢোকার আগেই আটকে দেওয়া হবে রাহুল গান্ধীকে। সংঘর্ষে আহতদের হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার কথা থাকলেও সেই অনুমতি এদিন পাননি রাহুল। পাল্টা কংগ্রেস নেতৃত্ব অভিযোগ করে, কোন অধিকারে রাহুল গান্ধীকে উত্তরপ্রদেশে ঢুকতে বাধা দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ? তিনি দলিতদের সঙ্গে কথা বলতে যাচ্ছেন বলে? এতে কি বিজেপির দলিত-বিরোধী মনোভাবই স্পষ্ট হচ্ছে না?
[কাশ্মীরে সেনার গুলিতে নিকেশ হিজবুল কমান্ডার সবজার ভাট]
সীমান্ত লাগোয়া সাহারানপুর শহর একাধিক অপ্রীতিকর ঘটনায় গত এপ্রিল মাস থেকেই উত্তেজনায় টগবগ করে ফুটছে। গত ৫ মে দলিত ও ঠাকুর সম্প্রদায়ের সদস্যদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হলে নতুন করে অশান্তি ছড়ায়। মহারাণা প্রতাপকে নিয়ে একটি ধর্মীয় মিছিলে বাধা দিলে দলিতদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়ে রাজপুতরা। ঠাকুর সম্প্রদায়ের এক সদস্য সংঘর্ষে নিহত হলে পাল্টা ৫০ জন দলিতের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ঠাকুর-দলিত সংঘর্ষে পুলিশ বাধা দিতে এলে অন্তত এক ডজন পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। গত ২৩ মে থমথমে সাহারানপুরে এক দলিত নিহত ও দু’জন আহত হলে ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুর।
[সংঘর্ষ বিধ্বস্ত সাহারানপুরে রাহুল গান্ধীকে যাওয়ার অনুমতি দিল না প্রশাসন]
দেখুন ভিডিও:
The post প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে থমথমে সাহারানপুরে রাহুল, তোপ বিজেপিকে appeared first on Sangbad Pratidin.