সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইলেক্টোরাল বন্ডের (Electoral Bond) হিসাবে প্রকাশ্যে আসতেই হইচই রাজনৈতিক মহলে। দীর্ঘ টালবাহানার পরে শীর্ষ আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়ে হিসাব প্রকাশ্যে এনেছে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। তার পর থেকেই আলোচনায় উঠে এসেছে মার্টিন স্যান্টিয়াগোর নাম। কারণ তাঁর সংস্থা ‘ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেস’ সবচেয়ে বেশি অনুদান দিয়েছে ইলেক্টোরাল বন্ডের মাধ্যমে।
১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী বন্ডকে অসাংবিধানিক বলে আখ্যা দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। এর পরই শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেয়, এসবিআইকে (SBI) ৬ মার্চের মধ্যে নির্বাচনী বন্ডের যাবতীয় তথ্য তুলে দিতে হবে জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে। এর পর সেই তথ্য জনসমক্ষে আনবে কমিশন (Election Commission)। কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমার মাত্র ২ দিন আগে ৪ মার্চ সুপ্রিম কোর্টে এসবিআই জানায়, ওই সময়সীমার মধ্যে বন্ডের তথ্য দেওয়া সম্ভব নয় তাদের পক্ষে। বরং ওই তথ্য জমা দিতে আরও সময় চাই। শীর্ষ আদালতের তোপের মুখে পড়ে সময়সীমা শেষ হওয়ার একদিন আগেই নিজেদের ওয়েবসাইটে তথ্য প্রকাশ করেছে কমিশন।
[আরও পড়ুন: নাবালিকাকে যৌন হেনস্তার অভিযোগ, কাঠগড়ায় কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা]
সেই তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি মূল্যের ইলেক্টোরাল বন্ড কিনেছে লটারি কিং মার্টিন স্যান্টিয়াগোর (Martin Santiago) সংস্থা। তার পরেই আলোচনায় উঠে এসেছে স্যান্টিয়াগোর নাম। কীভাবে ভারতের লটারি কিং হয়ে উঠলেন স্যান্টিয়াগো? জানা যায়, ১৯৮৮ সালে ১৩ বছর বয়সে মায়ানমার থেকে ভারতে এসে তামিলনাড়ুতে লটারির ব্যবসা শুরু করেছিলেন স্যান্টিয়াগো। ধীরে ধীরে কর্নাটক থেকে পাঞ্জাব পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে তাঁর ব্যবসা। পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে বিলাসবহুল জীবনযাপনও। তার মধ্যেই অভিযোগ ওঠে, সিকিম সরকারের থেকে ৪৫০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি।
রাজনীতির সঙ্গে স্যান্টিয়াগোর নাম জড়ায় কেরল থেকে। সেরাজ্যে সিপিএম মুখপাত্রকে দুই কোটি টাকা দিয়েছিলেন লটারি কিং। ডিএমকের সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল। কিন্তু বেআইনিভাবে জমি দখলের অভিযোগ ওঠে স্যান্টিয়াগোর বিরুদ্ধে। একাধিকবার তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তও হয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একই নির্বাচনী মঞ্চে দেখা যায় স্যান্টিয়াগোর স্ত্রী লিমা রোজকে। তার পর থেকেই লটারির গণ্ডি পেরিয়ে একাধিক ব্যবসা শুরু করেন স্যান্টিয়াগো। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে তল্লাশির সংখ্যাও বেড়েছে। গত বছর মে মাসেই তাঁর ৪৫৭ কোটির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। তা সত্ত্বেও নির্বাচনী বন্ড কেনার ক্ষেত্রে সকলের উপরে রয়েছে তাঁর নাম।