সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সন্দেশখালিতে (Sandeshkhali) উত্তাপের আঁচ যেন কিছুতেই নিভছে না। প্রতিদিনই প্রায় নতুন নতুন ইস্যুতে অশান্তি ছড়াচ্ছে একাধিক এলাকায়। শুক্রবারও বেড়মজুর এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভ ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি এতটাই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে যে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় বসিরহাটের (Basirhat)বিশাল পুলিশ বাহিনী। উপস্থিত হন পুলিশ সুপার নিজে। পরে সেখানে যান এডিজি, দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার, ডিজি রাজীব কুমার (Rajeev Kumar)। বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন রাজীব কুমার স্পষ্ট জানান, আইন যেন কেউ নিজের হাতে না নেয়। যারা অন্যায় করছে, তাদের খুঁজে শাস্তি দেবে পুলিশ। এনিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অশান্ত সন্দেশখালিতে যেতে হল স্বয়ং ডিজিকে। অশান্তির জেরে বেড়মজুর এলাকায় নতুন করে জারি হল ১৪৪ ধারা।
[আরও পড়ুন: ‘এমন সত্যি যা শিহরিত করে’, সন্দেশখালির নির্যাতিতাদের নিয়ে তথ্যচিত্র প্রকাশ বিজেপির]
সন্দেশখালির বেড়মজুর এলাকা সকাল থেকেই উত্তপ্ত। কাছারিপাড়া এলাকার বাসিন্দারা লাঠি, ঝাঁটা হাতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন। বেড়মজুর ১-এর এই এলাকায় আলাঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, শেখ শাহজাহানের ভাই সিরাজ শেখ ও তাঁর লোকজন নিজেরাই আলাঘরে আগুন দিয়ে দোষ চাপাচ্ছে সাধারণ বাসিন্দাদের উপর। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ চলছে। তাঁরা আরও বলেন, ”আমাদের কয়েকশো বিঘা সম্পত্তি দখল করে খাচ্ছে ওরা, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সম্পত্তি ফেরত দিচ্ছে না। পাশাপাশি লিজের টাকাও দিচ্ছে না। সরকারি কোনও সাহায্য আমরা পাই না। যার কারণে আমরা আজ রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি।” স্থানীয় তৃণমূল নেতা অজিত মাইতির বাড়িতেও হামলা চলে। অগ্নিসংযোগ করে দেওয়া হয়। এর আগে জলুয়াখালি এলাকায় শিবু হাজরার পোলট্রিতেও আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল উত্তেজিত জনতা।
এই বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে যায়। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে বার বার আশ্বাস দেন যে পুলিশ সবদিক নজরে রাখছে। কেউ অন্যায় করলে শাস্তি হবেই। এলাকায় শান্তি বজায় রাখার আবেদন করা হয় স্থানীয়দের কাছে। তবে পুলিশের আশ্বাসে বিক্ষোভের আঁচ কমেনি। শেষে বেড়মজুরে যান এডিজি, দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার ও ডিজি রাজীব কুমার। এডিজি বলেন, ‘‘টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য প্রশাসনের শিবির বসেছে। জেলাশাসক রয়েছেন। তাঁরা আপনাদের সব অভিযোগ খতিয়ে দেখবেন। কিন্তু এভাবে বিক্ষোভ দেখাতে থাকলে গোটা প্রক্রিয়ায় দেরি হবে। আপনারা শান্ত হোন।’’
[আরও পড়ুন: ‘ডাকলেই যাবে কেন?’, গভীর রাতে মিটিং নিয়ে মহিলাদেরই তোপ সন্দেশখালির তৃণমূল নেত্রীর]
বুধবার রাতভর সন্দেশখালি থেকে পরিস্থিতি পরিদর্শনের পর শুক্রবার সকালে কলকাতায় ফিরেছিলেন রাজীব কুমার। ফের শুক্রবার তিনি বেড়মজুরের অশান্ত এলাকায় যান। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, ‘‘এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেছি। ওঁদের বুঝিয়েছি যে আপনাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব আমাদের। কোনও অন্যায় কেউ করলে তার শাস্তি হবেই। কিন্তু আপনারা হাতে আইন তুলে নেবেন না।”
দেখুন ভিডিও: