রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ভাইফোঁটা নিতে শোভন চট্টোপাধ্যায় যাওয়ায় অস্বস্তি বাড়ছে বিজেপির। মুখে যতই সৌজন্য বিনিময় বলুক না কেন, বিষয়টিকে মোটেও হালকাভাবে দেখছে না গেরুয়া শিবির এমনটাই খবর। বুধবার রাজ্য বিজেপির সভাপতিকে এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, ‘কার কাছ থেকে ভাইফোঁটা নেবে সেটা পার্টি ঠিক করবে না কি? এধরনের রাজনীতি আমরা করি না।’ এরপরেই কিছুটা রুষ্ট হয়ে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কথা বলুন। কারও ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কথা বলব না। আমি যদি এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে যাই সৌজন্য বিনিময় করতে তাহলে কী হবে।’
প্রসঙ্গত, একসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত স্নেহভাজন ছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। প্রতিবছরই ভাইফোঁটায় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ফোঁটা পান শোভন। ব্যতিক্রম ছিল গতবছর। রাজনৈতিক দূরত্বের কারণেই গতবছর মমতার বাড়িতে ভাইফোঁটায় উপস্থিত ছিলেন না শোভন। যদিও, তখনও শোভনবাবু তৃণমূলেই ছিলেন। মন্ত্রিত্ব তথা মেয়র পদও ছাড়েননি। বছর ঘুরতেই দেখা গেল উলটো ছবি। মঙ্গলবার বৈরিতা ভুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে ফোঁটা নিতে হাজির হন প্রাক্তন মেয়র। সঙ্গে ছিলেন তাঁর বন্ধু তথা অধ্যাপিকা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। সেসময় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে উপস্থিত অনেকেই অবাক হয়ে যান তাঁদের দেখে। প্রিয় ‘কানন’কে অবশ্য নিরাশ করেননি মমতা। তাঁকে যথাযথ রীতি মেনেই ফোঁটা দিয়েছেন ‘দিদি’।
শোভন-বৈশাখীর এই কাজে যারপরনাই বিস্মিত বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। তবে সংবাদমাধ্যমের সামনে তা প্রকাশ করতে নারাজ রাজ্য নেতৃত্ব। তাই এদিন বারবার একই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে কিছুটা বিরক্ত হয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘কার কাছ থেকে ভাইফোঁটা নেবে সেটা পার্টি ঠিক করবে না কি? এধরনের রাজনীতি আমরা করি না।’ এরপর তিনি আরও বলেন, ‘শোভন চট্টোপাধ্যায় আমাদের একজন সাধারণ কর্মী। শোভনবাবু কাঁচা লোক নন। বহু বছর ধরে রাজনীতি করছেন। উনি জানেন কী করতে হয়।’
[আরও পড়ুন: ভাইফোঁটা দেওয়ার ফাঁকে শোভনকে সুগার নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ মমতার]
উল্লেখ্য, উল্লেখ্য, গত ১৪ অগস্ট তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শোভনবাবু। দিল্লির বিজেপি সদর দপ্তরে গিয়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখান তিনি। সেখানেও সঙ্গে ছিলেন বৈশাখীদেবী। কিন্তু, রাজ্য বিজেপির নেতাদের সঙ্গে খুব একটা বনিবনা হয়নি শোভন-বৈশাখীর। বেশ কয়েকটি ইস্যুতে মতানৈক্য হয় তাঁদের। সেভাবে রাজ্য বিজেপির কোনও কর্মসূচিতেও দেখা যায়নি শোভনবাবুকে। এদিকে, বিজয়ার পর শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে যান বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনই জল্পনা ছড়িয়েছিল, বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব বাড়ার পাশাপাশি তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব কমছে শোভন-বৈশাখীর। এরপর মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে শোভনবাবুর ফোঁটা নিতে যাওয়া, সেই জল্পনা আরও উসকে দিল।
দিলীপ ঘোষ কী বললেন, দেখুন ভিডিও-
The post ‘ব্যক্তিগত বিষয়ে কথা বলব না’, শোভনের ভাইফোঁটা প্রসঙ্গে মন্তব্য দিলীপের appeared first on Sangbad Pratidin.