রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: গেরুয়া শিবিরের গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে রাজ্য কমিটির বৈঠকে সুকান্ত মজুমদারের তত্ত্ব উড়িয়ে দিলেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। যার জেরে তাঁদের অন্তর্দ্বন্দ্ব ফের প্রকাশ্যে এল। বুধবার রাজ্য বিজেপির বিশেষ অধিবেশনে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) বলেছিলেন, ”বিজেপি দলে বড় সমস্যা হল, কেউ উপরে উঠতে গেলে তাকে পা ধরে নিচে নামিয়ে দেওয়া হয়।” বঙ্গ বিজেপিতে (BJP) গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে খোদ রাজ্য সভাপতির এই বিস্ফোরক মন্তব্যের পরই আলোড়ন পড়ে যায় দলের অন্দরে। গুঞ্জন শুরু হয়ে যায়। সুকান্তর নিশানায় ঠিক কারা, তা নিয়েও চর্চা চলছে দলের মধ্যে।
এরই মাঝে সুকান্তর মন্তব্য নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রশ্ন করা হয় প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। জবাবে তাঁর বক্তব্য, ‘‘জানি না উনি (সুকান্ত) কোন পরিপ্রেক্ষিতে একথা বলেছেন। বিজেপিই একমাত্র পার্টি যেখানে বুথ থেকে সর্বভারতীয় সভাপতি হন। অমিত শাহ, জে পি নাড্ডা, নীতীন গড়কড়িরা নিচু থেকে উঠে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছেন এবং সফলতার সঙ্গে কাজ করছেন।’’ এর পরই সুকান্তর তত্ত্ব কার্যত খারিজ করে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘যার যোগ্যতা আছে, সেটাকে পূর্ণ বিকশিত হওয়ার আর কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয় বিজেপিতেই। উনি (সুকান্ত) কী বলতে চেয়েছেন আমার জানা নেই।’’
[আরও পড়ুন: ফাঁসি রদ কাতারে বন্দি ৮ ভারতীয় প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীর!]
উল্লেখ্য, সুকান্ত রাজ্য সভাপতি হওয়ার পর বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর সঙ্গে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মতানৈক্য প্রকাশ্যে এসেছিল। আবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) সঙ্গে সুকান্তর ঠান্ডা লড়াইয়ের কথা দলের সকলেই জানে। কাজেই সুকান্তর ওই মন্তব্যে নিশানায় শুভেন্দু নাকি দিলীপ, তা নিয়েও চর্চা চলছে গেরুয়া শিবিরে।
[আরও পড়ুন: আর্থিক প্রতারণা মামলায় ইডির চার্জশিটে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর নাম! লোকসভার আগে মাথায় হাত কংগ্রেসের]
এদিকে, বুধবার আইসিসিআরে দলীয় বৈঠকে সুকান্ত মজুমদারের আরেকটি বক্তব্য নিয়েও দলের আদি নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন। সুকান্তর দাবি, উনিশের ভোটে বিজেপির সাফল্য এসেছিল। তখন বুথ কমিটি এখনকার মতো শক্তিশালী ছিল না। এখন বুথে আরও বেশি শক্তিশালী হয়েছে বিজেপি। এটা নিয়ে আদি বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, উনিশের লোকসভা ভোটে দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে বাংলায় ১৮টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। নজরকাড়া ফল করেছিল। তার পর দলের সংগঠনের অবস্থা খারাপ হয়েছে। নির্বাচনে সাফল্য আসেনি। অথচ দিলীপ ঘোষের সেই জমানার সাফল্যকে লঘু করে দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে।