নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: বঙ্গ বিজেপির বর্তমান ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghosh) ব্রাত্য করে রাখতে চাইলেও পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁর উপরেই ভরসা করতে চাইছেন রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা। তাই বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, পঞ্চায়েত ভোটে দিলীপকে কাজে লাগাতে হবে।
সদ্য রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক সুনীল বনশল থেকে শুরু করে সতীশ ধনদ, মঙ্গল পান্ডেরা টানা কয়েকদিন ধরে বাংলায় গিয়ে একাধিক বৈঠক করেছেন। রাজ্যের বেশ কিছু জায়গা ঘুরেও দেখেছেন কয়েকজন। তারপরেই তাঁদের উপলব্ধি, পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপিকে ভাল ফল করতে হলে দিলীপকে কাজে লাগাতেই হবে। সেইমতোই দিলীপকে তো বটেই, একই সঙ্গে বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীকেও বার্তা দিয়েছেন বনশলরা। তাতে ঠিক হয়েছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য দীপাবলির পর থেকেই বাংলার বিজেপির নেতারা জেলা সফর শুরু করবেন। প্রধান যে তিনজন নেতা জেলা সফর করবেন, তাতে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে রয়েছে দিলীপের নামও।
[আরও পড়ুন: ভূত চতুর্দশীর রাতে ফ্ল্যাটে প্রদীপ জ্বালাতে গিয়ে অঘটন! আগুনে পুড়ে প্রাণ গেল বৃদ্ধার]
দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের সিদ্ধান্ত পছন্দ না হলেও ঢোঁক গিলতে হয়েছে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীকে। তাঁদের অনেকের মুখেই এখন উলটো সুর। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর এক নেতার বক্তব্য, “বাংলার গ্রামে-গঞ্জে বিজেপি নেতা হিসেবে দিলীপের জনপ্রিয়তা রয়েছে। সেকথা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর সেই জনপ্রিয়তাকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কাজে লাগানো হবে। আর উনি দলের পুরনো নেতা, রাজ্যের নানা জায়গায় ঘুরেছেন, অভিজ্ঞতাও বিস্তর।”
বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর সঙ্গে দিলীপ ঘোষের সমীকরণ যে কেমন, সেকথা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। দিলীপের নিজের মতো করে কাজকর্ম থেকে শুরু করে সংবাদমাধ্যমের সামনে তাঁর মুখ খোলা, সব বিষয়েই বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর আপত্তি রয়েছে। সেই জল গড়িয়েছে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা পর্যন্ত।
মাসখানেক আগেই দিলীপকে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খোলা থেকে বিরত থাকার নির্দেশও জারি হয়েছিল। সেই চিঠির কপি ভাইরাল হওয়ার পিছনেও লম্বা কাহিনি রয়েছে। চাপের মুখে দিলীপকে মেনে নিলেও তাই বিষয়টি ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর পছন্দ হয়নি। ওই নেতার কথায়, “উনি যেভাবে সংবাদমাধ্যমের সামনে নানা বিষয়ে মন্তব্য করেন, তা শহরের শিক্ষিত মানুষ মেনে নিতে পারে না। পরিসংখ্যান দেখলে বুঝতে পারবেন, বিশ্ববিদ্যালয় ভোট বা কলকাতা, শহরাঞ্চলে বিজেপির ভোট পাওয়ার ক্ষেত্রে তার প্রভাব পড়েছে।”