পারমিতা পাল: ওই একরত্তির পৃথিবীর রং সবুজ-মেরুন। ৮ বছরের রাজঋষি বাবুর স্বপ্নের নায়ক মোহনবাগান তারকা দিমিত্রি পেত্রাতোস (Dimitri Petratos)। অবশেষে স্বপ্ন ছুঁয়ে ফেলল ক্লাস টুর ছাত্র রাজঋষি।। স্বপ্ন ছুঁয়ে ফেলল বলল বলাটা কি ঠিক হল? বলা ভাল, স্বপ্ন ধরা দিয়ে গেল।
বুধবার পেত্রাতোসের ৯ নম্বর জার্সি বাগুইআটির কালিকা আবাসনের খুদে মোহনবাগান সমর্থকের হাতে তুলে দিল মেরিনার্স ডি হার্টসের সদস্যরা। এই জার্সি পরেই শনি সন্ধেয় ডার্বি খেলেছিলেন পেত্রাতোস। সেই জার্সি হাতে নিয়ে ঘোরের মধ্যে রাজঋষি। আত্মহারা একরত্তি। শনিবারের ডার্বির পর থেকেই সোশাল মিডিয়া জুড়ে কেবল রাজঋষি আর রাজঋষি। পেত্রাতোস সমতা ফেরানোর পরে নিজেকে আর স্থির রাখতে পারেনি ছেলেটি।
[আরও পড়ুন: চোট আঘাতের সমস্যা মোহনবাগানে, হায়দরাবাদ ম্যাচে ঝুঁকি নিতে চান না হাবাস]
“গো-ও-ল, ইসকা নাম হ্যায় মোহনবাগান, ইসকা নাম হ্যায় মোহনবাগান, জয় মা গুরু। জয় মা কালী” বলে আনন্দে উদ্বেল হয়ে উঠেছিল সে। সেই ভিডিও এখন ভাইরাল। মোহনবাগান ভক্তদের প্রাণভোমরা দিমিত্রি পেত্রাতোসও দেখেছেন ছোট্ট ছেলেটির আবেগপ্রবণ সেই উচ্ছ্বাস। ভিডিওটি দেখার পর থেকে আবেগে ভাসছেন দিমিত্রিও। সুদূর অস্ট্রেলিয়ার এক তারকার জন্য এক খুদের মন প্রাণ সঁপে দেওয়ার মুহূর্ত ছুঁয়ে যাচ্ছে সবুজ-মেরুনের প্রাণভোমরাকেও। ইনস্টা স্টোরিতে ছোট্ট রাজঋষির ছবি শেয়ার করেছেন মুগ্ধ দিমিত্রিও।
পেত্রাতোসের কাছ থেকে জার্সি নিয়ে এদিন মেরিনার্স ডি হার্টসের সদস্যরা পৌঁছে গিয়েছিলেন রাজঋষির বাড়িতে। তার হাতে তুলে দেন অজি তারকার জার্সিটি। মোহনবাগান ফ্যান ক্লাবের সদস্য রাহুল ঘোষ সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে বলছিলেন, ”আমার সঙ্গে দিমিত্রি পেত্রাতোসের কথা হয়েছে। দিমি ওর জার্সিটা পাঠিয়েছে রাজঋষির জন্য। মোহনবাগানের অনুশীলনেও ওকে নিয়ে যেতে বলেছে পেত্রাতোস। অনুশীলনে গিয়ে মোহনবাগান ফুটবলারদের সঙ্গে পরিচিত হবে রাজঋষি।” ২৭ তারিখ পর্যন্ত রাজঋষির পরীক্ষা। পরের দিন মেরিনার্স ডি হার্টের সদস্যরাই রাজঋষিকে নিয়ে যাবেন সবুজ-মেরুনের অনুশীলনে।
১০ মার্চ আইএসএলের ফিরতি ডার্বি। সেই মহাম্যাচ মেরিনার্স ডি হার্টসের সদস্যদের সঙ্গে গ্যালারিতে বসে দেখবে রাজঋষি। পেত্রাতোসের দেওয়া জার্সি পরে কি খেলা দেখতে যাবে মোহনবাগানের একরত্তি সমর্থক? তার কাকা প্রকাশ বাবু বললেন, ”সাইজে এই জার্সি অনেক বড় হবে। তবে জার্সিটা যে ওর সঙ্গে থাকবে, তা এখনই বলে দিলাম।”
ফুটবল মিলিয়ে দেয়, কাছে টেনে নেয়। পেত্রাতোসের দুরন্ত গোল এবং একরত্তির উচ্ছ্বাসের বিস্ফোরণ এক রূপকথারও জন্ম দিয়ে গেল। রাজঋষির প্রতি পেত্রাতোসের হৃদয় উজাড় করে দেওয়া এই আবেগ প্রমাণ করে, স্নেহে ধাবিত হয় শিশুকিশোরদের দিকে।