কৃষ্ণকুমার দাস: প্রায় ৫০ মিটার দীর্ঘ উড়ালপথের অংশ ভাঙার মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে পোস্তার অভিশপ্ত বিবেকানন্দ ফ্লাইওভার (Vivekananda Flyover) সরিয়ে ফেলার কাজ। সোমবার ‘পোস্তা (Posta) ক্রসিং থেকে নবাব লেন’ পর্যন্ত অংশ ভাঙার কাজ শুরু হওয়ার কথা। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ নির্মীয়মাণ পোস্ত উড়ালপুল ভেঙে ২৮ জন মারা যান।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার স্বার্থে বিপর্যস্ত সেতু ভাঙার কাজ যাতে নবান্ন বা সল্টলেকের কেএমডিএ দপ্তর থেকেও নজরদারি করা যায় সেজন্য একটি বিশেষ অ্যাপ চালু করছে পুর ও নগরায়ন দপ্তর।
শনিবার সেতু ভাঙার প্রস্তুতি সরেজমিনে পরিদর্শন করে পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান, “সবার আগে সাধারণ মানুষের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা। তাই ভাঙা শুরুর আগে সমস্ত সুরক্ষা বিধি মজবুত করে নিচ্ছে কেএমডিএ। বস্তুত এই কারণেই সেতুর চারপাশ ও নিচের অংশ সিসিটিভিতে মুড়ে দেওয়া হয়েছে। অ্যাপের মাধ্যমে ওই সিসিটিভির ফুটেজ আমাদের সবার মোবাইলে পৌঁছে যাচ্ছে।” নবান্নে মুখ্যসচিব থেকে শুরু করে রাইটস, কেএমডিএ-সহ স্বয়ং পুরমন্ত্রী ২৪ ঘণ্টাই অ্যাপের মাধ্যমে পোস্তার সেতু ভাঙার কাজে নজরদারি করতে পারবেন।
[আরও পড়ুন: মাতৃহারা হলেন মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, শোকপ্রকাশ রাজ্যপালের]
প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপেক্ষা করেই টানা চারদিন ধরে ভারী বৃষ্টির মধ্যেও বিপর্যস্ত সেতুটি ভাঙার প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছেন কেএমডিএ’র ইঞ্জিনিয়াররা। সঙ্গে রয়েছেন রাইটসের বিশেষজ্ঞরা। ইতিমধ্যে সেতুর নিচে গাড়ি চলাচল বন্ধের পাশাপাশি ট্র্যাফিক রুট পরিবর্তন করে ক্রেন ও ভারী মেশিন বসানো হয়ে গিয়েছে। বেশ কিছু অংশে লেজার দিয়ে ‘টি’ আকৃতির ইস্পাতের বিম কাটা হতে পারে। কারণ, এই পদ্ধতিতে শব্দ অনেক কম হয়।
এদিন বৃষ্টির মধ্যেই পোস্তায় হাজির হয়েছিলেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কেএমডিএ’র সিইও অন্তরা আচার্য ও শীর্ষ ইঞ্জিনিয়াররা। সেতু ভাঙার আগে এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা ও শব্দদূষণ রোধে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা খতিয়ে দেখেন মন্ত্রী। পরে চন্দ্রিমা জানান, “লাগাতার বৃষ্টির মধ্যেও ২৪ ঘণ্টাই অতি সতর্কতার সঙ্গে কাজ করছেন রাইটস ও কেএমডিএ’র অফিসার ও ইঞ্জিনিয়াররা।”
[আরও পড়ুন: বামেদের সঙ্গে জোট নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত কংগ্রেস! প্রদেশের বৈঠকে তুমুল বিতর্ক]
মোট চারটি ধাপে বিপর্যস্ত সেতুটি ভাঙা হবে। তবে প্রথম ধাপে অভিশপ্ত সেতুর ১৮২ মিটার অংশ ভাঙতে ৪৫ দিন সময় ধার্য হয়েছে। পুরো সেতুটি ভাঙা ও ভগ্নস্তূপ অপসারণে কেএমডিএ’র খরচ পড়বে ১৬ কোটি টাকা।