সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কর্নাটক কংগ্রেসের ‘প্রধান ত্রাতা’ ডি কে শিবকুমারের শেষরক্ষা হল না। মঙ্গলবার তাঁকে গ্রেপ্তার করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। কয়েক কোটি টাকা কর ফাঁকি ও অবৈধ লেনদেনের অভিযোগে গত বছর সেপ্টেম্বরে শিবকুমার ও আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত করছে ইডি।
[আরও পড়ুন: আর কোনও প্রশ্ন নেই, তবুও দু’দিনের জন্য সিবিআইয়ের ‘অতিথি’ চিদম্বরম]
গত সপ্তাহেই শিবকুমারকে দিল্লিতে ইডির সদর দপ্তরে তলব করা হয়। কিন্তু গ্রেপ্তারির আশঙ্কায় তিনি আগাম জামিনের আবেদন করেন কর্ণাটক হাই কোর্টে। সেই আবেদন খারিজ হলেও পরের দিন দিল্লি পৌঁছে ইডি দপ্তরে যান শিবকুমার। সেখানে তাঁকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। আগেই অবশ্য তিনি যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, রাজ্যে সরকার বদলের পর ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি’ চলছে। ইডি সূত্রের খবর, বুধবার আদালতে পেশ করে হেফাজতে চাওয়া হবে শিবকুমারকে।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার ইডি দপ্তরে শিবকুমারকে চতুর্থ দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু, দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদেও তদন্তকারীরা সন্তোষজনক উত্তর না পাওয়ায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে। তাঁকে অবৈধ আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধ আইনে (পিএমএলএ) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইডি তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়।
গ্রেফতারির পর শিবকুমারের টুইটার হ্যান্ডেলে পোস্ট করা হয়েছে, “আমাকে শেষপর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারার জন্য আমার বিজেপি বন্ধুদের অভিনন্দন।” গত সেপ্টেম্বরেই শিবকুমার এবং দিল্লির কর্ণাটক ভবনের এক কর্মীর বিরুদ্ধে অর্থ তছরুপের অভিযোগ এনে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করে ইডি। গত বিধানসভা নির্বাচনের পর প্রথমে সর্বাধিক আসন পেয়ে বিজেপি সরকার গড়ে ফেললেও, পরে কংগ্রেস ও জেডিএস মিলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা সেই সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানায়। বিধানসভায় আস্থা পরীক্ষার আগেই মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা সরকার ভেঙে দেন। নতুন সরকার করে কংগ্রেস-জেডিএস জোট সরকার গড়ে। সেই জোট ও সরকার গঠনে যিনি মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন, তাঁর নাম ডি কে শিবকুমার।
[আরও পড়ুন: পুরনো অভ্যাস! বিজেপি দপ্তরকে তৃণমূল ভবন বলে বসলেন মুকুল]
গত সপ্তাহে ইডির ডাকে দিল্লি রওনা হওয়ার আগে কংগ্রেসের প্রাক্তন মন্ত্রী শিবকুমার বলেছিলেন, “আমার মহান বন্ধু মুখ্যমন্ত্রী (বিএস) ইয়েদুরাপ্পা বিধানসভায় বলেছিলেন তিনি প্রতিহিংসার রাজনীতি করবেন না। কিন্তু তিনি ক্ষমতায় আসতেই প্রতিহিংসার বীজ দেখা যাচ্ছে।” তবে দলের সতীর্থদের প্রতি তিনি বার্তা দিয়ে বলেন, “চিন্তা করবেন না, আমি চিন্তা করছি না। উদ্বেগের কোনও কারণ নেই। আমি কোনও ভুল করিনি। আমি ধর্ষণ করিনি বা কারও কাছে টাকা নিইনি। আমার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই।” এদিকে কংগ্রেস নেতার গ্রেপ্তারিতে দুঃখপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদ্দুরাপ্পা। তিনি বলছেন, “ওঁর জন্য খারাপ লাগছে। আমি জীবনে কখনও কারও খারাপ চাইনি। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, ও যাতে সবকিছু থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। ও ছাড়া পেলে আমার থেকে খুশি কেউ হবে না।”
The post প্রতিহিংসার রাজনীতি? আর্থিক প্রতারণার দায়ে গ্রেপ্তার কর্ণাটকে কংগ্রেসের ‘ত্রাতা’ appeared first on Sangbad Pratidin.