শুভঙ্কর বসু: এ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে (West Bengal Assembly Elections) প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষ ভোট দিয়েছেন। তাদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত কতজন? সাকুল্যে একজন! অবাক হলেও কিছু করার নেই। কারণ, নির্বাচন কমিশনের রেকর্ড অন্তত এমনই বলছে। তাঁদের খাতায় লেখা, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে রাজ্য তোলপাড় হয়ে গেলেও সাড়ে তিন কোটি মানুষের মধ্যে আক্রান্ত ছিলেন মাত্র এক জন!
এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে, চারদিকে রোজ যে হাজার হাজার লোক কোভিডের খপ্পরে পড়ছেন, তাদের একজনও ভোট দিতে যাননি? নির্বাচন কমিশনের (Election Commssion) নতুন নিয়মে আক্রান্তরাও হাসপাতাল থেকে ভোট দানের সুযোগ পাবেন, পাশাপাশি প্রয়োজনে গৃহবন্দি রোগীর বাড়িতে এসে ভোট নিয়ে যাবে কমিশন। তাদের রেকর্ডে এমন কারও নামও না থাকায় সংশয় আরও জোরদার। তাহলে কি কোভিড আক্রান্তরা ভোটই দিচ্ছেন না? রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর ও সিইও অফিস সূত্রে খবর, গত চার দফায় এখনও কোনও করোনা আক্রান্ত হাসপাতাল বা হোম আইসোলেশন থেকে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেননি।
[আরও পড়ুন: মমতার উসকানিতেই শীতলকুচি কাণ্ড! তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে FIR, উঠল গ্রেপ্তারের দাবি]
জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত তৃতীয় দফায় দক্ষিণ ২৪ পরগনায় (South 24 Parganas) মাত্র একজন কোভিড আক্রান্ত ভোটার ভোট দিয়েছেন। বাসন্তী বিধানসভায় কালীডাঙা ফ্রি প্রাইমারি স্কুলে পিপিই কিট পরে আক্রান্ত ওই ভোটার ভোট দেন। এরপর চতুর্থ দফাতেও কোনও কোভিড আক্রান্ত বা সন্দেহজনক ভোটারের ভোট দেওয়ার তথ্য কমিশনের কাছে নেই। অথচ এই চার দফায় গড়ে ৮০ শতাংশ ভোট পড়েছে রাজ্যে।
মূলত কোভিড ভোটাদের কথা মাথায় রেখেই প্রতিটি জেলায় এবার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত একজন নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। কোভিড আক্রান্ত ভোটার স্বাস্থ্যদপ্তরের মাধ্যমে আবেদন জানালেই হাসপাতাল, সেফ হোম বা বাড়িতে এসে কমিশনের তাদের ভোট দিতে নিয়ে যাওয়ার কথা। এছাড়াও কোভিডের কারণেই ভোটদানের সময় বৃদ্ধি করে সাড়ে ছ’টা করেছিল কমিশন। ভোটকেন্দ্রে থার্মাল গান, এক হাতের গ্লাভস থেকে শুরু করে যাবতীয় ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। সেসব সত্ত্বেও এখনও মাত্র এক করোনা রোগী ভোটমুখী হয়েছেন। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক দফতরের এক কর্তার কথায়, “গত কয়েক দিনে ফের রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে করোনা। কমিশন আগে থেকেই যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। আগামী দফাগুলিতেও তা কঠোরভাবে জারি থাকবে।”