সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লির বাটরা হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে এক করোনা (Coronavirus) আক্রান্ত চিকিৎসকের মর্মান্তিক মৃত্যুর পরে এবার আত্মহত্যা (Suicide) করলেন রাজধানীরই আরেক চিকিৎসক। সেখানকার এক কোভিড (COVID-19) হাসপাতালের রেসিডেন্ট ডাক্তার হিসেবে কর্মরত ছিলেন মৃত ড. বিবেক রাই। অবসাদের কারণেই তিনি বেছে নিয়েছেন এই চরম পথ। এমনটাই জানিয়েছেন ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’-এর ড. রবি ওয়াংখেড়েকার।
তাঁর কথায়, ‘‘উনি ছিলেন একজন অসামান্য চিকিৎসক। অতিমারীর সময়ে শয়ে শয়ে মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছেন তিনি।’’ কিন্তু এরপরও কেন নিজের জীবনকে শেষ করে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নিলেন ড. বিবেক রাই? ড. ওয়াংখেড়েকার জানাচ্ছেন, চোখের সামনে এত মানুষের মৃত্যু দেখতে দেখতেই ক্রমশ অবসাদে ডুবে যাচ্ছিলেন বিবেক। শেষ পর্যন্ত আর সেই অবসাদ কাটিয়ে ওঠা হল না তাঁর।
[আরও পড়ুন: করোনা সংকটেও নয়া নজির, এপ্রিলে জিএসটি বাবদ রেকর্ড আয় কেন্দ্রের]
ড. ওয়াংখেড়েকার জানিয়েছেন, গত মাস খানেক ধরে কেবল কোভিড রোগীদেরই চিকিৎসা করছিলেন বিবেক। সম্প্রতি দৈনিক সাত থেকে আট জন গুরুতর অসুস্থ কোভিড রোগীর চিকিৎসা করতে হচ্ছিল তাঁকে। চোখের সামনে দেখছিলেন কীভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। সেই প্রসঙ্গে ড. ওয়াংখেড়েকারের বক্তব্য, ‘‘এমন পরিস্থিতি আর সহ্য করতে না পেরে উনি নিজের জীবনকে শেষ করে দিলেন। এই মানসিক চাপ আর আবেগের অত্যাচার তিনি আর নিতে পারছিলেন না।’’
এরপরই তিনি অভিযোগ তোলেন ‘সিস্টেমের’ দিকে। তাঁর মতে এমন তরুণ এক চিকিৎসকের এহেন মর্মান্তিক পরিণতি আসলে এক হত্যাকাণ্ড। যেভাবে অক্সিজেন-সহ চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতির মধ্যে চিকিৎসা করতে হচ্ছিল তা বিবেকের মনের ভিতরে আরও অবসাদ তৈরি করছিল। ড. ওয়াংখেড়েকারের কথায়, ‘‘এটা ‘খুন’ ছাড়া আর কিছু নয়।’’
বিবেক রেখে গেলেন তাঁর স্ত্রীকে। যিনি ২ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। দক্ষিণ দিল্লির মালব্য নগর থানার পুলিশ জানিয়েছে, বিবেক একটি সুইসাইড নোট রেখে গিয়েছেন। তাঁর দেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।