সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রোগের লক্ষণ দেখে মনে হচ্ছে ক্যানসার? নিশ্চিত হতে চান? জানতে চান রোগ শরীরের কোন কোন অঙ্গে ছড়িয়ে পড়েছে? বায়োপসি বা অন্য কোনও পরীক্ষার করার দরকার নেই। যদি বা করেন, সেই রিপোর্টকে নির্ভুল ভাবার কারণ নেই। কারণ, রোগ শনাক্তকরণের জন্য শেষ কথা বলতে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে জ্যোতিষশাস্ত্রকে। না কোনও ব্যক্তি বিশেষের বিশ্বাস নয়। হাসপাতালের রোগ শনাক্তকরণ বিভাগে রীতিমতো প্রথম প্রাধান্য দিয়ে স্থাপন করা হয়েছে জ্যোতিষ বিভাগ। রাজস্থানের ‘পথপ্রদর্শক’ এই হাসপাতালের নাম ইউনিক সংগীতা মেমোরিয়াল হাসপাতাল।
[ আরও পড়ুন: দেশভক্তি দেখাতে গিয়ে তিরঙ্গাই উলটে দিল মোবাইল সংস্থা!]
বৈজ্ঞানিক মতে রোগ পরীক্ষা, চিকিৎসা এই সবই ‘সেকেন্ডারি’ বিষয়। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে এলে প্রথমেই যেতে হবে জ্যোতিষ বিভাগে। সেখানেই কোষ্ঠী ও হস্তরেখা বিচার করে বলে দেওয়া হবে কী অসুখ করেছে। পরে অবশ্য ‘সেকেন্ড ওপিনিয়ন’ হিসাবে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা করে রিপোর্ট মিলিয়ে দেখা হয়। কিন্তু সেই রিপোর্ট হাতে পাওয়ার আগে রোগ চিকিৎসা শুরু হয়ে যায়। এতে নাকি চিকিৎসা নির্ভুল হচ্ছে। এবং পরীক্ষা নিরীক্ষার ঠেলায় চিকিৎসার শুরুতে অকারণ সময় নষ্ট হচ্ছে না। স্যাম্পল কালেকশন, ল্যাবে নিয়ে যাওয়া, পরীক্ষার জন্য ন্যূনতম সময় দেওয়া, এই কিছুই লাগছে না। হাতের পাতায় বা কোষ্ঠী কুণ্ডলীতে এক ঝলক বিশেষজ্ঞ দৃষ্টি ফেললেই জানা হয়ে যাবে শরীরের রোগ পরিস্থিতি। গ্রহ-নক্ষত্রের কোন অবস্থানে, কোন দশায় কী কী অসুখ হতে পারে তা বিচার করেই চিকিৎসা শুরু হয়ে যাবে।
[ আরও পড়ুন: আরও ৫০ বছর কংগ্রেসের সভাপতি থাকুন রাহুল গান্ধী, কটাক্ষ বিজেপি নেতার]
হাসপাতাল তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, কেবলমাত্র রোগ শনাক্তকরণেই জ্যোতিষ শাস্ত্রের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসা হচ্ছে অত্যাধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান মেনেই। এই যৌথ ব্যবস্থায় রোগীরা সন্তুষ্ট। রোগী, রোগীর পরিবারের সন্তোষের কথা বাদ দিলেও এতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। কোনও কারণে রোগ শনাক্তকরণ পরীক্ষায় ভুল হলেও তাকে রক্ষা করতে রয়েছে জ্যোতিষীর কবচ। আর ভুল চিকিৎসায় রোগ মৃত্যুকে ‘নিয়তির’ সিলমোহর দিতে প্রস্তুত মাস মাইনের একাধিক জোতিষ।
[ আরও পড়ুন: মহিলাকে বেল্ট দিয়ে মারধরের ভিডিও ভাইরাল, বহিষ্কৃত হরিয়ানার ৫ পুলিশকর্মী]
এই হাসপাতালের খবর প্রকাশ হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তবে এই প্রথম নয়, ইতিমধ্যেই একাধিক ব্রিজ কোর্সের মাধ্যমে হোমিওপ্যাথ, আয়ুর্বেদ, দন্ত চিকিৎসকদের দিয়ে অ্যালাপ্যাথ চিকিৎসা করানোর প্রস্তাব এমসিআইয়ের বিচারাধীন। হাসপাতালে জ্যোতিষ বিভাগের প্রস্তাবও উঠেছে বেশ কিছুদিন আগে। এবার তা বাস্তবায়নের পালা। ‘রাখে হরি মারে কে?’ কিংবা, ‘ভগবান যা করেন মঙ্গলের জন্য।’ এই প্রবাদগুলো একবার চিকিৎসা ব্যবস্থার অঙ্গ করে ফেলতে পারলে আর চিন্তা নেই। রোগী মৃতু্যতে হাসপাতালে বিক্ষোভ, ডাক্তার ও নার্সকে মারধরের মতো ঘটনা তো ঘটবেই না, সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য পরিষেবার বেহাল দশা নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অসন্তোষও ঠেকানো সম্ভব। সেই লক্ষ্যে পাকাপাকি ব্যবস্থা করে ফেলল রাজস্থানের ইউনিক সংগীতা মেমোরিয়াল হাসপাতাল।
The post রোগ নির্ণয়ে যন্ত্র নয়, রাজস্থানের চিকিৎসকদের ভরসা কোষ্ঠী-জ্যোতিষ appeared first on Sangbad Pratidin.