সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সমস্ত চিকিৎসককে রোগীর প্রেসক্রিপশনে জেনেরিক ওষুধের নাম লিখতে হবে। তা না করলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে তাঁদের। এমনকী, সাময়িক সময়ের জন্য ডাক্তারি প্র্যাকটিসের লাইসেন্সও বাতিল হতে পারে। নয়া নির্দেশিকায় এমনই জানাল জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন (এনএমসি)। চিকিৎসকদের ব্র্যান্ডেড জেনেরিক ওষুধের নাম না লেখারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ওষুধ কেনার পিছনে সাধারণ মানুষের খরচ কমানোর লক্ষ্যেই এই কড়াকড়ি। এ প্রসঙ্গে জেনারেল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. শ্যামাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “প্রেসক্রিপশনে জেনেরিক নামই লেখা উচিত। তবে বিদেশে ওষুধ জাল হয় না, তাই সেখানে সবাই নিশ্চিন্তে জেনেরিক ওষুধের নাম লেখেন। আমাদের এখানে সেই গ্যারান্টি দিতে হলে ড্রাগ কন্ট্রোলারকে আরও বেশি সৎ ও সক্রিয় হতে হবে। ড্রাগ কন্ট্রোলার বোর্ড যদি ব্র্যান্ডেডের পাশাপাশি জেনেরিক ওষুধের উপাদান ও গুণমাণ পরীক্ষা করে নেয় তাহলে পাঁচ মিনিটেই সব সন্দেহের অবসান হবে। জেনেরিকের গুণ নিয়ে কারও কোনও সন্দেহ থাকবে না। এছাড়া জেনেরিক নাম লেখা বাধ্যতামূলক হলে নির্দিষ্ট কোনও ব্র্যান্ডের ওষুধ দোকানে না থাকলে সেই ধরনের অন্য ব্র্যান্ডের ওষুধ সহজেই ক্রেতাকে দিতে পারা যাবে।”
[আরও পড়ুন: ‘নিষিদ্ধ’ PFI-কে সমর্থন করে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন বিজেপির! চাপে পড়ে মুখ খুলল গেরুয়া শিবির]
অভিযোগ, প্রেসক্রিপশনে ওষুধের জেনেরিক নাম লেখার নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ছাড়া বাকিদের একটা বড় অংশ এখনও ওষুধের জেনেরিক নামে প্রেসক্রিপশন লিখছেন না। ২০০২ সালের ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল কাউন্সিলের নির্দেশিকা অনুযায়ী, জেনেরিক ওষুধের নাম লিখতে হবে ডাক্তারদের। তবে তা না লিখলে শাস্তির কথা উল্লেখ ছিল না। গত ২ আগস্ট এনএমসির নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সাধারণ মানুষকে চিকিৎসাক্ষেত্রে বিশেষ করে ডাক্তারের লিখে দেওয়া ব্র্যান্ডেড ওষুধ কিনতে বিপুল টাকা খরচ করতে হচ্ছে। অথচ জেনেরিক ওষুধের দাম ব্র্যান্ডেডের চেয়ে ৩০ থেকে ৮০ শতাংশ কম। একই সঙ্গে চিকিৎসকদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, সবাইকে প্রেসক্রিপশনে ওষুধের নাম বড় হাতের লেখায় লিখতে হবে। এতে বুঝতে সুবিধা হবে। ভুল বোঝাবুঝি কম হবে। এছাড়াও সম্ভব হলে প্রেসক্রিপশন টাইপ করে প্রিন্ট করে দেওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সাধারণত যে কোনও পেটেন্ট নেওয়া ওষুধ ১৫ বছর পর জেনেরিক ওষুধে পরিণত হয়। এই সময় অন্য যে কোনও সংস্থা এই ওষুধ একই রাসায়নিক সংমিশ্রণে (কম্পোজিশন) তাদের মতো করে তৈরি করে বাজারজাত করতে পারে। তবে ওষুধের মূল নাম পরিবর্তন করতে পারে না। সাধারণত এই ধরনের জেনেরিক ওষুধের দাম ব্র্যান্ডেড ওষুধের চেয়ে অনেকটাই সস্তা হয়।