অর্ণব আইচ: লাদেনের সন্ধান পেয়েছিল বেলজিয়ান শেফার্ডের (Belgian Shepherd) ব্রিড। এই ব্রিডের একটি কুকুর শাবক জন্ম নিয়েছিল মেদিনীপুরে। কুকুরের মালিক শাবকটি তুলে দেন কলকাতা পুলিশের হাতে। নাম দেওয়া হয় জুয়েল। বছর দেড়েক আগে বিরল রোগে একটি বেলজিয়ান শেফার্ডের মৃত্যু হয়। দ্বিতীয়বারের জন্য কলকাতায় এল এই ব্রিডের কুকুর।
কলকাতার এক বাসিন্দার কাছে ছিল রটওয়েলার শাবক। তিনিও সেটি দান করেন কলকাতা পুলিশকে। তার নাম দেওয়া হয় জয়। গত কয়েক মাসে এভাবে আটটি কুকুর শাবক কলকাতা পুলিশকে দান করেছেন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার কুকুরপ্রেমীরা। আরও একটি শাবকের জন্য পুলিশ অপেক্ষা করে রয়েছে। সেটি কেউ দান করলে আগামী মে ও সেপ্টেম্বরে দু’দফায় ওই ন’টি কুকুর শাবককে প্রশিক্ষণের জন্য চণ্ডীগড় থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে ভানুতে ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পাঠানো হবে। এদিকে, চণ্ডীগড় থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর বুধবার কলকাতায় এসে পৌঁছেছে কলকাতা পুলিশের ‘ডগ স্কোয়াড’-এর ৯ সদস্য।
[আরও পড়ুন: বন্ধ মা উড়ালপুলে বাইক দুর্ঘটনা, গার্ডওয়ালে ধাক্কা খেয়ে ছিটকে পড়ে মৃত্যু চালকের]
মূলত বিস্ফোরক খোঁজার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে ওই আটটি ল্যাব্রাডর ও একটি গোল্ডেন রিট্রিভারকে (Golden Retriever)। চণ্ডীগড় থেকে প্রথমে গাড়ি ও তারপর রাজধানী এক্সপ্রেস করে নিয়ে আসা হয়। কোরাল, ডেইজি, ডলার, ব্ল্যাকি, পাওয়ার, পায়েল, বেলা, মলি ও লেমনকে এখন আলাদাভাবে রাখা হয়েছে। সপ্তাহ তিনেক পরই তারা অন্যদের সঙ্গে মিশে ডিউটিতে বের হবে। এ ছাড়াও খুনের অভিযুক্তদের খোঁজার জন্য একটি ‘ট্র্যাকিং ডগ’-এর প্রশিক্ষণ এখনও চলছে। আগামী জুলাইয়ে সেটিকে কলকাতায় নিয়ে আসা হবে।
কলকাতা পুলিশে সারমেয় বাহিনীর মোট ‘পদের’ সংখ্যা ৪৮। গত এক বছরে কলকাতা পুলিশের সারমেয় বাহিনীর ৬ সদস্য অবসর গ্রহণ করে। তাই এই শূন্যস্থান পূরণ করার উদ্যোগ নেয় লালবাজার। গত বছর প্রথমে ন’টি ল্যাব্রাডর ও একটি গোল্ডেন রিট্রিভার কেনা হয়। সেগুলি গত অক্টোবরে প্রশিক্ষণ নিতে পাঠানো হয়। সেগুলি যোগ দেওয়ার পরও শূন্যস্থান থাকবে। সেই কারণেও কলকাতা পুলিশ কুকুর শাবকের সন্ধান চালাতে শুরু করে। গত কয়েক মাস ধরে বেশ কয়েকজন কুকুরপ্রেমী কলকাতা পুলিশকে কুকুর শাবক দান করতে উদে্যাগী হন। পুলিশ আটটি কুকুর শাবক পছন্দ করে পুলিশে ‘নিয়োগ’ করে।
[আরও পড়ুন: ভাদু শেখ হত্যাকাণ্ড: জটিলতা কাটিয়ে তৃণমূল নেতার খুনের তদন্তভার সিবিআইকে দিল হাই কোর্ট]
তাদের মধ্যে সূর্য, রেখা, গিনি ও চন্দা নামে চারটি জার্মান শেফার্ড, জয় নামে রটওয়েলার, জুলিয়েট নামে ছোট মাপের ক্রকার স্প্যানিয়ালকে মে মাসেই চণ্ডীগড়ে প্রশিক্ষণ পাঠানো হবে। এদের মধ্যে সূর্য ‘ট্র্যাকিং ডগ’ হিসাবে খুনি ধরার প্রশিক্ষণ নেবে। এর পর সেপ্টেম্বর মাসে পাঠানো হবে একটি ল্যাব্রাডর, জুয়েল নামে বেলজিয়ান শেফার্ডকে। এখন পুলিশ কুকুরের সংখ্যা ৪৭। একটিমাত্র শূন্যপদ পূরণের জন্য পুলিশ অপেক্ষা করে রয়েছে আরও এক দাতার জন্য। যদিও দান করা কুকুর সারমেয় বাহিনীতে নিয়োগ করার আগে বেশ কিছু নিয়ম পালন করতে হয়। নিয়োগ করার মতো মনে হলে প্রথমে মালিকের খোঁজখবর নেন গোয়েন্দারা।