সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভা ভোট এগিয়ে আসতেই কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদের গলায় হঠাৎই উলটো সুর। আধারের পক্ষে আগাগোড়া জোরদার সওয়াল করা মন্ত্রী নিজেই চান না, কেউ আধারের সঙ্গে ভোটার কার্ড ‘লিংক’ করাক। মন্ত্রীর যুক্তি, আধার ও ভোটার কার্ড সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণে ব্যবহৃত হয়। তাই তিনি ব্যক্তিগতভাবে এই দুই গুরুত্বপূর্ণ নথির সংযুক্তিকরণ চান না।
বেঙ্গালুরুতে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মন্ত্রী বলেন, ‘তথ্যমন্ত্রী হিসাবে বলছি না, তবে আমার ব্যক্তিগত মতামত আধারের সঙ্গে ভোটার আইডি কার্ডের সংযুক্তিকরণ করা উচিত নয়।’ তিনি এও স্পষ্ট করেন, সাধারণ মানুষের উপর আধারের সাহায্যে নজর রাখা হচ্ছে, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠুক সেটা তিনি চান না। বলছেন, ‘যদি আধারের সঙ্গে ভোটার কার্ড লিংক করে দেওয়া হয়, তাহলে নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে চরবৃত্তির অভিযোগ উঠবে। লোকে বলবে, আমরা কী খাচ্ছি, কোথায় যাচ্ছি, সবই কেন্দ্রের নজরে রয়েছে। এমন পরিস্থিতি আমি সত্যি চাই না।’ এদিন ফের একবার আধার নিরাপদ বলে মন্তব্য করেছেন মন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, ‘রেলের টিকিট হলেও যাত্রীদের তথ্য দিতে হয়। যদি না দিতে চান, তাহলে সাইকেল চেপে যান।’ রেস্তরাঁয় খেতে গেলেও কী কী খেয়েছেন, তা আপনার বিলে লেখা থাকে। কিন্তু আমাদের সরকার আপনার গোপনীয়তা অটুট রাখবে।’
[গুগলে এই চারটি শব্দ লিখলেই মিলছে আধারের তথ্য, শিকেয় নিরাপত্তা]
ব্যাংক থেকে শুরু করে লাক্সারি ক্যাব, ট্রেনের টিকিট থেকে শুরু করে মোবাইল ফোন- সব ক্ষেত্রেই রি-ভেরিফিকেশনের জন্য বাধ্যতামূলক হয়েছে আধার নম্বর। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন ভোটার কার্ডের সঙ্গেও আধারের সংযুক্তিকরণ বাধ্যতামূলক করার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের স্বারস্থ হয়। শীর্ষ আদালতে কমিশন জানিয়েছে, ভোটার তালিকায় কারচুপি রুখতে ও প্রতি নাগরিক পিছু একটি মাত্র ভোটের অধিকার সুনিশ্চিত করতে ভোটার কার্ডের সঙ্গে ১২ ডিজিটের ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন নম্বরের যোগ বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দিক সুপ্রিম কোর্ট। এর আগে অবশ্য আধার নিয়ে একটি মামলার শুনানিতে কমিশন সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছিল, বাধ্যতামূলক নয়, ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধারের যোগ নির্ভর করুক ভারতীয়দের ইচ্ছার উপর। কোনও আইন করার দরকার নেই, কেউ চাইলে তবেই তাঁর ভোটার কার্ড ও আধার নম্বরকে ‘লিংক’ করা হোক।
আর এখানেই আপত্তি মন্ত্রীর। তাঁর বক্তব্য, ‘ভোটার কার্ডে আপনার নির্বাচন সংক্রান্ত তথ্য যেমন আপনার পোলিং বুথ, ঠিকানা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে দেখা যায়। এর সঙ্গে আধারের সম্পর্ক নেই।’ তবে ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধার লিংকে আপত্তি থাকলেও এদিন মন্ত্রী ফের একবার ব্যাংক ও মোবাইলের সঙ্গে আধার সংযুক্তিকরণের পক্ষে জোরাল সওয়াল করেছেন। আক্রমণ করতে ছাড়েননি পূর্ববর্তী ইউপিএ সরকারকেও। অভিযোগ করেন, ‘মোদির জমানায় আধার ও মনমোহন সিংয়ের জমানার আধারের মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। মোদিজির আধারের পিছনে আইন-কানুন রয়েছে। রয়েছে গোপনীয়তা ও সুরক্ষা। মনমোহন সিংয়ের আমলে আধার কার্ড সংক্রান্ত কোনও নির্দিষ্ট আইন ছিল না।’ তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যেই দেশের ৮০ কোটি মানুষ মোবাইল ফোনের সঙ্গে জন ধন যোজনা, আধার ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট লিংক করে কেন্দ্রের বিভিন্ন নীতির সুফল পাচ্ছেন।
[রেকর্ড দাম বাড়ল পেট্রল-ডিজেলের, কেন্দ্রের সমালোচনায় সরব মমতা]
The post আধারের সঙ্গে ভোটার কার্ডের সংযুক্তিকরণ চান না মন্ত্রী রবিশংকর appeared first on Sangbad Pratidin.