সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিকিৎসক কাফিল খানের (Kafeel Khan) সঙ্গে সংঘাত কিছুতেই মিটছে না উত্তরপ্রদেশ সরকারের। তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা আদালত খারিজ করে দিলেও, যোগী সরকারের হিসেবে এখনও তিনি ‘অপরাধী’। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশ সরকার গোরক্ষপুরের বিতর্কিত এই চিকিৎসককে ‘দাগি অপরাধী’দের তালিকায় ঢুকিয়ে দিয়েছে। রাজ্যে নতুন করে ৮১ জনকে নিয়ে অপরাধী তালিকা তৈরি হয়েছে। ওই ৮১ জনের মধ্যে একেবারে প্রথম সারিতেই কাফিল খানের নাম রয়েছে। যার অর্থ হল, এবার থেকে আজীবন কাফিলের গতিবিধির উপর নজর রাখবে প্রশাসন।
২০১৭ সালের আগস্ট মাসে উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর বিআরডি হাসপাতালে একদিনে অক্সিজেনের অভাবে প্রাণ গিয়েছিল ৬০ শিশুর। ক্ষমতায় আসার চার মাসের মাথায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটায় চরম অস্বস্তিতে পড়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath)। সঙ্গে সঙ্গে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল ওই হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কাফিল খানকে। কিছুদিন বাদে তাঁকে গ্রেপ্তার করে ন’মাসের জন্য জেল হেফাজতেও পাঠায় প্রশাসন। যদিও পরে কাফিলের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কাফিলের পালটা দাবি ছিল, প্রশাসনিক স্তরে দুর্নীতিকে আড়াল করতেই তাঁকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তারপর থেকেই লাগাতার উত্তরপ্রদেশ তথা কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়ে আসছেন কাফিল। কেন্দ্র সরকার সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাশ করালে, এর প্রতিবাদে ঝাঁপিয়ে পড়েন ওই চিকিৎসক। একাধিক কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে CAA’র বিরুদ্ধে ভাষণ দিতে শোনা যায় তাঁকে। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ধরনের বক্তৃতা দেওয়ার জেরেই তাঁর উপর জাতীয় নিরাপত্তা আইন (NSA) প্রয়োগ করা হয়। গত বছর ২৯ জানুয়ারি গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। অনেক টানাপড়েনের পর সেপ্টেম্বরে ছাড়া পান তিনি। কিন্তু তারপরও যোগী সরকারের সঙ্গে সংঘাত কাটেনি তাঁর।
[আরও পড়ুন: রাজ্যের ভোটের মুখে কংগ্রেসকে ‘ব্যান্ড বাজা’ পার্টি বলে কটাক্ষ ওয়েইসির, বিঁধলেন মমতাকেও]
জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর বারবার নিজের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন কাফিল। এমনকী আইএমএ-ও তাঁর নাম সুপারিশ করেছে। তাও কাফিলকে বিআরডি মেডিক্যাল কলেজের চাকরিতে পুনর্বহাল করেনি যোগী প্রশাসন। এবার সরাসরি তাঁকে অপরাধীদের তালিকায় ঢুকিয়ে দেওয়া হল। কাফিল অবশ্য বলছেন,”ভালই হল, ২৪ ঘণ্টা দু’জন নিরাপত্তারক্ষী থাকুক আমার সঙ্গে। তাতে অন্তত ভুয়ো মামলা থেকে রক্ষা পাব। আসলে উত্তরপ্রদেশে অবাধে অপরাধীরা ঘুরে বেড়ায়। আর অপরাধীদের তালিকায় নাম দেওয়া হয় নিরীহদের।”