স্টাফ রিপোর্টার: কোটি কোটি টাকা, বিপুল সম্পত্তি উদ্ধারের বাইরে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আরও একটি বিষয় নিয়ে জোর আলোচনা সবমহলে। রাজ্যের সদ্য প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের সম্পর্ক নিয়ে কৌতূহল সকলের। সেই সম্পর্কের ভিত খুঁজতে গিয়ে উঠে আসছে নানা তথ্য। যা তদন্তের স্বার্থে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এবার দু’জনের সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে আনলেন অর্পিতার গাড়িচালক প্রণব ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, ”প্রায় দিনই রাতে ম্যাডামকে নিয়ে যেতাম নাকতলায়, স্যরের বাড়িতে। নামিয়ে দেওয়ার পরে ম্যাডাম আমাকে বলতেন, চলে যাও। থাকার দরকার নেই।” বলাই বাহুল্য, ‘স্যর’ মানে রাজ্যের সদ্য প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আর ‘ম্যাডাম’ পার্থবাবুর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায় (Arpita Mukherjee) স্বয়ং।
স্যর-ম্যাডামের ‘নৈশ অভিসার’ নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে শনিবার এভাবেই কার্যত বোমা ফাটালেন প্রণব। যার সূত্র ধরে আরও খুল্লামখুল্লা হয়ে পড়ল পার্থ-অর্পিতার সম্পর্কের রসায়ন। প্রণবের দাবি, “সন্ধ্যায় ম্যাডামকে নাকতলায় নিয়ে যাওয়ার পর ম্যাডাম কখনও গাড়ি রেখে দিয়ে আমাকে ফিরে যেতে বলতেন, কখনও আমি গাড়ি নিয়েই ফিরে আসতাম। কখন, কত রাতে, ম্যাডাম ওখান থেকে বেরতেন, কীভাবে ফিরতেন জানি না।” প্রণবের দাবি, বেহালার (Behala) ম্যান্টনে পার্থবাবুর দলীয় অফিসেও তিনি অনেক রাতে অর্পিতাকে নিয়ে গিয়েছেন। “উনি কতক্ষণ ওখানে থাকতেন, কী খেতেন, কখন ফিরতেন – এত সব জানা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না, চেষ্টাও করিনি।”– সাফ কথা গাড়িচালকের।
[আরও পড়ুন: হাত-পা টিপিয়ে নিত সিনিয়ররা, মাজতে হত বাসনও! রাজ্যেরই স্কুলে র্যাগিংয়ের শিকার ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী]
প্রণববাবুর এসব বক্তব্যের মাঝেই শনিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) ভাইরাল হয়েছে পার্থ-অর্পিতার একটি ছবি। তাতে দেখা যাচ্ছে, একটি গয়নার দোকানে গিয়ে দু’জন গয়না (Jwellery) পছন্দ করছেন। দু’জনের মুখে মাস্ক। অর্পিতার পরনে শাড়ি। নামী কোনও গয়নার দোকানেই গিয়েছেন তাঁরা।
প্রণবের বক্তব্যে এটা স্পষ্ট যে, বহু বছর ধরেই পার্থ-অর্পিতার সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ। একবার অর্পিতাকে নিয়ে তাঁকে শান্তিনিকেতনেও (Santiniketan) যেতে হয়েছিল, অর্পিতার সঙ্গে ছিলেন তাঁর মা ও বোন। প্রণবের কথায় স্পষ্ট ইঙ্গিত, নাকতলার মতো ডায়মন্ড সিটি সাউথের ফ্ল্যাটেও ‘স্যার-ম্যাডাম’ নিভৃতে বহু সময় কাটিয়েছেন। প্রণব ভট্টাচার্য মাস সাতেক আগে অর্পিতার গাড়ির চালক হিসাবে কাজে যোগ দেন। সেটাও পার্থবাবু তদ্বিরে। তাঁর বাড়ি নাকতলার কাছে। প্রণবের দাবি, এক পরিচিত মারফত পার্থবাবুর সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়েছিল। পরে তাঁকে প্রাক্তন মন্ত্রীর অফিস থেকে ডেকে পাঠানো হয়। আর তারপরই অর্পিতার গাড়ির চালক হিসেবে চাকরিতে নিয়োগ।
[আরও পড়ুন: ১৫০ টাকায় রাতারাতি ভাগ্যবদল, লটারি কিনে কোটিপতি ডুয়ার্সের ব্যবসায়ী]
আর এই চাকরি-ই তাঁকে ‘অনেক কিছু দেখিয়েছে।’ অর্পিতা চড়তেন হন্ডা সিটিতে। মার্সিডিজ বেঞ্জ ও মিনি কুপার আগে থাকলেও গাড়িগুলো বেশ ক’দিন যাবৎ প্রণবের চোখে পড়েনি। বেশিরভাগ সময় হন্ডা সিটিতে ম্যাডামকে চাপিয়ে সিটি সাউথের ফ্ল্যাট থেকে নিয়ে যেতেন কসবার ‘ইচ্ছে’ অফিসের বাড়িতে। ক’বার নেল আর্টসের পার্লারে নিয়ে গিয়েছেন, দু’-একবার বেলঘরিয়ার পার্লারেও যেতে হয়েছে। অলটুরাস গাড়িটা চালাতেন কল্যাণ নামের এক যুবক। সেই কল্যাণ পার্লারের কাজ দেখাশোনা করতেন। প্রণবের দাবি, বেলঘরিয়ায় তিনি কখনও ফ্ল্যাটের অন্দরে ঢোকেননি। তবে কল্যাণ সেখানে যেতেন। আর যেতেন পার্থবাবুর কর্মীরা।