প্রসূন বিশ্বাস: ম্যাচ শেষে দর্শকদের উদ্দেশ্যে আকাশের দিকে মুষ্টিবদ্ধ হাত তুলে যে লাফটা দিলেন বিশাল কাইথ, সেটা দেখে বোঝা যাচ্ছিল আপাতত বিশাল একটা টেনশনের বোঝা নেমে গেল ‘টাইব্রেকার মাস্টারে'র মাথা থেকে। স্টেডিয়ামের ভিতরে যেমন বিশাল-উল্লাস, ঠিক তেমনই বাইরেও সবুজ-মেরুন জনতার মুখে একটাই নাম–বিশাল।
কাইথের সেই উল্লাস স্তব্ধ হয়ে দেখছিলেন প্রতিপক্ষ গোলকিপার গুরপ্রীত সিং সান্ধু। সেই গুরপ্রীত, যিনি ইন্টার কন্টিনেন্টাল কাপে ভারতীয় দলের গোলপোস্টের নীচে থাকবেন। অথচ সেই দলের প্রাথমিক ২৬ জনের মধ্যেও জায়গা হয়নি কাইথের! ডুরান্ড কাপের পরপর দুই নক আউট ম্যাচে দলকে জিতিয়ে কি জবাব দিলেন মোহনবাগান গোলকিপার? জাতীয় দলে ডাক না পাওয়ার অবিচারের জবাব? যদিও ম্যাচ জিতে উঠে বিশাল বললেন অন্য কথা। বললেন, জবাব দেওয়া-টেওয়া নয়, বরং প্রতিদিনই তিনি চান নিজের পারফরম্যান্সে উন্নতি ঘটাতে। জয়ের নায়ক বিশাল বলছেন, “আমার কাজ প্রতি ম্যাচে উন্নতি করা। জাতীয় দলের বিষয় ছিল না। প্রতি মুহূর্তে নিজেকে উন্নত করি। জাতীয় দল হোক বা ক্লাব দল।”
[আরও পড়ুন: জরুরি বৈঠকে কাটল ইনভেস্টর জট, আইএসএলের আগে স্বস্তি মহামেডানে]
টাইব্রেকার সেভ নিয়েও আত্মবিশ্বাসী ছিলেন বিশাল। বললেন, “আমার বিশ্বাস ছিল টাইব্রেকারে ঠিক পারব। কোয়ার্টার ফাইনালেও এমন পরিস্থিতি ছিল। জানতাম ওরা গোল করবে। আমার কাজ ছিল একটা বা দুটো শট সেভ করা। সেটাই করেছি।” এই বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধেই আইএসএল ফাইনালে টাইব্রেকারে জিতেছিল মোহনবাগান। সেই প্রসঙ্গও তুললেন তিনি। সঙ্গে জুড়লেন যে, নক আউট ম্যাচ থাকলে টাইব্রেকার অনুশীলন করান কোচেরা। এছাড়াও প্রতিপক্ষ ফুটবলারদের শট মারার স্টাইল নিয়েও বিভিন্ন পরামর্শ পান দলের কোচেদের থেকে। তাতে কিছুটা লাভ হয় বলে মনে করছেন তিনি। এদিন মোহনবাগান অধিনায়ক শুভাশিস বসুর গলাতেও বিশালের প্রশংসা। তিনি বলে গেলেন, “দেশের অন্যতম সেরা গোলকিপার এই মুহূর্তে বিশাল কাইথ। ও মুখে নয়, মাঠে সেটা প্রমাণ করছে। ভবিষ্যতে ওকে দেশের হয়ে খেলতেও দেখব।”
[আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশে ফুটবলের প্রসারে নবাবের শহরে ডার্বি, কেমন দল নামাবে ইস্ট-মোহন?]
সেমিফাইনাল জয়ের পর অনেকেই মনে করছেন, ফাইনালে মোহনবাগানের অপেক্ষাকৃত সহজ প্রতিপক্ষ হতে চলেছে নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড। তবে ফাইনালের প্রতিপক্ষকে এতটুকু হালকাভাবে নিতে নারাজ মোহনবাগান কোচ জোসে মোলিনা। তিনি বলেছেন, “কোনও ম্যাচই সহজ নয়। ফাইনালেও নব্বই মিনিটের মধ্যেই খেলা শেষ করার চেষ্টা করব। তবে সহজ ম্যাচ কখনই হবে না।” সুনীল ছেত্রী যে পেনাল্টি থেকে গোল করলেন, সেই পেনাল্টি নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করলেন মোলিনা। দলের ধারাবাহিকতা নিয়ে বলতে গিয়ে ম্যানেজমেন্টকে ধন্যবাদ দেন মোহনবাগান কোচ। এদিন চোট পেয়ে মাঠ ছেড়েছেন শুভাশিস বসু। বুধবার বোঝা যাবে তাঁর চোট কতটা গুরুতর।