সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: মা কালীর (Kalipuja 2023) পাশেই কার্তিকের অমাবস্যায় দুর্গার আরাধনা। সেই সঙ্গে বলিদানও। এমনকী মা কালীর পর দুর্গার বিসর্জন। পুরুলিয়ার মানবাজার এক নম্বর ব্লকের বিশরি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধুপুর গ্রামের ঘোষ পরিবারে প্রায় ৩০০ বছর ধরে মা কালীর প্রতিমার পাশেই মা দুর্গার পুজো হয়ে আসছে। হয় বলিদানও।
এখানে শিব-দুর্গা ও তাঁর পরিবার সেই বোধন অর্থাৎ মহাষষ্ঠী থেকে ভাইফোঁটা পর্যন্ত পুজো পায়। ভাইফোঁটার পরের দিন বিকেলে দুই প্রতিমার দুই ঘট বিসর্জন শেষে প্রথমে মা কালী ও তারপরে দুর্গার বিসর্জন হয়। তবে এবার ভাইফোঁটার দিন সন্ধেবেলায় এই বিসর্জন হবে। কারণ সামনেই জগদ্ধাত্রী পুজো চলে আসছে। তাই পরের দিন বিসর্জন হবে না।
[আরও পড়ুন: কেষ্ট সরতেই বীরভূমের কোর কমিটিতে ফাটল! রদবদলের সম্ভাবনা]
মা দুর্গা এখানে শিবের সঙ্গে রাজনন্দিনী হয়ে বসে আছেন। অর্থাৎ মায়ের দুটো হাত। তার পাশেই কার্তিকের অমাবস্যায় পুজো পান চামুন্ডা বেশে থাকা মা কালী। মানবাজারের পাথরমহড়া রাজার আমন্ত্রণে বাঁকুড়ার জয়পুর থানার শালদা-ময়নাপুর থেকে পুরুলিয়ার মানবাজারের এই মধুপুরে এসেছিলেন রামপ্রসাদ ঘোষ। তিনি বছর ৩০০ আগে শিব-দুর্গার পুজো শুরু করেছিলেন। শৈব মতে ওই পুজো শুরু হয়। পরবর্তীকালে তাঁর ছেলে রাজচন্দ্র ঘোষ কাশীতে তীর্থ করতে গিয়ে সেখানে দেখেছিলেন দুর্গার সঙ্গে কালীর প্রতিমা। বাড়ি ফিরে এসে স্বপ্নাদেশে মা দুর্গার পাশে মা কালীর পুজো শুরু করেন।
দশমীর পর মা কৈলাসে বিদায় নিলেও এই ঘোষ পরিবারে শিব-দুর্গা থেকে যায় এবং মা পুজো নেন। হয় আরতি, ভোগ। এছাড়া এই পরিবারে নিত্য দুর্গাপুজো হয়ে থাকে। এই পরিবারের বর্তমান সদস্য পার্থপ্রতিম (বুলবুল) ঘোষ বলেন, “যে বার অমাবস্যা কালীপুজোর পরেরদিনও থেকে যায় সেদিন মা দুর্গার পুজো-সহ বলিদান হয়, কালী প্রতিমার সামনেই। একদিন অমাবস্যা থাকলে আগে দেবী দুর্গার পুজো ও বলিদান হয়। তার পর দেবী কালীর পুজো শুরু হয়ে থাকে।” দুর্গা প্রতিমার যেদিকে গণেশ-লক্ষ্মী থাকেন তার সামনেই মা কালীর প্রতিমা বসিয়ে মায়ের পুজো হয়। রবিবার অমাবস্যা থাকায় এদিন ঐতিহ্য মেনে ধুমধামের সঙ্গে শিব-দুর্গার পুজো হয়। মায়ের চরণে বলি হয় ছাগ।