শুভঙ্কর বসু: আইনি জটিলতা তৈরি হলেও পুজোটা নির্বিঘ্নেই কাটল দমদম পার্ক ভারতচক্রের। নানা সমালোচনা, বিতর্ক, মামলা এড়িয়ে দর্শকরা নিশ্চিন্তে মণ্ডপ দর্শন করতে পারলেন। দুর্গাপুজোর (Durga Puja) মণ্ডপসজ্জায় জুতো-চটির ব্যবহার নিয়ে দমদম পার্ক ভারতচক্রের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগ ওঠে। তা নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta HC) মামলা দায়ের করেন জনৈক আইনজীবী। পুজোর মাঝে জরুরি ভিত্তিতে তার শুনানির জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বৃহস্পতিবার মামলাটি হাই কোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে উঠলে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এটি এমন গুরুত্বপূর্ণ মামলা নয় যে জরুরি শুনানি করতে হবে। আর তাঁর এই পর্যবেক্ষণেই স্বস্তি বাড়ল দমদম পার্ক ভারতচক্র পুজো কমিটির।
তেভাগা, তেলেঙ্গানা আধিয়ার থেকে শুরু করে ফকির বা সন্ন্যাসী আন্দোলন। কুকা থেকে তিতুমিরের বারাসত। ভবানীপাঠক হোন বা দেবী চৌধুরানি, অহল্যাদেবী থেকে ইরাদেবী, সবশেষে লখিমপুর খেরি – শাসকের বিরুদ্ধে ঝড় তোলা সব নাম নিয়ে পুজো মণ্ডপ সেজেছে তিলোত্তমায়, এমনটা বিশেষ কানে আসেনি। তবে এবছর এসব লড়াইয়ের কথাকাহিনি উঠে এসেছে ভারতচক্রের (Dum Dum Park Bharat Chakra) দুর্গাপুজোর থিমে। দেবী দুর্গার মণ্ডপে এই সজ্জা জনমানসের ‘ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত’, এই অভিযোগ জানিয়ে পুজো উদ্যোক্তাদের আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন এক আইনজীবী। আপত্তি তুলেছে বিজেপিও। হিন্দু মহাসভার তরফে হাই কোর্টে একটি মামলা দায়ের করা হয়। আবেদন ছিল যাতে জরুরি ভিত্তিতে শুনানি করে পুজোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কিন্তু সেই আবেদন গ্রহণ করেনি হাই কোর্ট।
[আরও পড়ুন: ‘পিছনের দরজা দিয়ে নাক গলানো’, রাজ্যে বিএসএফের কাজের সীমা বাড়ানো নিয়ে সরব কুণাল ঘোষ]
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে মামলাটি উঠলে তিনি শুনানির পর জানিয়েছেন, পুজোর তিথির অনেকটাই শেষ হয়ে গিয়েছে। এতক্ষণে দর্শকরা মণ্ডপ যা দেখা, দেখেছেন। এখন পুজো বন্ধ করার কোনও অর্থ নেই। মণ্ডপসজ্জা নিয়ে কারও কোনও আপত্তি থাকলে, তা পরে মীমাংসা করা যাবে। তাই এই মুহুর্তে জুতোর মণ্ডপসজ্জা নিয়ে আদালতে জরুরি শুনানির কোনও প্রয়োজন নেই। এ বিষয়ে বিচারপতি পুলিশকে নির্দেশ দেন, আগামী ২৫ অক্টোবর এই সংক্রান্ত রিপোর্ট আদালতে পেশ করতে হবে। তারপর শুনানির সম্ভাবনা।