সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুজোর সরকারি অনুদান ফেরাচ্ছে আরও ৩ কমিটি। এর মধ্যে রয়েছে কলকাতার দুটি ক্লাব এবং শহরতলির একটি কমিটি। সকলেরই সুর প্রায় এক, আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে সরকারি অনুদান ফেরাচ্ছেন তাঁরা। একইসঙ্গে তাঁদের আবেদন, এই টাকা মুখ্যমন্ত্রী নারী সুরক্ষার কাজে ব্যবহার করতে পারেন।
বেহালার অক্ষয় পাল রোডের মধ্যপাড়া আবাহনী ক্লাবের দুর্গাপুজোর বয়স ৫০ বছর। কিন্তু সুবর্ণ জয়ন্তীর পুজোয় থাকছে না কোনও জাঁকজমক। অভয়া বিচার পেলে আগামী বছর ফের উৎসব বলে বলে জানিয়েছেন পুজো উদ্যোক্তা শুভ্রা ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, "এটা একটা নোংরা ঘটনা। একজন ডাক্তার শেষ হয়ে গেল। আমাদের প্রতিবাদের ইচ্ছা ছিল। অন্য কোনওভাবে তো প্রতিবাদ করতে পারব না। ভাবলাম, এই অনুদানটা প্রত্যাখ্যান করে যদি প্রতিবাদের স্বর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছনো যায়। আমরা বিচার চাই। আর কিচ্ছু নয়।'' ক্লাবের আরেক সদস্য রূপা পাল জানান, "রাজ্যের যা অবস্থা তাতে আমাদের উচ্ছ্বাস করার মতো ক্ষমতা নেই। এবারের পুজোয় জাঁকজম কমিয়ে দিয়েছি।"
শুধু বেহালা নয়, অনুদান ফেরাচ্ছে সন্তোষপুরের মহিলা পরিচালিত পুজো মহিলা মজলিশ-ও। সরকারি অনুদানের জন্য ক্লাবের সদস্যদের ফোন করেছিল স্থানীয় থানা। পত্রপাঠ তাঁদের ফিরিয়ে দিয়েছে পুজো কমিটি। কমিটির সেক্রেটারি কৃষ্ণা গুহ জানিয়েছেন, "এবার রাজ্যের যা অবস্থা তাতে বড় করে পুজো করার মতো মনের অবস্থা নেই। প্রতিমার বায়না করে ফেলেছি, সেটা তো আর ফেরানো যাবে না। তাই আড়ম্বরহীনভাবেই পুজো করব আমরা।" একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁর অনুরোধ, "আমাদের ফেরানো ৮৫ টাকায় কিছুই হবে না জানি, কিন্তু আরও কয়েকজনও তো ফেরাচ্ছে। সেই টাকা যদি নারী সুরক্ষায় ব্যবহার করা যায়, সেটা দেখুন।" একই পথে হেঁটেছে সোদপুরের বোধিকানন ক্লাব-ও।
মেয়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের বিচার চাই, মাতৃপুজোয় আড়ম্বরের প্রয়োজন নেই। আর জি কর কাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে এমনই সুর শোনা যাচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন দুর্গাপুজো উদ্যোক্তাদের গলায়। তাদের অনেকেই দুর্গাপুজোয় (Durga Puja 2024) ক্লাবগুলির জন্য ঘোষণা করা সরকারি অনুদান ফেরাচ্ছেন। ইতিমধ্যেই উত্তরপাড়া, কোন্নগরের তিনটি ক্লাব অনুদান নেবে না বলে ঘোষণা করে দিয়েছে। যথাযথ বিচার না হওয়া পর্যন্ত বাঙালির সেরা উৎসবে কোনও জাঁকজমক চায় না তারা। সেই পথেই হাঁটছে একাধিক ক্লাব।