সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মারণ করোনা ভাইরাসের জেরে পুরভোট নিয়ে চিন্তায় রয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কবে ভোট করা যায়, তা নিয়ে আলোচনার জন্য আজ তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম-সহ দশটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সর্বদল বৈঠকের মূল বিষয়বস্তু হতে চলেছে এই করোনা। রাজনৈতিক মহলের আশঙ্কা, করোনার জেরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পিছিয়ে যেতে পারে পুরভোট। শাসকদল তৃণমূল নির্বাচন কমিশন ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কাছে ভোট পিছনোর জন্য ইতিমধ্যেই আবেদন জানিয়েছে। রবিবার রাতের দিকে দলের তরফে বিবৃতি দিয়ে এই আবেদন জানানো হয়েছে।
করোনার জেরে সরকারি-বেসরকারি স্কুল, কলেজ ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। আজ বৈঠকে পুরভোটের দিন আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা হলে রাজনৈতিক দলগুলি নিয়ম মেনে সভা-সমাবেশ করবে। ভোটের দিনে বুথগুলিতে ভোটারদের লাইন পড়বে। এক জেলা থেকে অন্যত্র ভোটকর্মীদের যেতে হবে। করোনা সংক্রমণ রুখতে এত সতর্কতার মাঝে সেই সময় পরিস্থিতি কতটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে, তা মাথায় রাখতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে এইসব বিষয়গুলিও মাথায় রাখতে হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: পেটিএমের KYC আপডেটের নামে জালিয়াতি, ব্যাংক থেকে উধাও লক্ষাধিক টাকা]
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে যে কোনও জমায়েত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রচার সভায় বাধা পড়বে। সর্বদল বৈঠকের পর ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পর সভা,সমাবেশ নিয়ে যাবতীয় দেখভালের দায়িত্ব বর্তায় নির্বাচন কমিশনের উপর। রাজ্যে করোনার প্রকোপ না ছড়ালেও সভা, সমাবেশ হলে তা WHO এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নির্দেশের পরিপন্থী বলেই বিবেচিত হবে। এমন অবস্থায় নির্বাচন কমিশন আদৌ কতটা ঝুঁকি নিতে চাইবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে।
ইভিএম না ব্যালট – কোন পদ্ধতিতে ভোট হবে, তা নিয়েও আজ আলোচনা হতে পারে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে উঠে আসছে করোনা প্রসঙ্গ। এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করে বলা হয়েছে, মহামারি করোনার জেরে পুরভোট পিছিয়ে দেওয়া হোক। সর্বদল বৈঠক প্রসঙ্গে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “নির্বাচন কমিশনের বৈঠক আছে বলে শুনেছি। অনেক দল ভোট পিছিয়ে দিতে চাইছে। নির্বাচন কমিশন কী বলে দেখি।” করোনার জেরে ভোট পিছিয়ে দেওয়া হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত সরকারের উপরেই ছাড়তে চাইছে বিরোধী দলগুলি। তবে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব কমিশনের কাছে ভোট পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন জানাবে বলে সূত্রের খবর। কংগ্রেসও ভোট পিছনোর পক্ষে। রাজ্য কংগ্রেস নেতা, সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যও বলেছেন, “আমরা ভোটের জন্য তৈরি। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।” আলিমুদ্দিন সূত্রে খবর, প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হলেও রাজ্য নির্বাচন কমিশন আজ কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেদিকে তাকিয়ে বামপন্থী দলগুলি।
[আরও পড়ুন: করোনা রোধে শপিং মলে কলকাতা পুলিশের টিম, হানা ওষুধের দোকানেও]
এদিকে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ও ভোটের দিনক্ষণ স্থির করার বিষয়টি ছেড়েছেন কমিশনের উপর। সূত্রের খবর, আজ সর্বদল বৈঠকের আগে তাঁর সঙ্গে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসের কথা হয়েছে। রাজ্যপাল তাঁকে নিজের মত জানিয়েছেন। তাঁর মতে, এই পরিস্থিতিতে ভোট কিছুটা পিছিয়ে দেওয়াই উচিত কাজ হবে।
The post করোনার প্রভাবে পিছোচ্ছে পুরভোট? চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে কমিশনে আজ সর্বদল বৈঠক appeared first on Sangbad Pratidin.