শুভঙ্কর বসু: তারা ভারতীয় সংস্থা নয়। ভারতীয় আইনও তাদের ক্ষেত্রে সেভাবে প্রযোজ্য নয়। কিন্তু যে দেশে তারা রমরমিয়ে ব্যবসা করছে সেখানকার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের ক্ষেত্রে তাদের দায়বদ্ধতার কথা ভুললে চলবে না। গত নির্বাচনের অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে গুগলের মতো ইন্টারনেট নেটওয়ার্কিং সংস্থাকে এই মর্মে সতর্ক করে দিয়েছিল ভারতীয় নির্বাচন কমিশন। যার জেরে গুগলের সিদ্ধান্ত, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কমিশনের ছাড়পত্র ছাড়া কোনও প্রার্থীর বিজ্ঞাপন ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম ও গুগলে (গুগলের মালিকানাধীন কোম্পানি) নেওয়া হবে না। নির্বাচন কমিশনকে গুগল জানিয়েছে, কমিশন শংসাপত্র দিলে তবেই বিজ্ঞাপন গ্রহণ করবে তারা। একমাত্র ভারতীয় নাগরিকই ভোটের বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন।
[দেশের সেবা করতে সেনাকর্মী হতে চান কাশ্মীরের ২৫০০ যুবক]
গুগল ও ইয়াহু’র মতো বিদেশি কোম্পানিগুলির রাশ ভারতের হাতে নেই। এ কারণেই গত লোকসভা নির্বাচনে সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন সামলাতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছিল কমিশনের কর্তাদের। এবারের নির্বাচনে প্রচারের ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া যে বড় হাতিয়ার হবে তা বলাই বাহুল্য। সে কথা মাথায় রেখে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সোশ্যাল মিডিয়া সংক্রান্ত সমস্ত বিষয় দেখভালের জন্য একটি প্যানেল তৈরি করে কমিশন। সমস্ত দিক যাচাই করে সেই প্যানেল জানিয়ে দেয়, জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ১২৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী শুধুমাত্র ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে সোশ্যাল মিডিয়াগুলিতে বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা যেতে পারে। ব্যস ওইটুকুই! এর বাইরে বিশেষ কিছু করার নেই। নির্বাচন ঘোষণার পর বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণে আইনত কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার এক্তিয়ার কমিশনের নেই। এরপরই গুগল, ইয়াহু’র মতো ইন্টারনেট নেটওয়ার্কিং সংস্থাগুলিকে ডেকে পাঠায় কমিশন। ভোটের সময় রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন ও বিদেশ থেকে তা নিয়ন্ত্রণে একাধিক সুপারিশ করে কমিশন। ব্যাপারটি তাদের দায়বদ্ধতার মধ্যে পড়ে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়।
[মহাজোটের পথে বিজেপি! শিব সেনার পর সঙ্গী হল এআইএডিএমকে]
মূলত কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতেই ভোটের আগে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে একাধিক পরিবর্তন আনার কথা জানিয়েছে গুগল। কমিশনকে তারা জানিয়েছে, ভোটের আগে তাদের নেটওয়ার্কে বিজ্ঞাপন দিতে গেলে লাগবে কমিশনের ছাড়পত্র। বিজ্ঞাপন যাচাইয়ের জন্য প্রতিটি জেলায় কমিশনের তরফে যে ‘মিডিয়া সার্টিফিকেশন কমিটি’ থাকবে বিজ্ঞাপনদাতাকে সেই কমিটির কাছ থেকে শংসাপত্র নিতে হবে। শংসাপত্র পেলে তবেই বিজ্ঞাপন দেওয়া যাবে। একমাত্র ভারতীয় নাগরিকই বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন। সে জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সংস্থাকে সচিত্র পরিচয়পত্র, ঠিকানা, ফোন নম্বর ও ওয়েবসাইট সংক্রান্ত তথ্য জমা দিতে হবে গুগলের কাছে। যে ব্যক্তি বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন তাঁর বিবরণ দেওয়া থাকবে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞাপনে। এছাড়াও গুগলে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য যে অর্থ খরচ হচ্ছে, তার হিসাব সংক্রান্ত একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টও তারা কমিশনকে জমা দেবে বলে জানিয়েছে গুগল।
The post ইন্টারনেটে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন দিতে লাগবে নির্বাচন কমিশনের ছাড়পত্র appeared first on Sangbad Pratidin.