নন্দন দত্ত, সিউড়ি: মানিক ভট্টাচার্য গ্রেপ্তার হতেই ব্লক সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ নলহাটির তৃণমূল (TMC) নেতা। শনিবার সেই তৃণমূল নেতার কলকাতার ফ্ল্যাটে ইডির অভিযান ঘিরে তুমুল চাঞ্চল্য ছড়াল বীরভূমের নলহাটি অঞ্চলে। যদিও সেই নেতার দাবি, হেনস্থা করতে আর তৃণমূলকে বেকায়দায় ফেলতে একটা চক্রান্ত। এপ্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায় জানান, কেন ইডি হানা দিল তা সেই সংস্থাই বলতে পারবে।
নলহাটি দুই ব্লকের তৃণমূল সভাপতি হওয়ার পাশাপাশি একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ঋত্বিক বিভাস অধিকারী। তাঁর সঙ্গে জেলবন্দি মানিক ভট্টাচার্য ও প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গভীর সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে আসে। দুই অভিযুক্তই বারবার আশ্রমে গিয়েছেন। মানিত-পার্থর সঙ্গে সুসম্পর্কের জেরে শিক্ষক নিয়োগে বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে বিভাসবাবুর বিরুদ্ধে। সাফাই দিকে নলহাটির প্রতিবাদ সভায় প্রকাশ্যে নিজের সম্পত্তির হিসাব তুলে ধরেছেন তিনি। আবার মানিক ভট্টাচার্য গ্রেপ্তার হতেই গত বৃহস্পতিবার তৃণমূলকে কটাক্ষ করে দলীয় পদ ছাড়তে চিঠি দিয়েছিলেন বিভাসবাবু। শনিবার কলকাতার ফ্ল্যাটে ইডি হানা দিতেই বিকেলে দলীয় কর্মীদের নিয়ে বিজয়া সম্মেলনের মঞ্চকে উত্তর দেওয়ার জায়গা হিসাবে বেছে নেন।
[আরও পড়ুন: ‘মিটিং-মিছিল করতে এলে BJP কর্মীদের ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে রাখুন’, হুমকি তৃণমূল নেতার]
বিভাসবাবু বলেন,”জনগণের মধ্যে একটা উত্তেজনা ছড়িয়ে কাদা ছিটিয়ে ছত্রভঙ্গ করতে চাইছে। তাতে বিজেপির কোনও সুবিধা হবে না। ক্ষমতায় বামফ্রন্ট আসতে চাইছে। বিজেপি ক্ষমতায় আসবে না।” তাঁর আরও দাবি, “শিক্ষা জগতে প্রথম দুর্নীতির পথ দেখিয়েছিল বামফ্রন্ট। রাজ্যে ডিএড, বি এড, প্রাইভেট কলেজ ছিল না। কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতিকে কলা দেখিয়ে অবৈধভাবে রাজ্যে প্রথম কলেজ খোলে বামফ্রন্ট। দেবেন মাহাতো টিচার্স ট্রেনিং ইন্সটিটিউটের সঙ্গে রাজ্য সরকারের মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি প্রতাপচন্দ্র রায় প্রমাণ করে দেন রাজ্য সরকার অবৈধভাবে কলেজের অনুমোদন দিয়েছে।” তৃণমূল নেতার আরও অভিযোগ, “তৎকালীন প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান তথা বর্তমানে সিপিএম জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ একটি বেআইনি পিটিটিআই খুলেছিলেন। হেতমপুরে সিপিএমের জেলা সম্পাদকের ছেলেরা খুলেছিল। এমনকী, নলহাটিতে মাদ্রাসার একটি চালা দেখিয়ে কলেজ খোলা হয়। সব অনুমোদন বাতিল হয়।”
এ প্রসঙ্গে সিপিএম জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ জানান, “শান্তিনিকেতনে যে কলেজটি চলত সেটির পরিচালন সমিতি ছিল। যদিও সেটা লোকে জানত গৌতম ঘোষের কলেজ বলে। কলেজ খোলাটা কোনও অন্যায় নয়। কিন্তু তার পরিকাঠামোকে ব্যবহার করে তার আড়ালে অবৈধ কাজ দুর্নীতি। কেন্দ্রের সঙ্গে বামফ্রন্ট সরকারের আইনগত লড়াই হয়েছিল। দুর্নীতির লড়াই হয়নি।” বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, “চোর ধরো, জেল ভরো, শুরু হওয়ায় এখন পালিয়ে বাঁচতে চাইছে বিভাস অধিকারী। কিন্তু যারা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছে তারা দুর্নীতিগ্রস্তদের ছাড়বে না।” তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায় জানান,কেন ইডি হানা দিল তা সেই সংস্থাই বলতে পারবে।