অর্ণব আইচ ও গোবিন্দ রায়: সন্দেশখালি কাণ্ডে বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের আরও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি (ED)। শুক্রবার সোশাল মিডিয়া পোস্টে সেই খবর জানানো হয়েছে সংস্থার তরফেই। ইডির খবর অনুযায়ী, আরও ১৪ কোটি টাকা সম্পত্তি আটক করা হয়েছে। কলকাতার ১৭ টি ব্যাঙ্ক থেকে ৮০ লক্ষ টাকার কাছাকাছি বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এছাড়া স্থাবর সম্পত্তির একটা বড় অংশ, যার বাজারমূল্য সাড়ে ১০ কোটি টাকা, তাও বাজেয়াপ্ত করেছেন ইডি (ED) আধিকারিকরা।
ইডি সূত্রে খবর, শেখ শাহজাহানের (Shahjahan Sheikh) পাশাপাশি তাঁর এক ভাই শেখ আলমগির, শেখ সুমাইয়া হাফিজ়িয়া ট্রাস্ট, শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ আবদুল আলিম মোল্লা, শিবপ্রসাদ হাজরা-সহ অন্যদের স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তিও আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৩৮.৯০ বিঘা জমি। যার বাজারমূল্য ১০ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। এর আগে মার্চে শাহজাহানের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক সম্পত্তি থেকে ১২ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকার সম্পত্তি আটক করা হয়েছিল। আদালতে ইডি দাবি করেছিল, সন্দেশখালি এলাকায় জমি, ভেড়ি দখল করে মাছের ব্যবসার মাধ্যমে প্রায় ২৬০ কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হয়ে ওঠেন শাহজাহান।
[আরও পড়ুন: সুপ্রিম নির্দেশিকার পরেও রাজ্যের নির্বাচিত ৭ নামে আপত্তি বোসের, উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে ফের জটিলতা]
এদিকে, সন্দেশখালির বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শাহজাহানকে আড়াল করার অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের গোয়েন্দা পুলিশের বিরুদ্ধে। শুক্রবার এ ব্যাপারে রাজ্যকে সতর্ক করলেন কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC) বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। সন্দেশখালিতে ৩ বিজেপি নেতা খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহানের নাম না থাকা নিয়ে মামলা গড়িয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। পুলিশি তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারপতি। আদালতের নির্দেশে ফের তদন্ত করে অতিরিক্ত চার্জশিটে শাহজাহানের নামও রেখেছিল পুলিশ। তবে তাতে আদালত সন্তুষ্ট না হওয়ায় মামলার তদন্তভার গিয়েছিল সিআইডির (CID) হাতে। শুক্রবার ওই মামলায় সিআইডির ভূমিকা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত।
[আরও পড়ুন: শ্লীলতাহানি কাণ্ডে নয়া মোড়, রাজভবনের কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের পুলিশের]
এদিন মামলার শুনানিতে রাজ্যের তরফে স্বীকার করে নেওয়া হয়, "আগের তদন্তকারী অফিসার ঠিকমতো তদন্ত করেননি। আদালত চাইলে অতিরিক্ত চার্জশিট দিতে তৈরি সিআইডি।"এরপরই সিআইডি তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, "সিআইডি শুধু তাঁদেরকেই তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে যাঁরা শাহজাহানের নাম করেননি। এটা করা হয়েছে, যাতে সহজেই শাহজাহানের নাম বাদ দিতে সুবিধা হয়।" একই সঙ্গে রাজ্যের উদ্দেশ্যে বিচারপতি বলেন, "তদন্তে নিরপেক্ষতার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।" আগামী ২২ মে সন্দেশখালির ৩ বিজেপি নেতার খুনের ঘটনায় রাজ্যকে অতিরিক্ত কেস ডায়েরির কপি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে, রিপোর্টও দিতে হবে আদালতে। ওই রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পরই মামলার তদন্তভার সিআইডির হাতে থাকবে নাকি সিবিআইকে দেওয়া হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি।