গোবিন্দ রায়: আগেই সার্ভিস কমিশনের নবম-দশমে শিক্ষক নিয়োগে ওএমআর শিট বিকৃত মামলায় ইডি-কেও তদন্তভার দিয়েছিল হাই কোর্ট। এবার চতুর্থ শ্রেণির কর্মী (গ্রুপ ডি) নিয়োগের মামলাতেও সিবিআইয়ের পাশাপাশি, ইডি তদন্তের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আদালতের আরও নির্দেশ, এদিন থেকেই তদন্ত শুরু করবে ইডি। এই সংক্রান্ত যাবতীয় নথিও এদিন ইডির হতে তুলে দেওয়ার জন্য সিবিআই নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি, এই মামলাকারীকেও এই মামলায় ইডিকে পক্ষভুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
এদিন তদন্তে ইডিকে যুক্ত করার পাশাপাশি আদালত জানিয়েছে, “দ্রুত তদন্ত শেষ করতে হবে। অনেক কাকাতুয়া আছে তাঁরা অনেক কিছুই বকবে কিন্তু কান দিলে চলবে না।” আদালতের পর্যবেক্ষণ, “টাকার লেনদেন ছাড়া এভাবে নিয়োগ হওয়া সম্ভব নয়। এই নিয়োগ দুর্নীতির পিছনে বিরাট অংকের আর্থিক লেনদেন হয়েছে মনে করছে আদালত। তাই মূলত নিয়োগ দুর্নীতিতে টাকার উৎস খুঁজতেই ইডি-কে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে জমি জট, শিক্ষামন্ত্রীর বৈঠকের আগে বিক্ষোভে জখম পড়ুয়া]
আদালতের নির্দেশ মতো সিবিআইয়ের তরফে মামলাকারীর আইনজীবীদের হাতে ওএমআর শিটের তথ্য দেওয়া হয়েছিল। এদিন আদালতে মামলাকারির আইনজীবী ফিরদৌস শামীমরা জানান, হাতে ১০০টি ওএমআর শিটে দেখা গিয়েছে, কোনওটিতে প্রাপ্ত নম্বর সর্বোচ্চ চার। কেউ পেয়েছেন তিন, দুই, এক বা শূন্য। অভিযোগ, এই সমস্ত প্রার্থীদের এসএসসির তালিকায় দেখানো হয়েছে তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর ৪৩ বা তারও বেশি। ওএমআর শিট পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা গাজিয়াবাদের সংস্থা নাইসা কমিউনিকেশন প্রাইভেট লিমিটেড (এনওয়াইএসএ)-এর হার্ড ডিস্কের রেকর্ডের সঙ্গে এসএসসি-র তথ্যের বিস্তর গরমিল রয়েছে। আইনজীবীদের দাবি, ওই তালিকার ১০০ জনের মধ্যে ৫০ জনের নাম প্যানেলে রয়েছে আর বাকি ৫০ জনের নাম রয়েছে ওয়েটিং লিস্টে। এরপরই আদালতের নির্দেশ, যাতে ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে সেই সব উত্তরপত্র এসএসসির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।
এদিন মোট ২ হাজার ৮২৩ জনের ওএমআর শিট নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এদিন আদালত নির্দেশ, ওই ২ হাজার ৮২৩ জনের ওএমআর শিট আগামী ১০ দিনের মধ্যে মামলাকারীর আইনজীবীর হাতে তুলে দেবে সিবিআই। তার প্রেক্ষিতে মামলাকারীর আইনজীবীকে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ওই নিয়োগের সময় এসএসসি-র চেয়ারম্যান কে ছিলেন, তা জানতে চান বিচারপতি। উত্তরে সুবীরেশ ভট্টাচার্যের নাম জানিয়েছে সিবিআই। বিচারপতির মন্তব্য, “সব নদী গিয়ে সাগরে মিশেছে। লাল, নীল, হলুদ, সবুজ সব নদীতে দুর্নীতি হয়েছে যা এক সাথে সাগরে গিয়ে পড়েছে।”