নব্যেন্দু হাজরা: পর পর শহরে দুর্ঘটনা। বৃহস্পতিবারও বাইপাস সংলগ্ন ধাপা রোডে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কন্টেনারে পুলকারের ধাক্কায় আহত হয়েছে স্কুলপড়ুয়া। এমন অপ্রীতিকর ঘটনা রুখে পথ নিরাপত্তা আরও বাড়াতে বৃহস্পতিবার পরিবহণ দপ্তরে হয়ে গেল জরুরি বৈঠক। পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর নেতৃত্বে সেই বৈঠকে সমস্যাগুলি চিহ্নিত করে সমাধানের জন্য বেশ কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য, দুটি বাস বা গাড়ির মধ্যে রেষারেষি থামাতে হবে। তার জন্য চালক ও সহকারীদের কমিশন প্রথা তুলে নির্দিষ্ট বেতন দেওয়ার সুপারিশ করেছেন পরিবহণ মন্ত্রী। এদিন বৈঠকের মাঝেই মুখ্যমন্ত্রী দুবার ফোন করেন। জানতে চান, পথ সুরক্ষায় কী কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? বৈঠকে উপস্থিত মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, পর পর দুর্ঘটনার খবরে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী। আর সেই কারণেই তিনি চান, দ্রুত সমাধান করে পরিবহণ ব্যবস্থাকে আরও সুরক্ষিত করে তোলা হোক।
দুই বাসের রেষারেষিতে আকছার দুর্ঘটনা ঘটে, প্রাণহানিও হয়। বার বার সতর্ক করা সত্ত্বেও চারচাকায় গতির লাগাম থাকে না অনেক সময়। অধিকাংশ দুর্ঘটনার কারণই অতিরিক্ত গতি ও নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা। গত কয়েকদিনে পর পর দুর্ঘটনা ঘটেছে শহরে, যাতে আহতদের বেশিরভাগ স্কুলপড়ুয়া। এই খবরে যথেষ্ট উদ্বেগে মুখ্যমন্ত্রী। নিরাপত্তা জোরদার করতে ট্রাফিক সংক্রান্ত নিয়মে প্রয়োজনীয় রদবদল করতে বৃহস্পতিবার পরিবহণ মন্ত্রী বৈঠকে বসেছিলেন। তাতে অংশ নেয় বাসমালিক সংগঠনগুলিও। ছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার ও পুলিশের অন্যান্য পদস্থ কর্তারা।
বৈঠকে মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বাসমালিক সংগঠনগুলিকে প্রস্তাব দেন, বাসের চালক ও সহকারীদের জন্য যে কমিশন প্রথা আছে, তা তুলে বেতন পদ্ধতি চালু করা হোক। কারণ, বাড়তি কমিশন পাওয়ার জন্য দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছতে এত রেষারেষি হয়। তাই তা যদি বাতিল করে নির্দিষ্ট অঙ্কের বেতন চালু হয়, তাহলে নিরাপত্তায় বেশি সতর্ক হতে পারবেন চালকরা। কোনও প্রতিযোগিতায় নামতে হবে না। যদিও মন্ত্রীর এই প্রস্তাবে বাসমালিকরা দ্বিমত পোষণ করেছেন বলে সূত্রের খবর। মেয়র ফিরহাদ হাকিমের প্রস্তাব, যেসব এলাকায় একাধিক স্কুল রয়েছে, সেসব স্কুল শুরু এবং ছুটির সময় আলাদা হলে পড়ুয়াদের ভিড় এড়ানো সম্ভব। এছাড়া প্রত্যেক স্কুলের সামনে রেলিং দেওয়া থাকলে পড়ুয়ারা সুরক্ষিত থাকবে। সেই মর্মে স্কুলগুলির কাছেও প্রস্তাব দেওয়া হবে। দুর্ঘটনা রুখতে সামগ্রিকভাবে কিছু SOP চালু করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। তা যথাযথ মেনে চলা হচ্ছে কি না, তা নিয়ে নজরদারি চালাবে পরিবহণ দপ্তর।