shono
Advertisement
Inappropriate Language

ভাষার সূক্ষ্ম তফাত, আদালতে তিরস্কৃত আইনজীবী

ভাষা শুধুমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম নয়, সম্মান ও সৌজন্য।
Published By: Kishore GhoshPosted: 04:10 PM Oct 01, 2024Updated: 04:10 PM Oct 01, 2024

প্রাতিষ্ঠানিক ভাষা ব‌্যবহার না-করায় বিচারপতির কাছে তিরস্কৃত আইনজীবী। তাঁর শব্দচয়ন ‘অসংসদীয়’ না হলেও আদালতে বেমানান।

Advertisement

ভাষা শুধুমাত্র যোগাযোগের মাধ‌্যম নয়– সম্মান, সৌজন‌্য ও এমনকী স্থানবিশেষে পেশাদারিত্বের প্রতিফলন। সে-কথাই নতুন করে স্মরণ করিয়ে দিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি. ওয়াই. চন্দ্রচূড়। দুর্ভাগ‌্যবশত, এই কথাটি তাঁকে বোঝাতে হল সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবীকে। তিনি আদালতের কার্যক্রম চলার সময় এজলাসে ‘আনঅফিসিয়াল’ ভাষা-ব‌্যবহারের জন‌্য ওই আইনজীবীকে তিরস্কারও করেছেন। প্রধান বিচারপতির এই হস্তক্ষেপ স্থান, সময় ও প্রেক্ষাপটে নিরিখে শব্দচয়নের মাধ‌্যমে পেশাদারি ক্ষেত্রের মর্যাদা বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।

একটি মামলার শুনানিতে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী প্রধান বিচারপতির কথার মাঝে বারবার সম্মতিসূচকভাবে ‘ইয়া ইয়া’ বলছিলেন। বিচারপতি তাঁকে জানান, “এটা কোনও কফি শপ নয়। এটা আদালত। একদম এভাবে ‘ইয়া, ইয়া’ বলবেন না। বলবেন ‘ইয়েস’! এটা আদালত।”

আমরা অনেক প্রাজ্ঞকেও সময় বিশেষে এমন শব্দচয়ন করতে দেখি, যা সেই পরিস্থিতি, সময় ও স্থানের সঙ্গে সামঞ্জস‌্যপূর্ণ নয়। যদিও শব্দগুলিকে সবসময় ‘অসংসদীয়’ বা ‘অকথ্য’ হিসাবে দেগে দেওয়া যায় না, তবে সেগুলি যেভাবে উপস্থাপন করা হয় তা তাদের উপযুক্ততাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। প্রতে‌্যক পেশায় ভাষা-ব্যবহারের ক্ষেত্রে পেশাদারিত্বের একটি অলিখিত কোড মেনে চলতে হয়। আদালত কক্ষে কফি শপের ‘আনঅফিসিয়াল’ ভাষা যেমন বেমানান, তেমনই তা বেমানান রাজনৈতিক মঞ্চেও। প্রতিটি স্থানে মনের ভাব কথায় প্রকাশের নিজস্ব মান রয়েছে, এবং সেই সীমানা অতিক্রম করা কার্যকর আলোচনার
ক্ষেত্রে যথাযথ গুরুত্ব ও মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করতে পারে।

শব্দের যত্নশীল চয়ন শুধুমাত্র শিষ্টাচার সম্পর্কিত বিষয় নয়, বরং প্রতিষ্ঠানের মর্যাদাকে সম্মান করার বিষয়ও। প্রধান বিচারপতি যেমন আশা করেন যে, একজন আইনজীবী আদালতে তাঁর শব্দচয়নে মার্জিত হবেন, তেমনই আইনসভায় বিতর্কের সময় একজন সদস‌্যকেও একই ‘শালীনতা’ বজায় রাখতে হবে।

যদিও দৈনিন্দিন জীবনে আমাদের কথায় অনেক শব্দ জেনে-বুঝে বা অজ্ঞানে ব‌্যবহৃত হয়ে পড়ে তবে, আদালত, সংসদ এবং শ্রেণিকক্ষের মতো স্থান যেহেতু সমাজের স্তম্ভ, তাই সেখানে যোগাযোগের ক্ষেত্রে শিষ্ট ও নির্ভুল শব্দচয়ন সেগুলির সম্মান ও পবিত্রতা বজায় রাখে।

দ্রুতগতি ও ‘অনানুষ্ঠানিকভাবে’ প্রভাবিত বিশ্বে, কৃত‌্য ও অকৃত্যের সীমারেখাটি অবশ‌্য অস্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকা এক্ষেত্রে লক্ষণীয়। অন‌্যদিকে, ভাষা সঠিকভাবে ব্যবহার করা হলে, তা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদাকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। সমুন্নত হয় ন্যায়বিচার, সম্মান ও পেশাদারিত্বের মূল্যবোধ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • আমরা অনেক প্রাজ্ঞকেও সময় বিশেষে এমন শব্দচয়ন করতে দেখি, যা সেই পরিস্থিতি, সময় ও স্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
  • শব্দের যত্নশীল চয়ন শুধুমাত্র শিষ্টাচার সম্পর্কিত বিষয় নয়, বরং প্রতিষ্ঠানের মর্যাদাকে সম্মান করার বিষয়ও।
Advertisement