সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বেশ কয়েকদিন হল সিরিয়ার দখল নিয়েছে বিদ্রোহীরা। দামাস্কাসে ঢুকে ‘যুগের অবসান’ ঘোষণা করে দিয়েছে তারা। দেশ ছেড়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন পদচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। এই পরিস্থিতিতে ১৪ বছরের গৃহযুদ্ধের অবসানে আতঙ্কের প্রহর গুনেছেন সিরিয়ার সঙ্গীতশিল্পীরা।
কী কারণে ভয় পাচ্ছেন তাঁরা? এমন নয় আসাদের আমলে তাঁরা খুব ভালো ছিলেন। এমনিতে গত শতকের শেষ দশক থেকে শুরু করে নতুন শতকের শুরুর মধ্যেই সেদেশে জন্ম নিয়েছিল হেভি মেটাল রক ব্যান্ড। কিন্তু একে দেশের জনসংখ্যার বড় অংশই 'শয়তানের উপাসনা'র সঙ্গে তুলনা করেন। লম্বা চুল রাখা, কালো টিশার্ট পরার মতো কাজ করার কারণে সেই ধারণা আরও পোক্ত হয়েছিল।
স্বৈরাচারী আসাদের আমলে গত চোদ্দো বছর ধরে গৃহযুদ্ধ চলার সময় সেই পরিস্থিতি আরও খারার হয়েছে। ফলে সঙ্গীতকাররা বুঝতে পেরে যান, তাঁদের জন্য এই দেশে কোনও ভবিষ্যৎই নেই। নইল আল-হাদিদি নামে সেদেশের এক মিউজিক শপ চালানো ব্যক্তি বিবিসির সঙ্গে কথা বলার সময় বলেছেন, ''আমাদের নব্বই শতাশ বন্ধুই এখন ইউরোপ, নেদারল্যান্ডস ও জার্মানিতে।'' আর এক সঙ্গীতশিল্পী ওয়াজিদ খানের দাবি, ২০১১ সালের পর থেকে নীরব হয়ে গিয়েছেন তিনি। কেননা গৃহযুদ্ধের সময় থেকে আগ্রাসন আরও বেড়েছে।
কিন্তু এখন সেখানে ক্ষমতার অলিন্দে মৌলবাদীরা। মনে করা হচ্ছে, স্বৈরাচারী শাসকের থেকে মৌলবাদীদের সঙ্গীতশিল্পীদের প্রতি আচরণ আরও ক্রূর হতে পারে। আর তাই সিরিয়ার সমস্ত সঙ্গীতশিল্পীরা একসঙ্গে মিলে নতুন শাসক হায়াত তাহরির আল-শামের দ্বারস্থ হওয়ার। তবে তার আগে সতর্ক হওয়ায় প্রয়োজন বলে মনে করছেন তাঁরা। ডিজে ও সঙ্গীতকার মাহের গ্রিন বলছেন, ''আমাদের কিন্তু আগে সংগঠিত হতে হবে। কথা বলতে হবে যুক্তি সহকারে। একটা সত্যিকারের প্রস্তাব নিয়ে যেতে হবে।'' সব মিলিয়ে আগামিদিনে নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত সঙ্গীতশিল্পীরা এখন মরিয়া নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে। উত্তরটা যে ভবিষ্যতের গর্ভে, ভালোই বুঝেছেন তাঁরা।